মহম্মদপুরে নৌকাবাইচে লাখো মানুষের ঢল

0

মহম্মদপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা॥ মাগুরার মহম্মদপুরে শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন মধুমতি নদীতে ঐতিহ্যবাহী বিহারী লাল শিকদার নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ও গ্রামীণমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে বীমলেন্দু শিকদারের পৃষ্ঠপোষকতা এবং উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে মধুমতির দুই তীরে নামে লাখো মানুষের ঢল।
এ উপলক্ষে প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই গ্রামীণমেলা বসতে শুরু করে মধুমতির দু’কূলে। মানুষের দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ নানা ধরনের পণ্যের দোকান সাজিয়ে বসে নদীর দুই পাড়ের বিশাল এলাকা জুড়ে। নির্দিষ্ট দিনের পরেও তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত চলে এই উৎসব।
২০১৪ সালে শুরু হয় এই মেলা। তারপর থেকেই লোক মুখে শোনা যায়, বিহারী লাল শিকদার নৌকাবাইচের এই মেলা খুলনা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মেলা। তাই লোকজ ঐতিহ্য নৌকাবাইচ উপভোগ করতে সকাল থেকেই শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন মধুমতি নদীর পাদদেশে পাশের যশোর, ঝিনাইদাহ, নড়াইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও এলাকার শিশু-কিশোর-কিশোরীসহ সব বয়সী নারী-পুরুষ জমায়েত হতে থাকেন। তাদের উপস্থিতিতে এলাকায় সৃষ্টি হয় আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশ।
দুপুরে শান্তির প্রতীক কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। এরপর শুরু হয় কাঙ্খিত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। বাইচ দেখে আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়েন মধুমতির দুই পাড়ের লাখো দর্শক।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার বাসুদেব কুমার মালোর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন- জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুমার কুন্ডু, পুলিশ সুপার মো. মশিউদ্দৌলা রেজা, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ শরিফুল ইসলাম, মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাসুদেব কুমার কুন্ডু ও অফিসার ইনচার্জ বোরহান উল ইসলাম।
প্রতিযোগিতা শুরুর আগ মুহূর্তে মধুমতি নদীর দুই পাড়ে নামে লাখো মানুষের ঢল। উদ্বোধনের পরপরই সংগীতের তাল-তালে দাঁড়িয়াদের ছন্দময় দাঁড় নিক্ষেপে নদীর পানি ময়ূরপঙ্খির মতোই ঝিলমিল করে মধুমতির বুক জুড়ে। উল্লাসে মেতে ওঠেন নদী পাড়ের আমুদে দর্শক।
কালাই ১৩টি ও গহনা ১১টি মিলিয়ে দুই গ্রুপে মোট ২৪টি নৌকা অংশ নেয় প্রতিযোগিতায়। প্রতিযোগিতা শেষে প্রথম ও দ্বিতীয় বিজয়ীদের বড় ফ্রিজ একটি এবং তৃতীয় বিজয়ীদের ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন তুলে দেন অতিথিরা।