এবি পার্টির সভায় বক্তারা: দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আহবান

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশের চলমান সংকট নিরসনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের নেতারা। শুক্রবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে আয়োজিত এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে এ আহবান জানান তারা। শনিবার দুপুরে এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। সম্মেলনের গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গনতন্ত্র ও ভোট আজ এক অজানা শব্দে পরিনত হয়েছে, দেশের মানুষের ভোটাধিকার জোর করে হরন করা হয়েছে, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজপথে নামতে হবে। দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার গঠন করার প্রস্তাব রেখে জাফরুল্লাহ বলেন, এই দুই বছরের মধ্যে দেশের অভাবগ্রস্ত ১০ কোটি মানুষকে সুলভমূল্যে খাবার, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব। তিনি বলেন, ভয়ের কিছু নেই, বিজয় আমাদের হবেই ইনশাআল্লাহ। এবি পার্টির নেতাকর্মীদের দেখে আজ আমি উজ্জীবিত হয়েছি, সাহস পেয়েছি। আপনারা তরুন, আপনাদেরকেই এই দেশ গঠনে, অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করতে হবে, আমি বয়স্ক হলেও প্রয়োজনে হুইল চেয়ার নিয়ে আমি সামনে থাকবো কিন্তু মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বো।
এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তার ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন, আমরা একটি মহান উদ্যোগ নিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে, শাহাদাত বরণ করেছে কিন্তু কোন সুফল পায়নি। অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সেই সকল জনগণের মুখে হাসি ফোটাবো আমরা। এটি একটি কঠিন কাজ। পদলোভী, স্বার্থলোভী মানুষ এই কাজের অংশ হতে সক্ষম হবেনা। তারা আসবে যাবে কিন্তু ত্যাগীরাই সফল হবে। প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আজ এক কঠিন সময় পার করছে। গণতন্ত্র কে উদ্ধার করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। আমরা একটি সমাজ তৈরি করেছি, দেশ তৈরি করেছি, কিন্তু নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। সমাজের প্রত্যেক স্তরে ঘৃনার বিষ বাষ্প। দেশে কোন সুশীল সমাজ গড়ে ওঠেনি। সুশীল সমাজের নামে কিছু দালাল তৈরি হয়েছে। এই ঘৃনার বিষ বাষ্প মাড়িয়ে এবি পার্টিকে এগিয়ে যেতে হবে এবং দেশের মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
লেখক ও কলামিস্ট গৌতম দাস বলেন, বাংলাদেশকে একটি মডার্ন রিপাবলিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সকল জাত পাতের উর্ধ্বে উঠে, সাদা কালো, পাহাড়ি, বাঙালি, হিন্দু, মুসলিম সবাইকে আপন করতে হবে এবং একটি অধিকার ভিত্তিক রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করতে হবে।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আজ আমাদের ১৮ মাস পূর্ণ হয়েছে। আমাদের এই নতুন উদ্যোগে অনেক ভুল ত্রুটি হতে পারে। প্রথমে নতুন উদ্যোগের সাথে যারাই সম্মতি দিয়েছেন তাদেরকে আমরা দলে অন্তর্ভূক্ত করে দায়িত্ব দেয়ার করার চেষ্টা করেছি। হয়তো কিছু ভুল হয়েছে। যে যতটুকুর উপযুক্ত নয় তাকে অতি মূল্যায়ন আবার যার সঠিক মূল্যায়ন করা দরকার তাকে তা করতে পারিনি। তিনি বলেন, একসাথে একটা সময় না চললে মানুষের যোগ্যতা পরিমাপ করা যায় না। আমরা পার্টির নাম ঘোষণা, কমিটি গঠন, গঠনতন্ত্র প্রনয়ন সহ সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ গনতন্ত্র পালন করার চেষ্টা করেছি এবং করে যাব। আমরা যদি আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকি, নেতৃবৃন্দ যদি আন্তরিকতার সাথে কাজ করেন তাহলে এবি পার্টিই এদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলে পরিনত হবে ইনশাআল্লাহ। সভাপতির বক্তব্যে দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, আমাদের দলের মূল কার্যক্রমই হলো মানুষের মাঝে সাম্য ও অধিকার নিশ্চিত করা। তবে মনে রাখতে হবে অধিকার কেউ আপনা আপনি দেয়না, অধিকার আদায় করে নিতে হয়। ইনশাআল্লাহ এবি পার্টি জনগণের সমর্থন নিয়ে তাদের অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দেবে। এবি পার্টির আহবায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন- দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর মেজর (অব.) ডা. আব্দুল ওহাব মিনার ও খ্যাতনামা আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক প্রমূখ।