ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে পুটখালী ও গোগা ইউনিয়নে চরম আতঙ্ক

0

বেনাপোল সংবাদদাতা ॥ যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে ঘিরে বিরাজ করে চরম আতঙ্ক। প্রার্থী ও ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। প্রার্থীরা চাইছেন নিরপেক্ষ ভোট, অন্যদিকে ভোটাররা চাইছেন তাদের ভোট প্রয়োগের অধিকার। শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে ১০টি ইউনিয়নে। মামলা জটিলতার কারণে একটিতে ভোট হচ্ছে না।
শার্শা সদর, উলাশী, বাগআঁচড়া, কায়বা, গোগা, পুটখালী, লক্ষনপুর, ডিহি, নিজামপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মধ্যে পুটখালী ও গোগা ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই দুটি ইউনিয়নে প্রায় প্রতিদিনই আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা, অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ঘটছে বোমা হামলার ঘটনা। পুটখালী ইউনিয়নে নৌকার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল গাফ্ফার ও আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন। গোগা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুর রশিদ ও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তবিবর রহমান তবি। এই ইউনিয়নেও হামলা, পাল্টা হামলা, অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। বৃহস্পতিবার রাতেও পুটখালী ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার জানান, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরাই আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। প্রচার প্রচারণায় তারা আমাদের বাধা দিচ্ছে।’ আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিন জানান, ‘নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেছে। আমার নেতাকর্মীদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করতে দিচ্ছে না। আমি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাগআঁচড়া ও বালুন্ডা গ্রামে আমার নির্বাচনী অফিসে বোমা হামলা হয়েছে। আমার কর্মীদের ওপরও হামলা হয়েছে।’ পুটখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলতাফ হোসেন বলেন,‘পুটখালী ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক রয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।’ কেউ যেন ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই অথবা ভোট ডাকাতি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকারও আহবান জানান তিনি।
শার্শা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, শার্শা উপজেলার মোট ১০টি ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে আগামী ২৮ নভেম্বর। তবে ১০টির মধ্যে পুটখালী ও গোগা ইউনিয়নের নির্বাচন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পুটখালী ইউনিয়েনে মোট ভাটার ২২ হাজার ১৮৫ এবং গোগা ইউনিয়নে মোট ভাটার ২০ হাজার ৭৫০ জন। আমরা নির্বাচন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য সবধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ওসি মামুন খান জানান, ‘পুটখালী ইউনিয়নে বেশ কয়েকদিন ধরে নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা চলছে। রাতে বোমা হামলা ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’