‘নৃত্যকে পেশা হিসেবে নেয়া সবার জন্য সুখকর হবে না’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥বাংলাদেশে নৃত্যশিল্পীদের মাঝে নিজের নৃত্য প্রতিভাকে যে ক’জন অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে নীপা অন্যতম। দ্রুপদী, ফোক- প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন যেটা আজও চলমান। তার এই প্রতিভাকে সম্মান জানাতে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেছেন।
দীর্ঘদিন এই গুণী শিল্পীর মিডিয়ায় উপস্থিতি কম। কেমন আছেন? জানতে চাইলে নীপা বলেন, ভালো আছি। অবশ্য গত দু’বছর ধরে অতিমারির জন্য আমাদের নৃত্যশিল্পীদের অসুবিধার মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছে। সেটা আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত। আমি ঘরের বাইরে প্রয়োজন ছাড়া বের হইনি। গত দু’বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মঞ্চে পরিবেশনায় অংশ নিয়েছি।
আমাদের নৃত্যাঞ্চলে যে সব নবীন ছাত্রছাত্রী রয়েছেন তাদের ভার্চ্যুয়াল ক্লাস নিয়েছি। আপনি একজন সফল নৃত্যশিল্পী, কোরিওগ্রাফার ও অভিনেত্রী-কোন পরিচয়ে আপনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? নিপা বলেন, অবশ্যই সবচেয়ে এগিয়ে রাখবো নৃত্যশিল্পীকে। অভিনয়কে আমি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে কখনই নেইনি। অবশ্য নৃত্যের মাঝেই অভিনয় সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমি অবশ্য খুব অল্প বয়সেই নৃত্যের সঙ্গে কোরিওগ্রাফিতে মনোযোগ দিয়েছি। আমরা যারা অন্যের নির্দেশনায় নৃত্য পরিবেশন করি, অনেক সময় দেখা যায় চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করতে অসুবিধা হয়। কিন্তু একজন নৃত্যশিল্পী যদি নিজেই নির্দেশক হন তাহলে অনেক সুবিধা হয়। আপনি অল্প বয়সে রাষ্ট্রীয় সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। এটা কীভাবে সম্ভব হয়েছে? নিপা বলেন, আমার সৌভাগ্য বলতে হয়। আমি অল্প সময়ে নৃত্যের বিভিন্ন শাখায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে কর্মরত ছিলাম। বাংলাদেশ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। বিশেষ করে ফোক ঘরানার নৃত্যই আমাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান এনে দিয়েছে। জীবন ও জীবিকা হিসেবে এটাকে পেশা হিসেবে নেয়া কতোটুকু নির্ভরযোগ্য? এ নৃত্যশিল্পী বলেন, যেকোনো পেশায় প্রথম শর্ত হলো আপনি কতোটুকু নির্ভরযোগ্য ঐ পেশার ক্ষেত্রে। শিল্প মাধ্যমটি সমাজের অন্যান্য পেশার মতো বাণিজ্যিক নয়। শিল্পী সত্তার বিষয় থাকে কলায়। নৃত্যকে পেশা হিসেবে নেয়া সবার জন্য সুখকর হবে না। এখনো এ শিল্পটি তেমনভাবে রুটি-রুজির জন্য নির্ভরযোগ্য সেক্টর নয়।