মেয়র-প্রশাসন বিরোধ নিরসনে স্বস্তি নগরীতে ভিন্ন আতঙ্ক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বরিশালের মেয়র ও প্রশাসনের ‘সমঝোতা’ খবরে নগরজীবনে খানিক স্বস্তি ফিরলেও দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে রাজা বাহাদুর রোডের অস্থায়ী বাসিন্দাদের দূরত্ব-মন কষাকষি চরমে ছিল। নানা ঘটনায় তা প্রকাশ হতো। সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা কোনোরকম রাখঢাক ছাড়াই মেয়র এবং অন্যদের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে মেয়র সমর্থকদের হামলা পরবর্তী ‘সমঝোতা’ বৈঠকের পর এসবের অবসান ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের এক নারী কাউন্সিলের ভাষ্য মতে, গত ১০-১১ মাস ধরে নগরপিতার সঙ্গে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল। করোনা এবং ফুটপাথ ইস্যুতে পরিস্থিতি এতটাই ঘোলাটে হয়েছিল যে, জেলা প্রশাসক ঘোষণা দিয়ে নগর ভবনে চিঠিপত্র প্রদান বন্ধ রেখেছিলেন। সমঝোতা বৈঠকের পর অন্তত সেই অবস্থার অবসান হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংরক্ষিত আসনের ওই কাউন্সিলর। তবে তার অন্য এক সহকর্মী সমঝোতা পরবর্তী মেয়র সমর্থকদের বেপরোয়া ভাব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। তবে ওই কাউন্সিলর বলেন, রাজনৈতিক ঘটনার সমাধান রাজনৈতিকভাবে হতে পারে, কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে যারা হামলা করেছে তাদের তো বিচার হওয়া উচিত। অন্যথায় তারা আরও মারমুখী হবে। বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী মোহন মনে করেন জনপ্রতিনিধি তথা রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে প্রশাসনের বিরোধ থাকা অন্যায়, তবে প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাদের ওপর আঘাত ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। ফুটেজ দেখে আক্রমণকারীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে, তা না হলে তারা আশকারা পাবে, নগরের যত্রতত্র ঘটনা ঘটাবে। তার মতে, বরিশালে এতদিন মেয়র ও প্রশাসন যে যার মতো চলছিলেন। ওই দ্বন্দ্বের সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে চিহ্নিত অপরাধীরা। তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছিল। নগরীতে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনায় প্রশাসন ত্বরিত পদক্ষেপ নিলেও রাজনৈতিক পরিচয়ে তারা খুব সহজেই পার পেয়ে যেতো। বেশির ভাগ সময় প্রশাসনিক উদ্যোগ ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হতো।
তবে প্রশাসন যে কঠোর হওয়ার চেষ্টা করেনি তা কিন্তু নয়। ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইমাস মনে করেন রাজনৈতিক শক্তি ও প্রশাসনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের নিরসন অবশ্যই স্বস্তির। কিন্তু এই সমঝোতা হতে হবে অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে। তার মতে, নগরীতে কোনো ঘটনা ঘটলেই ঢালাওভাবে মেয়রের ওপর দায় চাপানো ঠিক নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মেয়র যেহেতু ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ, তাই ভালো-মন্দ সবাই তার কাছে থাকতে চাইছে। ইউএনও’র বাসভবনে হামলার ঘটনায় সমঝোতার প্রেক্ষিতে ইয়াস বলেন, অপরাধীদের আশ্রয় নয় বরং দমন-এটাই হোক এই সমঝোতার অঙ্গীকার। যদি তাই হয় তাহলে সমঝোতা বরিশালবাসীর জন্য সুফল বয়ে আনবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে নগরে অশান্তি বাড়বে, প্রশাসনও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। সমঝোতার খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পক্ষে-বিপক্ষে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সোহেল আরমান নামে একজন লিখেন- আজকে দলীয় ঘটনা বলে সমঝোতা। দেশের আইনে কি আছে এই ধরনের সমঝোতা? গ্রাম্য বিচারের মতো সমঝোতা করে সবকিছু মাটিচাপা দিয়ে দিলো। রায়হান উদ্দিন নামের একজন লিখেন-‘অবশেষে দ্বন্দ্ব, সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে বরিশালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা হলো প্রশাসনের। রোববার রাতে সিটি করপোরেশনের সম্মানিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ভাই, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল আহসান বাদল স্যারের উপস্থিতিতে বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে বৈঠকে উভয় পক্ষেরই মামলা প্রত্যাহার ও সমঝোতার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উভয় পক্ষকেই ধন্যবাদ দ্বন্দ্ব, সংঘাতের পথ পরিহার করে সমঝোতায় আসার জন্য। বি.দ্র. অপ্রত্যাশিত এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের দুজন নিরীহ কর্মীর চোখ নষ্ট হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে, তাদের সুচিকিৎসা ও যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে উভয়পক্ষের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি।’ মাসুম নামের একজনের ভাষ্য- বরিশাল শহরের ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুর পাড় এলাকার চেইন শপ টপ টেন-এ গত ১৮ই মার্চ যারা লুট করেছিল, তাদের অনেককেই ইউএনও’র বাসভবনে হামলাকালে দেখা গেছে। টপটেন-এর ঘটনায় সমঝোতা না হয়ে, বিচার হলে ইউএনওকে আক্রমণের ঘটনা হয়তো ঘটতো না। সমঝোতার কারণে ইউএনও’র বাসভবনে হামলাকারীরা পার পেয়ে গেলে নগরবাসী এবং প্রশাসনকে আরও বড় কোনো ঘটনা দেখতে হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই প্রশাসনের ওপর আক্রমণ থেকে শুরু করে নগরে সামপ্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অন্তত ৮-১০টি ঘটনায় রাজনৈতিক কারণে অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন। প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারীর ওই তালিকায় বাম রাজনীতিক, আওয়ামী লীগ সমর্থক, সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীরা রয়েছেন। তবে তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন। তাদের মতে, বরিশালে গত এক বছর ধরে বিচিত্র সব ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তার বিচার হচ্ছে না। ফলে এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়ে গেছে। একই সঙ্গে শহরময় ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে। এ থেকে মুক্তি জরুরি। তা কেবল নগরবাসীর জন্য নয়, শহীদ পরিবারের সন্তান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ তথা আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্যও মঙ্গলজনক হবে। বরিশালের রাজনীতির অন্দরমহলের খোঁজখবর রাখেন এমন অনেকের মতে, পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে বৃহত্তর বরিশালের রাজনীতিতে মেয়র পারিবারের সুসংহত অবস্থান রয়েছে। কিন্তু সেই শক্তির ছায়ায় বিতর্কিত এবং ভিন্নদল থেকে আসা ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাওয়ায় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সামপ্রতিক সময়ে তারা সক্রিয় হয়েছেন এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। এটা দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মেয়র সমর্থকদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। যার প্রভাব পড়ছে নগর ভবন থেকে শুরু করে সর্বত্র। একটি রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে- নানা কারণে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিটি করপোরেশনের ছয় কাউন্সিলর মেয়রের পক্ষ ত্যাগ করে প্রকাশ্যে প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হন। আরও অন্তত ২০ কাউন্সিলর প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে অবস্থান নেবেন- এমন গুঞ্জন চলছিল নগরীতে। এ কারণেই নগর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা নয়, বরং উপজেলা পরিষদে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের সমর্থনে স্থাপন করা বিলবোর্ড-ফেস্টুন অপসারণ করে তাকে চাপে রাখাই ছিল মেয়র অনুসারীদের উদ্দেশ্য। সেটি শেষ পর্যন্ত রক্তাক্ত সংঘর্ষে গড়ায় এবং প্রশাসন ও আওয়ামী লীগকে মুখোমুখি দাঁড় করায়।
