যশোরে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কম হলেও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বগতি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে করোনার ডেল্টা ধরণের দাপটের পর থেকেই যশোরে মৃত্যু ও আক্রান্ত ছিলো ঊর্ধ্বমুখি। এই প্রথম মঙ্গলবার জেলায় সবচেয়ে কম সংখ্যক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে শনাক্তের চোখ রাঙানী রয়েছে ঠিক আগের মতই। সোমবার একদিনে ১১ জন করোনা রোগী ও ১ জন করোনা উপসর্গ রোগীর মৃত্যুর একদিন পরই মৃত্যুর হার নিয়ে অনেকটা স্বস্তি পেয়েছে যশোরবাসী। এদিন জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন দুইজন করোনা রোগী এই রোগের উপসর্গ নিয়ে কেউ মারা যাননি। তবে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩.৯ শতাংশ। যা আগের দিন সোমবার শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ ছিলো।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই করোনা রোগী মারা গেছেন। এরা হাসপাতালের রেড জোনে ভর্তি ছিলেন। অন্যান্য দিনে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও এদিন কেউ মারা যাননি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের রেড জোনে ভর্তি রয়েছেন ৯৪ এবং ইয়েলো জোনে ৪২ জন। করোনায় মারা য্ওায়া দুইজনই পুরুষ। তাদের বয়স ৭৫ বছর। উভয়েই যশোর সদর উপজেলার বাসিন্দা।
এদিকে, গেল ২৪ ঘণ্টায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে ৬১৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৪৮ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩.৯ শতাংশ। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও শনাক্তের হার অনেকটা উদ্বেগজনক পর্যায়ে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী মৃত্যু হয়েছে ২ জন। এটি নিশ্চয় স্বস্তিদায়ক। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যে মৃত্যুর হার ছিলো সে হিসেবে এটি খুবই ইতিবাচক। আশা করছি সামনের দিনগুলো আরও ভালো খবর আসছে। তিনি বলেন, করোনা রোগী বাড়লেও হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা রয়েছে। অক্সিজেন সাপোর্টের পাশাপাশি সার্বিক কর্মকাণ্ডে ডাক্তার নার্সরা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ আবু শাহীন বলেন, করোনা প্রতিরোধে আমরা এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি টিকাদান কর্মসুচিকে জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। মানুষ যাতে সহজে করোনা টিকা গ্রহণ করতে পারে সে জন্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রাম পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণের পদ্ধতি সহজ করা হচ্ছে।
এদিকে জেলার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। মঙ্গলবার যশোর জেলা প্রশাসনকে ৩০ সেট অক্সিজেন সিলিন্ডার (সরঞ্জামাদিসহ) দিয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এদিন যশোর জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের উপস্থিতিতে জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের হাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার তুলে দেন সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিনের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসক ও সরবরাহ) মেজর (অব.) ফারুখ আহমেদ খান।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড করোনাকালীন মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ও নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে আর্তমানবতার সেবায় অনন্য অবদান রেখে চলেছে। এ ছাড়া দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে গৌরবময় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
চট্রগ্রাম বন্দরের শীর্ষ টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।