রাস্তা পাকাকরণে ওলোট পালোট

0

বিশেষ প্রতিনিধি॥ যশোরের শার্শা উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের গ্রামীণ একটি কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ নিয়ে ব্যাপক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে যে রাস্তাটি পাকাকরণ হওয়ার কথা সেটি না হয়ে অন্য একটি রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। জেলা পরিষদের অর্থায়নে এবং ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সার্বিক তদারকিতে ওই রাস্তা পাকাকরণ হলেও কাঁচা থেকে যায় বরাদ্দকৃত রাস্তাটি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। অভিযোগ উঠছে, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রাস্তা পাকাকরণের কাজে ওলট-পালট করেছেন।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত তেবাড়িয়া গ্রামের সালামের বাড়ি থেকে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত ৩৫০ ফুট কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ পায় উপজেলার ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী। কিন্তু ওই রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ না করে একই গ্রামের পলাশের বাড়ি থেকে রাকিবের বাড়ি পর্যন্ত মাত্র ১০০ ফুট রাস্তার নির্মাণ করে কাজটি শেষ করেন তিনি। পাশাপাশি বরাদ্দকৃত অর্থের সবটুকুই প্রাক্কলিত ব্যয় দেখান তিনি। রাস্তাটির প্রবেশ মুখে একটি নাম ফলক বসানো হয়েছে। যেখানে লেখা আছে সালামের বাড়ি থেকে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ফ্ল্যাট সলিংকরণ। প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে এক লাখ টাকা। অথচ যে রাস্তাটি পাকাকরণ বা সলিং হওয়ার কথা ছিল সেটি অনেক বেশি কদাকার এবং নাজুক অবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দা নিয়ামত, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, মনোয়ারা বেগমসহ অনেকে জানান, এক জায়গার বরাদ্দকৃত সরকারি কাজ অন্য জায়গায় কেমন করে হয়। এক এলাকার নাম ফলক অন্য জায়গায় কীভাবে লাগানো যায়। চেয়ারম্যান হোসেন আলী তার নিজের স্বার্থের জন্য রাস্তা অদল বদল করেছেন। তারা বরাদ্দকৃত রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী বলেন, সালামের বাড়ি থেকে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি নিয়ে একটি মামলা ছিলো। সে কারণে জেলা পরিষদ আমাকে অন্য জায়গায় প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে রাস্তা পাকাকরণ করার জন্য বলে। তাই ওই রাস্তাটির পরিবর্তে এ রাস্তা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তবে রাস্তাটির নামফলক পরিবর্তন না করাটা ভুল হয়েছে এবং এটি খুবই দৃষ্টিকটু। পরবর্তীতে ওই রাস্তাটির পাকাকরণ কাজের জন্য বরাদ্দ আসলে নাম ফলক পরিবর্তন করা হবে। এখন কিছুই করার নেই। এদিকে চেয়ারম্যান মামলার কথা বললেও এলাকাবাসী বলছে ভিন্ন কথা। ২০১৭ সালে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে আদালতে একটি মামলা হয়। যেটি ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে খারিজ হয়ে যায়। এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী এস এম মামুন হাসান বলেন, বরাদ্দকৃত রাস্তা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে করার কোনো এখতিয়ার নেই। সেটি করতে হলে জেলা পরিষদের কাছ থেকে পরিবর্তন করে নিতে হবে।