সরিষার চাষে সফলতা দেখছেন বাগেরহাটের চাষিরা

0

 

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট॥ বাগেরহাটে প্রথমবারের মত স্বল্প ব্যয়ে কম সময়ে সরিষার চাষে সফলতা দেখছেন চাষিরা। ঘেরের পাড়, পতিত জমি ও রাস্তার পাশে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জেলায়। বিপুল পরিমাণ সরিষা উৎপাদন হলে ভোজ্যতেল আমদানি কমবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। চোখ যেদিকে যায় শুধুই হলুদের সমারহ। মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে ফুলে ভরা সরিষা গাছগুলো। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। বাগেরহাটে প্রথমবারের মত বিভিন্ন এলাকায় ঘেরের পাড়,পতিত জমি ও রাস্তার পাশে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। অল্প সময়েই ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষা গাছগুলো। এখন শুধু অপেক্ষা ফল আসা। সরকারি প্রনোদনা ও কৃষি বিভাগের চেষ্টায় এবার জেলায় ১২শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যে কোন জমিতে সরিষা চাষ করা যায়। তাই সরিষা চাষে ঝুকছেন চাষিরা। কৃষকরা জানান, অল্প সময়ে স্বল্প খরচে বিঘা প্রতি ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে তাদের।  বাগেরহাট সদরের রণভূমি গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর সরদার বলেন, প্রথম বারের ঘেরের পাড়ে এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি।মাত্র ছয় হাজার টাকা খরচে আশাকরি ৩০ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারবো। আগামীতে আরো বেশি জমিতে সরিষা চাষ করা হবে।  একই গ্রামের শেখ ইব্রাহিম নামের অপর এক কৃষক বলেন, সবজি চাষ শেষে জমি ফেলানো থাকে। তাই এবার কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় সরিষার চাষ করেছি। যেভাবে গাছে ফুল ধরেছে তাতে আশানুরুপ ফলন পাব। সরিষা থেকে যা আয় হবে সেটা বাড়তি আয় বলে জানান ওই কৃষক।
বাগেরহাট সদরের ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা,গংগা মনি পাল বলেন, আমরা চাষিদের ডোর টু ডোর গিয়ে পতিত জমিতে চাষিদের সরিষা চাষে উদ্ধুদ্ব করেছি। প্রথম বারের মত ফলনও ভাল হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদিয়া সুলতানা বলেন, সরিষা তেলের আবাদ বাড়াতে ঘেরের পাড়, পতিত জমি ও রাস্তার পাশে তিনশো কৃষকদের মাঝে বারি-১৪ জাতের এক কেজি করে সরিষার বীজ, ১কেজি ইউরিয়া ও ১০ কেজি ডিএপি সার বিনামুল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আরও একশো কৃষক সরিষা চাষ করছে। আশাকরি সদরের চার শতাধিক সরিষার চাষি ভাল ফলনের সফলতার মুখ দেখবে। আগামীতে আবাদের পরিমান বাড়বে বলে জানান ওই কর্মকর্তা’।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ‘সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে তেল ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, বাগেরহাটে এবছর ২৯শ চাষি সরিষা চাষ করেছেন। ১৪ শ ৪০ মেট্রিকটন সরিষা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকরা সাড়ে চার হাজার টাকা দরে প্রতিমন সরিষা বিক্রি করতে পারবে জানান তিনি।