কাউন্সিলরদের সঙ্গে বিরোধ তুঙ্গে: বিসিসিতে ৩০ জন সাধারণ ও ১০ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কাউন্সিলর জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর কমপক্ষে ২৫ কাউন্সিলরের সঙ্গে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তার মধ্যে অন্তত ২০ জন কাউন্সিলরের সঙ্গে মেয়রের মুখ দেখাদেখি বন্ধ বলে গুঞ্জন রয়েছে। কাউন্সিলরদের অভিযোগ, মেয়র একক সিদ্ধান্তে পরিষদ পরিচালনা করেন। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ১৪টি স্থায়ী কমিটি গঠন করেননি তিনি। এমনকি বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের অকার্যকর রেখে মেয়র তার অনুগত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে সব ধরনের ক্ষমতা দিয়েছেন। এ নিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আগে থেকে থাকলেও প্রকাশ হয় চলতি আগস্টের শুরুতে। সমপ্রতি প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে ৬০০ ব্যাগ করে খাদ্য সহায়তা দেন। অনেক কাউন্সিলর সেই ত্রাণ বিতরণ করেননি। মেয়রের ভয়ে তা করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে ছয়জন কাউন্সিলর নিজ ওয়ার্ডে ওই সামগ্রীগুলো বিতরণ করেন। তারা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডের আমির হোসেন বিশ্বাস, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়াউর রহমান বিপ্লব, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের আনিছুর দুলাল, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাহাউদ্দিন বাহার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনিছুর রহমান শরীফ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির। এর পরপরই এই কাউন্সিলরদের কার্যালয় থেকে সচিব ও অফিস সহায়ক প্রত্যাহার করে নগর ভবনে সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিমন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণ করায় তাদের প্রত্যাহার করেন মেয়র। যদিও পরে কার্যালয়গুলোতে নতুন লোক দেয়া হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছয় কাউন্সিলর প্রকাশ্যে প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে অবস্থান নেন এবং তার পক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। ঘটনার বিষয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিছুর রহমান দুলাল মানবজমিনকে বলেন, মোট ৭ জন কাউন্সিলরের সচিব ও অফিস সহায়ক প্রত্যাহার হয়েছিল। এরমধ্যে একজনকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ তার ব্যাপারে ভুল ইনফরমেশন ছিল। তিনি মন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণ করেননি। বাকি যারা করেছিলেন তাদের একই ভাগ্যবরণ করতে হয়েছে। ওই কাউন্সিলর উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী কি দলের বাইরের লোক? বা সিটি করপোরেশন কি তার নির্বাচনী আসন (বরিশাল-৫)-এর বাইরে? তাছাড়া আমরা তো প্রধানমন্ত্রীর স্টিকার লাগানো ত্রাণ বিতরণ করেছি। প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে পাওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণে মেয়র মহোদয় রুষ্ট হবেন কেন? আমরা কী অন্যায় করেছি। আমরা তো দল, নেত্রী এবং জনগণের জন্য রাজনীতি করি।’
কথায় কথায় থানা ঘেরাও, নগর অচল: গত এক বছরের মধ্যে তিন দফা বরিশাল নগরী অচল করেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীরা। প্রতিবারই বাস ও লঞ্চ, এমনকি কাঁচাবাজার বন্ধ করে দেয়া হয়। শত শত নেতাকর্মী দিয়ে ঘেরাও করা হয় থানা। গত বছরের ডিসেম্বরে বিসিক শিল্পনগরীর এক নারী শ্রমিককে উত্ত্যক্ত করায় এক যুবককে আটক করে পুলিশে দেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির মালিক। ওই যুবককে নিজেদের কর্মী দাবি করে তার মুক্তির দাবিতে কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে মেয়র অনুসারী আওয়ামী লীগের কর্মীরা। কাশীপুর বাজারে ইজিবাইকে চাঁদাবাজির অভিযোগে বাসদ কর্মী গোলাম রসুলকে মারধর করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একদল কর্মী। এ ঘটনায় গোলাম রসুলের মামলায় চাঁদাবাজ রিপন মাঝিকে গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার করা হলে ওই দিনও বিমানবন্দর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়। নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মেয়র অনুসারীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয় গত জুলাইতে। সুলতানের গ্রেপ্তার দাবিতে একইভাবে পুরো তিন ঘণ্টা নগরী অচল করে রাখা হয়েছিল। সর্বশেষ ঘটনা বুধবার রাতের। ইউএনও’র বাসায় হামলার পরবর্তী পুলিশি অ্যাকশন ঠেকাতে মধ্যরাত থেকে বাস ও লঞ্চ চলাচল এমনকি কাঁচাবাজারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।