মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি বন্দিদের দেশে ফেরাতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- হাইকমিশনার

0

আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া থেকে॥ মালয়েশিয়ায় অবৈধ হয়ে কিংবা বিভিন্ন কারণে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগের পর ডিটেনশন সেন্টারে আটক সহস্রাধিক বাংলাদেশি অভিবাসী। কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হলে অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পূর্ব পর্যন্ত এই ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক রাখা হয়। দেশে ফেরত পাঠাতে যে তথ্য-উপাত্ত দরকার হয় সেগুলো নিশ্চিত হলেই নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেক সময় এই প্রক্রিয়া বিলম্ব হয়। সংশ্লিষ্ট বন্দিদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় এসব বাংলাদেশি বন্দি অবৈধ হয়ে অথবা দেশটির অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের কারণে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন। তবে বেশিরভাগ বন্দি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অবৈধ হিসাব আটক হন। আবার এক কোম্পানির নামে ভিসা নিয়ে অন্য কোম্পানিতে কাজ করলেও তাদের আটক করা হয়, যাকে বলে ছালা কিরজা। করোনায় টানা লকডাউন, এসওপি বিধিনিষেধের কারণে বন্দিদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। কম-বেশি ১৬৭৮ জন বাংলাদেশি দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। এ সময় ফ্লাইট শিডিউল নিয়মিত ছিল না। স্বাভাবিক বিমান চলাচল এখনো স্থগিত রয়েছে। শুধুমাত্র স্পেশাল ও চাটার্ড ফ্লাইটগুলো যাতায়াত করছে। সংশ্লিষ্ট দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস একজন বন্দির পক্ষে দেশটির ইমিগ্রেশন ও ডিটেনশন সেন্টারে না পৌঁছালে বন্দি প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া বিলম্ব হয়। অনেক সময় দূতাবাস থেকে এসব তথ্যাদি পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। তাছাড়া সর্বশেষ যে জটিলতা সৃষ্টি হয় সেটা হলো বিমানের টিকিট নিয়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একজন প্রবাসী দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যখন আটক হন তখন খালি হাতে আটক হন। এয়ার টিকিট ক্রয় করার মতো সামর্থ্য থাকে না। এ কারণে অনেক বন্দি আছেন টিকিট না সংগ্রহ করতে পেরে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ডিটেনশন সেন্টারে আটক থাকেন। তাই বাংলাদেশি কমিউনিটি ও প্রবাসীদের পরিবারের দাবি সরকারি ভাবে যেন এই বিমান টিকিটের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে ভোগান্তি অনেকটা কমবে। এ ব্যাপারে হাইকমিশনার গোলাম সারোয়ার আরও জানান, করোনায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ যেমন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম (এসওপি) এর কারণে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ আমাদের বন্দি বাংলাদেশি ভাইবোনদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়নি। তাছাড়া আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী দূতাবাস চাইলেই বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারে না। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমোদন লাগে, যেটা একটু সময় সাপেক্ষও বটে। তবে সম্প্রতি আমরা হাইকমিশন থেকে সকল কারাগার/ডিপোর্টেশন সেন্টার ভিজিট শুরু করেছি। ইন্‌শাআল্লাহ শিগগিরই আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও বেগবান করতে পারবো।