টানাবৃষ্টিতে চৌগাছায় ২০ হেক্টর বীজতলা প্রায় ১ হাজার হেক্টর অন্যান্য ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা

0

স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর)॥ নিন্মচাপের প্রভাবে চৌগাছা জুড়ে গত তিনদিন একাধারে হয়েছে বৃষ্টি। অবিরাম বৃষ্টিতে কৃষকের মাঠে কেটে রাখা আমন ধানের মত সবজি ও বীজতলার অপুরোনীয় ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি থামার সাথে সাথে কৃষক সবজি ও বীজতলা রক্ষায় মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে শেষমেষ এসব ফসলাদি রক্ষা করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে শংসয় দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে চৌগাছার সব ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতির খবর আসতে শুরু করেছে। কোমর পানি পাড়ি দিয়ে কেটে রাখা আমন ধান কিনারে আনতে নিরালস ভাবে কাজ করছেন কৃষক কৃষানীরা। আমন ধানের মত মৌসুমী সব ধরনের সবজির ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষিরা। অনুরুপ ভাবে ইরি বীজতলাও পড়েছে হুমকির মুখে।


উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে প্রায় ১ হাজার ২৪ হেক্টর জমির সবজি ও বীজতলার ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে বীজতলা ২০ হেক্টর আর সবজি, মরিচ, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল ১ হাজার ৪ হেক্টর। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার পরপরই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা উপজেলা প্রতিটি অঞ্চলে ছুটে গেছেন এবং বীজতলা ও সবজি ক্ষেত রক্ষায় চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নিয়ামতপুর, পাঁচনামনা, বেড়বাড়ি, ইছাপুরসহ বেশ কিছু গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ জমির বীজতলা এখনও পানির নিচে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া বীজতলা রক্ষায় চাষিরা যে যেমন ভাবে পারছেন কাজ করছেন। বেড়বাড়ি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, আগাম ইরি ধান রোপনের জন্য বেশ আগে ভাগেই বীজতলা প্রস্তুত করি। প্রায় দেড় মন ধানের বীজ বপন করি, ইতোমধ্যে বীজতলা সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে সমুদয় বীজতলা এখন পানির নিচে। কিভাবে এই বীজতলা রক্ষা করা যায় তা ভেবে পারছিনা। মঙ্গলবার খুব সকাল থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গামলা, বালতিতে করে পানি বের করার চেষ্টা করছি, জানি না শেষ রক্ষা হবে কিনা। কৃষক নজরুল ইসলামের মত ওই মাঠে জাহিদুল ইসলাম ২০ কেজি, পলাশ হোসেন ৬০ কেজি, সাকিল আহমেদ ৩০ কেজি, বিল্লাল হোসেন ৬৫ কেজি, ইসরাফিল হোসেন ২৫ কেজি, আব্দুল মালেক ৭০ কেজি ধান বীজতলা (পাতো) দিয়েছেন। সকল কৃষকের পাতো এখন পানির নিচে। এদিকে মৌসুমী ফসল ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, পটল, উচ্ছে, আলু, সরিষা, পালনশাক, লালশাক, মসুরসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি হবে বলে আশংকা করছেন চাষিরা। অনেক জমির ফসল একাধারে বৃষ্টির কারনে মাটিতে পড়ে গেছে। রোদ বের হলে এই সব ফসল কতটুকু টিকে থাকবে সেই চিন্তায় বিভোর চাষিরা। ইছাপুর গ্রামের সবজি চাষি আব্দুল আজিজ, সামছুল আলম বলেন, যে সময়ে ক্ষেত থেকে ফসল উঠিয়ে বাজারে নেয়ার প্রস্তুতি নিব, সেই সময়ে জমির ফসল রক্ষার জন্য কাজ করতে হচ্ছে। প্রতিটি সবজির ক্ষেতে পানি জমে গেছে। পানি বের করার তেমন কোন সুযোগ নেই, ফলে ফসলের ক্ষেত নষ্টের উপক্রম হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারনে গত কয় দিনের বৃষ্টিপাতে উঠতি ফসল বেশ ক্ষতির মুখোমুখি পড়েছে। বিশেষ করে বীজতলায় পানি জমে তা নষ্টের উপক্রম হয়েছে। আমরা কৃষি অফিস কৃষকদের সহযোগীতা প্রদানে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি।