দুই মাসে মেডিকেল ভিসায় ভারত গেলেন ২৮৯৬ বাংলাদেশি

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ শর্ত মেনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মেডিকেল ভিসায় চিকিৎসা নিতে ভারতে যাত্রী যাতায়াত বাড়ছে। নিষেধাজ্ঞার পর বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে চিকিৎসা নিতে ভারতে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও ভ্রমণ ভিসা এখনও চালু হয়নি। এর আগে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শুধু রাষ্ট্রীয়কাজে সীমিত পরিসরে যাতায়াতের সুযোগ ছিল। শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেনাপোল দিয়ে মেডিকেল ভিসায় ভারতে গেছেন ২৮০ জন বাংলাদেশি। গত দুই মাসে এটি সর্বোচ্চ। এ নিয়ে গত দুই মাসে মেডিকেল ভিসায় ভারত গেছেন দুই হাজার ৮৯৬ বাংলাদেশি।
বাংলাদেশিদের ভারতে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে না হলেও ভারতফেরত বাংলাদেশিদের বেনাপোল ও যশোরের বিভিন্ন হোটেলে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। বাংলাদেশিরা ভারতে যাওয়ার পর সরাসরি গন্তব্যে যেতে পারছেন। ২২ আগস্ট থেকে শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। দুই ডোজ করোনার টিকা নেওয়া ও ক্যানসার রোগী ভারত থেকে দেশে এলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। ভারতে যাওয়ার সময় লাগবে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিও। বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ভারতে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ২৬ এপ্রিল থেকে দেশটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণ বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে জটিল রোগে আক্রান্তরা বিপাকে পড়েন। চিকিৎসা করাতে না পেরে অনেক রোগী যন্ত্রণায় ভুগতে থাকেন। একপর্যায়ে দুই মাস পর মানবিক দিক বিবেচনায় চিকিৎসাসেবাপ্রত্যাশীদের শর্তসাপেক্ষে ভারত ভ্রমণের সুযোগ দেয় সরকার। ভারত সরকারও ইতিবাচক সাড়া দিয়ে ভিসা দেয়া শুরু করে। ভারত ভ্রমণে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী ধীমান সরকার বলেন, আমার মেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত। তিন মাস আগে একবার ভারতে গিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য। এক মাস পর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় যেতে পারিনি। এখন দুই দেশের সরকার রোগীদের কথা চিন্তা করে ভিসা দেওয়ার জন্য একমত হয়েছে। আগের নিয়মে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করানো পরীক্ষার নেগেটিভ সনদসহ বিভিন্ন শর্ত পালনের প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে। আমার মতো শত শত মানুষ ভারতে যেতে পারছেন। আরেক পাসপোর্টধারী যাত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, দেশে চিকিৎসাসেবা উন্নত না হওয়ায় করোনাকালেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে হচ্ছে। দেশে চিকিৎসাসেবা উন্নত হলে ভারতে যাওয়ার দরকার হতো না। এতে যেমন খরচ কমতো তেমনি সময়ও বাঁচতো। দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতিতে সরকারকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাই।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, বর্তমানে জটিল রোগে আক্রান্তরা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে ভারতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশি যারা ভারত থেকে ফিরছেন, তারা ভারতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের বিশেষ ছাড়পত্র নিয়ে দেশে ফিরছেন। নিজ দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন না হলেও ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে আনতে হয়। তিনি আরও বলেন, গত চার মাসে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন ৭ হাজার ৬৬১ জন বাংলাদেশি। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি ও ভারতীয় মিলে প্রায় পাঁচ হাজার ভারত গেছেন।