দুই সপ্তাহ পর লাশ উত্তোলন : দিনভর নাটকীয়তা, কুয়েট শিক্ষক ড. সেলিমের লাশ গেল ঢাকা মেডিকেলে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দিনভর নাটকীয়তা শেষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই স্পর্শকাতর লাশ ময়না তদন্ত না করে ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহনণ করেছে। এঘটনায় ড. সেলিমের পরিবার তীব্র ঘৃনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সন্তানের খুনের ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার আশংকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণে ড. সেলিমের মৃত্যুর রহস্য আরো জটিল হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সন্দেহ আরো বৃদ্ধি করেছে লাশ নিয়ে এমন আচরণে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহত শিক্ষকের কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত উপস্থিত থেকে পুলিশের সহযাগিতায় তার লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আনা হয় এই লাশের ময়না তদন্ত শেষে ওই কবরস্থানেই তাকে পুনরায় দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। লাশ উত্তোলনের সময় শিক্ষকের পরিবারের লোকজন আত্মীয় স্বজন ও গ্রামবাসী উপস্থিত ছিল।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। মেডিকেল টিমের প্রধান ছিলেন ডাঃ আশারাফুল আলম, ডাঃ মাহফুজুর রহমান ও ডাঃ রুমন রহমান। দুপুর ১টার পর মেডিকেল টিম একটি বৈঠক শেষে জেনারেল হাসপাতালের মর্গে যান কিন্তু লাশ দেখে ময়না তদন্ত না করেই তারা মর্গে থেকে চলে আসেন। দিন ভর নানান নাটকীয়তায় ময়না তদন্ত কুষ্টিয়াতে করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। কুষ্টিয়র সিভিল সার্জন ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম জানান- এব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসি বিভাগের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ওই শিক্ষকের লাশ ঢাকায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষক সেলিমের দুলাভাই মকবুল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- মঙ্গবার লাশ উত্তোলনের কথা ছিল সেখানে আমরা পরিবারের সকলে সারা দিন অপেক্ষা করছিলাম কিন্তু আলো স্বল্পতার কারণে সেদিন লাশ উত্তোলন সম্ভব হয়নি। বুধবার লাশ উত্তোলন করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে আনার পরেও সারা দিন নানান নাটকীয়তায় এখানে ময়না তদন্ত সম্ভব নয় বলে জানানো হলো। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম এটি একটি হত্যাকান্ড এবং লাশের ময়না তদন্ত না করা এবং এব্যাপারে কোনো মামলা না হওয়াতে আমরা সন্দিহান। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন সুস্থ্য তদন্ত স্বাপেক্ষে এর দোষীদের চিন্থিত করতে হবে। সকালে লাশ কুষ্টিয়া হাসপাতালে আনার পর থেকেই সেখানে ড. সেলিমের আত্মীয় স্বজন, আইনশৃংখলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের উপস্থিত ছিল। সন্ধ্যার পর বিশেষ ব্যবস্থায় ডঃ সেলিমের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজে ফরেনসি বিভাগের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
ডঃ সেলিম হোসেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। কুমারখালী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, খুলনার খান জাহান আলী থানা পুলিশ ও কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে তোলা হয়। উল্লেখ্য, ৩০ নভেম্বর মঙ্গলবার কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক সেলিমের সাথে খারাপ আচরণ করলে পরবতিতে তিনি মারা যান। ডঃ সেলিম বাঁশগ্রামের শুকুর আলীর পুত্র।