যশোর সড়ক ও জনপথ স্বেচ্ছাচারিতায় কৃষকের ধান পানিতে ডুবেছে

0

এম এ রহিম চৌহাছা (যশোর)॥ যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্বেচ্ছাচারিতার কারনে চৌগাছায় কৃষকের প্রায় দুইশ বিঘা জমির পাকা ধান এখন পানিতে ভাসছে। যে জমিতে সোনালী স্বপ্ন বুনতো কৃষক, এখন সামন্য বৃষ্টিতে সেই জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। সওজের তুঘলিক কান্ডে এলাকার তিনশতাধিক কৃষক পরিবারের চোখে এখন অশ্রুবন্যা। অপরদিকে চৌগাছা-যশোর সড়ক মেরামতের পর প্রতি মওসুমে কয়েক হাজার মন ধান কম উৎপাদন হচ্ছে।


সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, সম্প্রতি যশোর চৌগাছা সড়কের চুড়ামনকাঠি থেকে চৌগাছা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও প্রশস্তকরণ করা হয়েছে। সংস্কার কাজ করার সময় পুরাতন ছোট ছোট ব্রীজ কার্লভাটগুলো পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সড়কের সিংহঝুলি ও কয়ারপাড়া গ্রামের মাঝে অবস্থিত টালিখোলা নামক স্থানের বুড়োর বিল নামের ছোট বিলের পানি বের হওয়ার কার্লভাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পূর্বে তৎকালীন পাকিস্তান আমলে যখন এ সড়ক সর্বপ্রথম পাকা করা হয় তখন থেকেই এখানে কার্লভাটের অবস্থান ছিল। সড়কের মাঝ বরাবর কার্লভাটের অবস্থান থাকলেও সড়ক প্রশস্তকরণের সময় দুইপাশে কার্লভাট না বাড়িয়ে মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে পানি আটকে গিয়ে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়েছে। গতবছর আমন মওসুমে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলে কৃষি অফিস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসে বারবার যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি কৃষকরা। গত দুদিনের ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে এ সকল জমিতে প্রায় তিন চার ফুট পানি জমে গেছে। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে কৃষকের পাকা আমন ধান। ক্ষেতের কেটে রাখা ধান ভাসছে পানিতে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হলে এলাকার কৃষকের পাকা ধান স¤পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। সিংহঝুলি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক গোলাম মোস্তফা, ইমরান খান, সাইফুল ইসলাম, পলাশ, শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলি, মফিজুর রহমানসহ অন্তত পঞ্চাশ জন কৃষক বলেন, যুগ যুগ ধরে যে কার্লভাট দিয়ে পানি নিস্কাশন হয় সেটি হঠাৎ করে কিভাবে বন্ধ করে দিলো তা আমরা বুঝতে পারলামনা। তারা আরো বলেন, গত আমন মওসুমে আমরা একবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি আবার এ বছরও একই অবস্থা। সিংহঝুলি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর বড় খোকন মন্ডল বলেন, আমার বয়স ষাট বছর আমরা বংশ পর¯পরায় এ কার্লভাটে মাছ ধরি কিন্তু হঠাৎ করে সড়ক প্রশস্তকরণের সময় কার্লভাটটি কেনো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে? বুঝতে পারলামনা।লস্করপুর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী জানান এই মাঠে আমার প্রায় ১০/১২ বিঘা জমি রয়েছে। কার্লভাটটি বন্ধ করে দেওয়ার কারনে আমার সমস্ত জমিগুলোতে দুই তিন ফুট পানি জমে রয়েছে।কয়ারপাড়া গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক, ইউনুচ আলী, আব্দুস সামাদ প্রমুখ কৃষকেরা জানান এ মাঠে কখনও পানি জমেনা কিন্তু কার্লভাটটি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমাদের জমিগুলো নষ্ট হয়ে গেলো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস খোঁজ খবর নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করারর প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো ব্যবস্থা করেননি। যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কার্লভাট থাকলে বন্ধ করার কথা নয়। আমি আমার অফিসের লোক পাঠিয়ে বিষয়টি স¤র্পকে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। তিনি এর আগেও একই কথা জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেননি।