গোষ্ঠীতন্ত্র গণতন্ত্রের আড়ালে রাজতন্ত্র

0

ইকতেদার আহমেদ
ইংরেজি অলিগার্কি (Oligarchy) শব্দটির অর্থ গোষ্ঠীতন্ত্র। গোষ্ঠীতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা একই গোষ্ঠী থেকে আগত মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে। আবার এমনো দেখা যায়, বংশানুক্রমিকভাবে একক ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত থাকে। এ শাসনব্যবস্থায় সরকারের শাসনক্ষমতা এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মের কাছে হস্তান্তরিত হয়। গোষ্ঠীতন্ত্রে শাসকরা স্বৈরাচারী ও স্বেচ্ছাচারীভাবে ক্ষমতার প্রয়োগ করে যার মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ হাসিল ও দুর্নীতি কোনো ধরনের প্রতিরোধ ব্যতিরেকেই কার্যকর হয়। এ শাসক গোষ্ঠীর সদস্যরা সচরাচর ধনী হয়। তারা নিজ দেশ ও বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। গোষ্ঠীতন্ত্রের শাসকরা ধনিক শ্রেণীর পর্যায়ভুক্ত হওয়ায় এ শাসনব্যবস্থাটি Plutocracy বা ধনতন্ত্র নামেও অভিহিত। গোষ্ঠীতন্ত্র রাজতন্ত্রের একটি সম্প্রসারিত রূপ। সাধারণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনকে বোঝায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও শাসনব্যবস্থায় ভিন্নতা রয়েছে। আমাদের দেশে যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসৃত হয় এটিকে বলা হয় ওয়েস্টমিনস্টার টাইপ অব ডেমোক্র্যাসি। এ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটি যুক্তরাজ্যে প্রবর্তিত হয়। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অবস্থিত ওয়েস্টমিনস্টার রাজপ্রাসাদ থেকে ওয়েস্টমিনস্টার শব্দটি উদ্ভূত বর্তমানে যা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পার্লামেন্ট শব্দটির বাংলা অর্থ সংসদ। আমাদের দেশের পার্লামেন্ট সংসদ নামে অভিহিত। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সদস্যরা দেশটির একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাগুলো থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী নির্বাচিত। যুক্তরাজ্যের মতো আমাদের দেশের সংসদ সদস্যরাও একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাগুলো থেকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী নির্বাচিত। যদিও আমাদের দেশে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনের সদস্য প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সদস্যদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনের পরোক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার সুবিধাটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বহাল থাকবে। আমাদের দেশে মহিলাদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষিত থাকলেও তা একজন মহিলাকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত ৩০০ আসনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণে বারিত করে না।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের প্রতিফলনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটপ্রাপ্ত দল একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে। এরূপ শাসনব্যবস্থায় যেকোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া কাম্য। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত না হলে সে সরকারের পক্ষে স্বচ্ছতার সাথে জবাবদিহিমূলকভাবে সরকার পরিচালনা সম্ভব নয়। তা ছাড়া অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে যেকোনো দল বিজয়ী হলে দেখা যায়, যাদের সহায়তায় অন্যায়ভাবে নির্বাচনে বিজয় হাসিল করা হয় তাদের দ্বারা দুর্নীতিমুক্তভাবে প্রজাতন্ত্রের কাজ চালানো দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়। যেকোনো দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র পূর্বশর্ত। সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে সে নির্বাচন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে ইতঃপূর্বে ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ায় তার গ্রহণযোগ্যতা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। নির্বাচন বিষয়ে দীর্ঘকাল এ ধরনের পরিস্থিতি দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য শুভ নয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মূল দল ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতৃত্ব কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় এবং তৃণমূল থেকে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ওপর নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পিত হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা অগণিত হলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে সংসদে আসন লাভ করবে এরূপ দলের সংখ্যা গুটিকয়েক। বাংলাদেশ অভ্যুদয় পরবর্তী আওয়ামী লীগ, বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) ও জাতীয় পার্টি এ তিনটি রাজনৈতিক দল একক বা জোটবদ্ধভাবে সরকারের শাসনক্ষমতা পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে। এ তিনটি দলের বাইরে যে দলটি একাধিক আসনে বিজয়ী হওয়ার যোগ্যতা রাখে সে দলটি হলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ক্ষেত্রে দেখা যায়, দলের নেতৃত্ব একই গোষ্ঠী থেকে আগত ব্যক্তির ওপর ন্যস্ত এবং দল ক্ষমতাসীন হওয়ার পর একই ব্যক্তি এককভাবে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশ শাসন করেছে বা করে চলেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যিনি দলীয়প্রধান তিনি সরকারেরও প্রধান। দীর্ঘ ৪০ বছরের অধিক সময় ধরে তিনি দলটির প্রধানেরও দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তিনি দলীয় প্রধান হিসেবে দল নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া পরবর্তী প্রতিবারই সরকারপ্রধানের দায়িত্ব লাভ করেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ প্রধানের বয়স ৭৫ বছর অতিক্রম করেছে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে তিনি হয়তো উভয় দায়িত্ব পালন করে যাবেন। তিনি তার উত্তরাধিকার হিসেবে পরিবারের বাইরে কাউকেই যে বিবেচনা করছেন না এটি দলসংশ্লিষ্টদের অভিমত। তার মতো তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানও দলীয়প্রধান ও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি উভয় পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি সরকারপ্রধান ও দলীয়প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালীন দলের প্রধান অঙ্গসংগঠন যেমন – যুবলীগ, ছাত্রলীগ এ দুটি প্রধানের দায়িত্ব তার একান্ত আপনজন ভগ্নিপুত্রদ্বয় প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
বর্তমান বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) প্রধান ১৯৮৪ সালে দলটির চেয়ারপারসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি বিএনপির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন বিএনপি তিনবার নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে এবং প্রতিবারই তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ দলটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তার মরহুম স্বামী জিয়াউর রহমান। তিনিও দলটির প্রধান থাকাকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুর পর ক্ষণকালের জন্য তার সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং তিনি রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনেও দল কর্তৃক মনোনীত হয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেনাপ্রধান এরশাদ কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় অল্পদিনেই তার শাসনকালের যবনিকাপাত ঘটে। দল ও সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে জিয়াউর রহমানই একমাত্র ব্যক্তি যার উভয় দায়িত্ব পালনকালীন দল বা সরকার বা দলের অঙ্গসংগঠনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে তার ঘনিষ্ঠ কোনো আত্মীয়ের পদ লাভ বিরল ঘটনা ছিল। বিএনপির বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক জিয়া। বেগম খালেদা জিয়াও দলের প্রধান বা সরকারপ্রধান হিসেবে তার অবর্তমানে তারেক জিয়া অথবা তার পরিবারবহির্ভূত অপর কাউকে বিবেচনা করছেন না, এটি দলীয় বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেনাশাসক এরশাদ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল পরবর্তী জাতীয় পার্টি নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং তার শাসনকালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ও চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। এ দুটি নির্বাচন কতটুকু অবাধ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ছিল আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতের ভিন্নতায় সে আলোচনা এখানে না-ই বা করা হলো। এরশাদ ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা কার্যকর থাকায় সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রযুক্ত হতো। এরশাদ ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় তিনি একাধারে সরকারপ্রধান ও দলীয়প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিনি রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা হারালে মামলা সংশ্লেষে তার জেল-জরিমানা হলেও তিনি আমৃত্যু দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুর পর প্রথমত তার স্ত্রী রওশন এরশাদ ও পরে ভ্রাতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের দলীয়প্রধানের দায়িত্ব লাভ করেন। যদিও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব রওশন এরশাদই পালন করে চলেছেন। এ দু’জনই এরশাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আপনজন। এর বাইরে তার দলটির সংসদ সদস্যদের মধ্যে রওশন এরশাদের পুত্র দাবিদার সাদসহ আত্মীয়স্বজনেরই প্রাধান্য। এদিকে এরশাদের অপর স্ত্রী এরিকের মা বিদিশা নিজেকে দলের প্রধান হিসেবে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বর্তমানে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনসহ সংসদ সদস্যের নির্বাচন ক্ষমতাসীনদের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হওয়ায় তাদের আকাক্সক্ষার বাইরে অপর কারো নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ একেবারে নেই বললেই চলে। প্রায় ১২ বছরের অধিক সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল হিসেবে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। এ সময়ে সংসদ সদস্যদের মৃত্যুজনিত কারণে যেসব পদ শূন্য হয়েছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীর পরিবর্তে মনোনয়ন লাভের ক্ষেত্রে মৃত সংসদ সদস্যের স্ত্রী, ভাই বা পুত্র বা কন্যা বিবেচিত হয়েছেন এবং ক্ষমতাসীনরা তাদের বিজয় নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বাইরে যেসব দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন লাভ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি প্রভৃতি। এসব দলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দলের প্রধান নির্বাচনে ও সংসদ সদস্যের মনোনয়নে কদাচিৎ পরিবারের সদস্য যেমন – স্ত্রী, ভ্রাতা, পুত্র বা কন্যা বিবেচনায় স্থান পেয়েছেন।
রাজতন্ত্র বংশানুক্রমিক শাসনব্যবস্থা। রাজতন্ত্র দুই ধরনের। এর একটিতে সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা রাজার ওপর ন্যস্ত আর অপরটিতে সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির ওপর ন্যস্ত। শেষোক্তটির ক্ষেত্রে রাজা রাষ্ট্রের অলঙ্কারিক প্রধান। ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ জাপানে অলঙ্কারিক রাজতন্ত্র রয়েছে, অপর দিকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে সত্যিকারের রাজতন্ত্র রয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই মৃত্যু বা অভিসংশনের কারণে রাজা নিয়োগের আবশ্যকতা দেখা দিলে কী পদ্ধতিতে বংশের কে রাজা নির্বাচিত হবেন তা নির্ধারণে বিভিন্ন দেশের নিয়মনীতিতে ভিন্নতা রয়েছে। আমাদের দেশের প্রধান যে তিনটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময়ে একক বা জোটগতভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করেছে এ তিনটি দলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দলীয় ও সরকারপ্রধান হিসেবে পরিবারের বাইরে দলের অপর কারো ওপর দলের বা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের ধারণা তাদের কাছে এখনো অচিন্তনীয় ও সুদূরপরাহত। আমাদের বড় তিনটি রাজনৈতিক দল দলীয়প্রধান ও সরকারপ্রধান হিসেবে পরিবারবহির্ভূত ব্যক্তিকে বিবেচনায় না নেয়ার কারণে উত্তরাধিকার নির্বাচনে তাদের মনোবৃত্তির যে বহিঃপ্রকাশ তা গোষ্ঠীতন্ত্র বৈ পারিবারিক শাসন ব্যতীত ভিন্ন কিছু নয়। আর এ ধরনের গোষ্ঠীতন্ত্র যে গণতন্ত্রের আড়ালে রাজতন্ত্রের সম্প্রসারিত রূপ, বোধ করি এ উপলব্ধি থেকে দেশবাসী বিচ্যুত নয়।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক