আফ্রিকান ইউনিয়নে ইসরাইল

0

মো: বজলুর রশীদ
আফ্রিকান ইউনিয়ন আফ্রিকার ৫৫টি দেশ নিয়ে গঠিত। প্রায় ২০ বছর ধরে ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টার পর ইসরাইল গত জুলাই মাসের শেষ দিকে আফ্রিকান ইউনিয়নে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা অর্জন করল। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এটি ইসরাইল-আফ্রিকা সম্পর্কের উদযাপনের দিন।’ তিনি বলেন, বর্তমানে আফ্রিকার ৪৬টি দেশের সাথে ইসরাইলের সম্পর্ক রয়েছে। এর আগে অর্গানাইজেশন অব আফ্রিকান ইউনিটিতে (ওএইউ) পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু ২০০২ সালে ওএইউ ভেঙে দেয়া এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন দিয়ে প্রতিস্থাপিত হওয়ার পর সেই স্ট্যাটাস ফিরে পেতে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যর্থ হয় দেশটি।
পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পাওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে ‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই’ এবং আফ্রিকা মহাদেশে ‘চরমপন্থী সন্ত্রাসবাদ বিস্তার’ প্রতিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরো শক্তিশালী সহযোগিতা সৃষ্টি হবে এমন কথা তেলআবিব ঘোষণা করল। পৃথক বিবৃতিতে ইউনিয়নের চেয়ারপারসন মুসা ফকি মাহামাত দীর্ঘ দিনের ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্ব›দ্ব নিয়ে এইউ-এর অবস্থানের ওপর জোর দেন, তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য দুই রাষ্ট্রের সমাধান প্রয়োজন।’ কিছু দিন আগে তিনি বলেন, অধিকৃত পূর্বজেরুসালেমে অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থানে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ‘আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন’ করছে। ফকি মাহামাত ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনারও ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারকে পদদলিত করেছে।’ আলজেরিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রামতানে লামামরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ইসরাইলকে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেয়া ইউনিয়নকে বিভক্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে।’ সাতটি আরবভাষী প্যান-আফ্রিকান সংগঠন মুসা ফকি মাহমাতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। সাতটি দেশ হলো, আলজেরিয়া, মিসর, কোমোরো, তিউনিসিয়া, জিবুতি, মৌরিতানিয়া ও লিবিয়া।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলকে নীরবে আফ্রিকান ইউনিয়নে ঢোকানো বিপজ্জনক। আলজেরিয়া ফিলিস্তিনিদের পক্ষে এক জোরালো কণ্ঠস্বর, এখন আলজেরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনও উত্তপ্ত ও বিক্ষুব্ধ। এসব একদিনে হয়নি। দুই দশকের নীরব ও পরিকল্পিত ক‚টনীতির কারণে ইসরাইল এই পরিদর্শকের মর্যাদা পেল। অনেক আফ্রিকান দেশ নেতাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ফিলিস্তিন পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারপরও কেন ইসরাইলকে এই মর্যাদা দেয়া হলো তা বোধগম্য নয়। তা ছাড়া এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে সদস্য দেশগুলোর মতামত গ্রহণ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে পেছন দরজার রাজনীতি বেশি কাজ করেছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ইসরাইল আলেলি আদমাসুকে ইথিওপিয়া, বুরুন্ডি ও শাদের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়। আলজেরিয়া ইসরাইলের সদস্যপদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন শুরু করে। দক্ষিণ আফ্রিকা, তিউনিসিয়া, ইরিত্রিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, নাইজার, কমরোস, গ্যাবন, নাইজেরিয়া, জিম্বাবুই, লাইবেরিয়া, মালে, বতসোয়ানা আলজেরিয়ার পদক্ষেপকে সমর্থন দেয়। আলজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রামতান লামারা বলেন, এই পদক্ষেপের কারণে তার দেশ নিরাপত্তা ইস্যুতে ভুগছে। দক্ষিণ আফ্রিকা যদিও নিজ দেশের ঝামেলা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে তবুও বলেছে, ‘আফ্রিকান ইউনিয়নের সা¤প্রতিক কাজে আমরা হতভম্ব হয়ে গেছি।’ এক সরকারি বার্তায় বলা হয়, পদক্ষেপটি ‘সঠিক নয়’ এবং ‘কোনো আলাপ ছাড়া এককভাবে’ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকার ক‚টনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে সেই ১৯৯৫ সাল থেকে। ফিলিস্তিন অনেক আগ থেকে আফ্রিকান ইউনিয়নে পর্যবেক্ষক সদস্যের মর্যাদা ভোগ করছে। ইসরাইলের জন্য বিষয়টি হতাশার। সভার প্রসিডিং এবং কোন দেশ আসলে কী বলল এসব সরাসরি প্রত্যক্ষ করার জন্য তাই মরিয়া হয়ে উঠেছে তেল আবিব। ইসমাইল হানিয়া, হামাস নেতা, যারা গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে, আফ্রিকান ইউনিয়নের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, যে নীতি ও আদর্শ সামনে রেখে সংস্থা গঠিত হয়েছে তার সাথে এই কর্মকাণ্ডের মিল নেই। তিনি চেয়ারম্যান মুসা ফকি মাহামাতকে চিঠি দিয়ে তার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন। হানিয়া নিন্দা জানিয়ে লিখেন, ‘যারা ইসরাইলি রেজিমের নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে চায় এই পদক্ষেপ তাদের অধিকারের প্রতি বড় আঘাত।’ ফকি মাহামাতের স্মৃতিতে কি কিছুই নেই? দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তার নিজের দেশে এবং অন্যান্য আফ্রিকান রাজ্যে বর্ণবাদের অবসান ঘটাতে এবং সবার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। তিনি তাদের ভুলে যাননি যারা বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা ভালোভাবেই জানি আমাদের স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হবে না ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ছাড়া।’ তিনি ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক সলিডারিটি দিবসের এক ভাষণে এ কথা বলেছিলেন। অথচ আফ্রিকা ইউনিয়ন যে বিশ্বাসঘাতকতা করবে তা ধারণাও করেননি।
মধ্য আফ্রিকান দেশগুলোর সমস্যা হলো সন্ত্রাস। নাইজার, চাঁদ, ক্যামেরুন, বুর্কিনা ফাসো, মালি, নাইজেরিয়া এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের মতো দেশগুলো সন্ত্রাসকবলিত। সে জন্য ইসরাইল তার সন্ত্রাস দমন ট্রাম্পকার্ড এই দেশগুলোতে ব্যবহার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আফ্রিকায় ইসরাইলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো ফিলিস্তিনের প্রতি জনসমর্থন কমানো। আমরা দেখেছি, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় সমর্থন সবসময় আফ্রিকা থেকে এসেছিল। কখনো কখনো, আফ্রিকা এর জন্য শাস্তিও পেয়েছে, যেমন- উগান্ডার ইদি আমিনের ক্ষেত্রে। ইসরাইল আফ্রিকায় তার দূতাবাসের সংখ্যা ১০ থেকে ২৫-এ উন্নীত করতে চায়। এই লক্ষ্যে গিনি, চাঁদ এবং নাইজারে দূতাবাস খুলেছে। সেনেগাল ও নাইজেরিয়ায় ইসরাইলের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই চালু আছে এবং সেগুলো থেকে পুরো আফ্রিকায় নজর রাখা হয়। এক্ষেত্রে ইসরাইলের মূল শক্তি তার গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক। তবে ঘানা, কেনিয়া, উগান্ডা ও ইথিওপিয়া ইসরাইলের গোয়েন্দা সহায়তা সম্পর্কে সজাগ। তেলআবিব এই নেটওয়ার্ক পুরো আফ্রিকায় স¤প্রসারণ করতে চায়। তেলআবিব, ক‚টনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স, আইডিএফ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে স্থানীয় সেনাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। দ্য ইসরাইলি টাইমস এই পদক্ষেপকে বলেছে ‘সামরিক সহযোগিতার নাটকীয় উত্থান’। ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট রিভলিন ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আফ্রিকা আমাদের ভবিষ্যৎ’। এসব সম্পর্ক ইসরাইলকে তার নিজের লাভ সঠিকভাবে পাইয়ে দিতে সক্ষম করেছে, যেমন- সিরিয়া ও লেবাননে ইসরাইলি সীমান্তে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে জড়িত সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে তেলআবিব! ‘সহিংসতা রফতানি’ ও ‘যুদ্ধ করা’ শান্তির কোনো রেসিপি নয়। অথচ ইসরাইলের কাছে আফ্রিকায় এই দুটি বিষয় উপজীব্য। বিগত দুটি মহাযুদ্ধে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়ে সিদ্ধান্তে এসেছে যে, বোঝাপড়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাই হোক, আফ্রিকান দেশগুলোর উন্নয়নে সহায়তার ছদ্মাবরণে, ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তার অপরাধের দায়মুক্তির জন্য কাজ করতে চায় এবং রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক মুনাফা অর্জনের জন্য সব ধরনের সুযোগ একত্রিত করতে ইচ্ছুক। ন্যায়নীতির বিষয়টি এখানে গুরুত্বহীন। আফ্রিকার সরকারগুলোর সাথে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নিজেকে অপরিহার্য অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইসরাইল।
ইসরাইল আফ্রিকার অফুরন্ত সম্পদও আহরণ করতে চায়। দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া ও আইভরিকোস্টে ইসরাইলি সংস্থাগুলোর এনার্জি এবং কৃষিতে কাজ করছে। ইসরাইলি কোম্পানিগুলো অনেক আফ্রিকান দেশে টেকসই এনার্জি ও আধুনিক কৃষির ক্ষেত্রে প্রকল্প গ্রহণ এবং মূলধন ব্যয় করেছে। শুকনো ও মরু এলাকায় চাষাবাদ করার কৃষিজ্ঞানের জন্য বিশ্বব্যাপী ইসরাইল পরিচিত। আরো একটি বিষয় রয়েছে যা নীল অর্থনীতি নামে পরিচিত। মাছ ধরা থেকে বন্দর ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত এর সাথে জড়িত। আফ্রিকার দেশগুলোর সার্বিক উন্নয়নে নীল অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় ভবিষ্যৎ প্রয়োজনে আফ্রিকানরা সেদিকে ঝুঁকছে। সৌরবিদ্যুৎ, কৃষির উন্নয়ন করে অধিক খাদ্য ফলাও, পানি সরবরাহ, বেকারত্ব, জীবনমান উন্নয়ন এসব জরুরি বিষয়। কিন্তু এসব ভালো কাজের ফাঁকে ইসরাইলি মোসাদ আফ্রিকায় সন্ত্রাসের নতুন পালে হাওয়া দিচ্ছে। আফ্রিকার দেশগুলো নিজেদের মধ্যে নানা সঙ্ঘাতে লিপ্ত রয়েছে। ইসরাইল আঞ্চলিক সংঘর্ষের উর্বর ভ‚মিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য মোসাদকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। যেমন- মোসাদ বিদ্রোহীদের সমর্থন করে সুদানকে বিভক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছিল। ইসরাইলের পক্ষে এই অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখা একসময় হয়তো মারাত্মক পরিস্থিতির জন্ম দেবে। যদি ইসরাইল আবার এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে, তাহলে আরেকটি বিশ্বাসঘাতকতা ঘটবে এবং এর জন্য সুদান, মালি ও নাইজারকে চড়া মূল্য দিতে হবে। আফ্রিকান ইউনিয়ন যখন নিজেকে শক্ত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে চলেছে, তখন মহাদেশটি আরো বেশি ঔপনিবেশিকতা, দাসত্ব, প্রাকৃতিক এবং মানবসম্পদের শোষণ এবং বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপে প্রবাহিত নানাবিধ সমস্যার শিকার হচ্ছে। আমরা দূর থেকে মনে করতাম, আফ্রিকা এগিয়ে গেছে, এখন মনে হচ্ছে সেই ‘এগিয়ে চলার’ যুগকে কি পেছনে ফেলে এসেছি?
মহাদেশটির রাজনৈতিক অখণ্ডতা, কয়েক দশক ধরে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে, অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বাসের অযোগ্য নেতাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া হয়েছে। এখন ইসরাইলকে পর্যবেক্ষক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এটি কি আসলে খুবই জরুরি ছিল? আমাদের মনে রাখতে হবে, ইসরাইল কেবল ঔপনিবেশবাদের মূল নয়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ম্যান্ডেট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ফিলিস্তিনকে উইল করার পর থেকে এটি একটি দখলদার শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এটি আদিবাসী ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে অত্যাচারের নিকৃষ্টতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, তা সত্তে¡ও জায়নিস্ট পতাকাবাহীদের জন্য ঘরের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হলো। জায়নবাদী ইসরাইল নির্লজ্জভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। আদিবাসী ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বৈষম্য ও নির্মম সামরিক শাসনের হিংস্রতা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব কাজ আফ্রিকান ইউনিয়নের সনদের সাথে সরাসরি বিরোধপূর্ণ। তা ছাড়া, ইসরাইল যুদ্ধাপরাধ এবং ক্রমবর্ধমান গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত। বর্ণবাদের অপরাধ ছাড়াও মানবতার বিরুদ্ধেও বিস্তর অপরাধ করেছে দেশটি। জাতিসঙ্ঘের অসংখ্য প্রস্তাবনা ও সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেছে। এত কিছুর পরও একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে উপযুক্ত মনে করল আফ্রিকান ইউনিয়ন! দক্ষিণ আফ্রিকা ও কিছু আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য দেশ ইসরাইলের পর্যবেক্ষক মর্যাদার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এখন এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার লড়াই মহাদেশের প্রধান সংস্থাটির সামনে আরো একটি বড় সঙ্কট সৃষ্টি হলো। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আইনজীবী, গবেষক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একটি দল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ শুরু করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকানরা বলছে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘লড়াই করা এবং আপত্তি জানানো কর্তব্য বলে মনে করি’। ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার আইনি যুক্তি এবং সাক্ষ্য রয়েছে। আফ্রিকানরা মনে করে, পর্যবেক্ষক মর্যাদা থাকলে ইসরাইল ক্রমশ ‘আফ্রিকান ইউনিয়নের কার্যক্রমে জড়িত’ হতে পারে। অভিযোগকারীরা বলছে, এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আফ্রিকান ইউনিয়ন একটি বড় ভুল করল।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার