খুলনায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা দায়ের

0

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা ॥ খুলনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ জন ছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয় সাড়ে তিনশ’ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে খুলনা থানা পুলিশের এসআই আলামিন ও আবু সাদেক মামলা দুটি করেন। খুলনা থানা পুলিশের ওসি হাসান আল মামুন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অনুমতি ছাড়া বিএনপি নেতারা সমাবেশের জন্য সোমবার সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। তাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালান। পুলিশও আত্মরক্ষায় তাদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের ৬ সদস্য আহত হন। রাতে বিএনপির ৪২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ আরও ৩০৮ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে। ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদেরকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। খুলনা থানার ৩৬ নম্বর মামলার আসামিরা হলেন-যুবদল নেতা মেহেদী হাসান সোহাগ, মোস্তফা, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, শেখ হেদায়েত হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, মতিউর রহমান বুলেট, মো. মাসুদ খান বাদল, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মিলন সরদার, উপদেষ্টা সেকেন্দার জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, যুবদল নেতা নাজমুল হাসান নাসিম, দৌলতপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক নান্নু, মো. আবু সাঈদ খান, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি নাজির উদ্দিন নান্নু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সহ প্রকাশনা সম্পাদক চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, রবি, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম বাবু, মো. ইরফান হোসেন, মুন্না, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল হাসান বাপ্পি, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ, সাবেক কাউন্সিলর মোসা. রোকেয়া ফারুক, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক আজিজা খানম এলিজা, নওশাদ ও মাসুদুজ্জামান। এদের মধ্যে প্রথম ৫ জনকে সকালে সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ৩৭ নম্বর মামলার আসামিরা হলেন-মোল্লা ইউনুস, তৌহিদুজ্জামান মুকুল, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি মো. সাহারুজ্জামান মোর্তজা, মহানগর বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইসতিয়াক হোসেন ইস্তি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হেলাল আহমেদ সুমন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি একরামুল হক হেলাল, মহানগর বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল হাসান দুলু, মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো: তাজিম বিশ্বাস ও মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বাবু। এদের মধ্যে প্রথম দুজনকে পুলিশ সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য, খুলনায় সোমবার বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালনে পুলিশ বাধা দিলে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। অনুমতি না থাকার অজুহাতে পুলিশ রাস্তা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘাতে জড়ায় তারা। সকালে মহানগর ও জেলা বিএনপির এক পক্ষ এবং বিকেলে অপর অংশের সাথে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেটে শতাধিক রাজনৈতিক কর্মী আহত হন। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়লে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৫ সাংবাদিকও আহত হন। দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় খুলনা। আতঙ্ক ছড়ায় মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র এলাকায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আটক করে।