রাজগঞ্জ কদর বেড়েছে তেঁতুল কাঠের গুঁড়ির

0

 

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ আগামীকাল বৃহস্পতিবার পালিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানি। আর এই কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস সাইজ করতে কয়েকটি প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তেঁতুল কাঠের গুঁড়ি।
সারা বছর কসাইদের কাছে তেঁতুল এ কাঠের গুঁড়ি ব্যবহার বেশ সাধারণ হলেও এর বিপুল চাহিদা এসে ধরা দেয় ঈদুল আযহার সময়। এ সময় বৃহত্তর মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জসহ পশ্চিমাঞ্চলের ৬ ইউনিয়নের আনাচে-কানাচে এই কাঠের গুঁড়ির কদর বেড়ে যায় কয়েকগুণ। প্রতি বছর কোরবানির সময় গ্রাম থেকে শহরের বাড়ি পর্যন্ত এর বিস্তৃতি ঘটে। ঈদের দিন জবাইকৃত বিপুল পরিমাণ গরু-ছাগলের মাংস প্রক্রিয়া করতে তেঁতুল কাঠের গুঁড়ি ব্যবহ্নত হয়ে থাকে।
সরজমিনে রাজগঞ্জ অঞ্চলের কয়েকটি স’মিলে গিয়ে দেখা যায় এই গুঁড়িগুলো খুব সুন্দর করে তৈরি করা হচ্ছে। স’মিল মালিক জহির উদ্দিন জানান, মাংস কাটা বা সাইজ করার কাজে কাঠের এই গুঁড়ির কোন বিকল্প নেই। তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়েই গুঁড়ি বানাতে হয়। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তেঁতুল কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসেনা। পাশাপাশি কাঠের গুঁড়োও উঠে না। এছাড়া এতে মাংস নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভবনা থাকেনা। তাইতো মানুষের কাছে তেঁতুলের গুঁড়ির চাহিদা ব্যাপক বলে জানান এ স’মিল মালিক।
গুড়ি বিক্রেতা চালুয়াহাটি ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের মৃত গোপাল মোড়লের ছেলে মাহবুর রহমান জানান, ঈদুল আযহা আসলেই তেঁতুল কাঠের গুঁড়ির ব্যাপক চাহিদা থাকে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী এবার আগে ভাগেই এক হাজার গুঁড়ি তৈরি করে রাখা হয়েছে। তৈরিকৃত ওই গুঁড়ি এখন বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে বসে বিক্রি করছি। সাধারণ মানের প্রতি পিস গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০টাকায়। মাঝারি মানের প্রতি পিস গুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০টাকায়। আর বড় মানের প্রতি পিস গুঁড়ি বিক্রি ১৫০০ থেকে ২০০০টাকায়। এবার কাঠের দাম ও স’মিল খরচ অনেক বেশি হওয়ায় গুঁড়ির দাম একটু বেশি বলে দাবি করেন এ ব্যবসায়ী।
ক্রেতা ঝাঁপা ইউনিয়নের ঝাঁপা গ্রামের কবির হোসেন জানান, মঙ্গলবার বিকেলে তিনি কাঠের গুঁড়ি কিনতে রাজগঞ্জ বাজারে আসেন। কিন্তুু কাঠের গুঁড়ির আকাশচুম্বী দাম শুনে তিনি বেশ কিছুটা হতাশ হয়েছেন। কারণ গতবার যে গুঁড়ি ২০০টাকা দিয়ে কিনেছেন সেই গুঁড়ি এবার চাচ্ছে ৮০০টাকা। তবে অনেকক্ষণ ধরে দর কষাকষির পর ৭০০টাকা দিয়ে মাঝারি মানের একটি কাঠের গুঁড়ি কিনে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে।