মিতু হত্যা মামলার নতুন মোড়

0

মুহাম্মদ সেলিম॥ সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা ফের নতুন মোড় নিয়েছে। এ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে বাদীপক্ষের নারাজির আবেদনও খারিজ করেছে আদালত। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মেহনাজ রহমানের আদালত গতকাল এসব আদেশ দেয়। আইনজীবীদের দাবি- একই ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হওয়ায় বিশেষ সুবিধা পাবে এ ঘটনাকান্ডে জড়িতরা। এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আসামিরা হত্যা মামলা থেকে পার পাওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করা হচ্ছে। সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান বলেন, ‘আদালত পিবিআইর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং বাবুল আক্তারের নারাজি কোনোটাই গ্রহণ করেনি। এ ছাড়া বাবুল আক্তারের করা প্রথম মামলাটির তদন্তের বিষয়েও কোনো আদেশ আসেনি। তাই ওই মামলার তদন্ত পিবিআইর হাতেই থাকছে।’ দ্বিতীয় মামলার বাদী ও মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কী আদেশ হয়েছে তা আমি পুরোপুরি জানি না। আদেশ পাওয়ার পর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’ বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে বলে আসছি এক ঘটনায় দুটি মামলা হতে পারে না। আদালত আমাদের যুক্তি গ্রহণ করে প্রথম মামলার পিবিআইর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেনি। এটা আমাদের প্রাথমিক বিজয়। চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটির কার্যক্রম চলতে আর কোনো বাধা নেই।’ চট্টগ্রাম বারের সিনিয়র আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘প্রচলিত আইন অনুযায়ী দোষী হলে প্রথম মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো যেত। দ্বিতীয় মামলা দায়েরের প্রয়োজন ছিল না। আইন ভঙ্গ করে দ্বিতীয় মামলা দায়ের করায় বিশেষ সুবিধা পাবে আসামিরা। এমনকি এটাকে কাজে লাগিয়ে হত্যা মামলা থেকে রেহায়ও পেতে পারেন।’ সিনিয়র আইনজীবী রেজাউল করিম রনি বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং দ্বিতীয় মামলা দায়েরের কারণে কিছুটা আইনি জটিতা সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে আসামি পক্ষ কিছুটা সুবিধা পাবে।’ ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআই তদন্ত করে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে। তাই পুরনো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এরপর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নতুন করে মামলা দায়ের করেন। যাতে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে বাবুল বর্তমানে কারাগারে আছেন। পিবিআইর চূড়ান্ত প্রতিবেদনের আপত্তি জানিয়ে ১৪ অক্টোবর আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন বাবুল। ২৭ অক্টোবর নারাজির আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে ৩ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করে আদালত।