ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আনন্দ সাইফউদ্দিনের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ হারারেতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে হারাতে সাকিব আল হাসান ছিলেন নায়ক, পার্শ্বনায়ক মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ২৪১ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা একের পর এক সাজঘরে। অষ্টম উইকেটে সাইফকে সঙ্গে নিয়ে সাকিব ৬৯ রানের জুটি গড়েন। সর্বোচ্চ রানের এ জুটিতেই বাংলাদেশ লক্ষ্যে পৌঁছে যায়, যাতে সাইফের অবদান ২৮। তবে যতটা সময় তিনি ক্রিজে ছিলেন সাকিব আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলে যেতে পেরেছেন। ৯৬ রানে অপরাজিত থেকে তিনি ছাড়েন মাঠ।
আনসাং হিরো সাইফ সোমবার (১৯ জুলাই) জানালেন, সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ে ম্যাচ জেতানোর যে স্বপ্ন ছোটকাল থেকে দেখে এসেছেন তা পূরণ হয়েছে। একই সঙ্গে নিজের ব্যাটিং নিয়েও কথা বলেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
সাকিবের সঙ্গে আপনার জুটি নিয়ে কী বলবেন?
সাইফ: অনেক চাপের পরিস্থিতি ছিল। তবে এই সময়টার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম। হবে কি হবে না পরের ব্যাপার। চেষ্টা ছিল নিজের প্রসেস ঠিক রাখা। তখন ৭০ রানের মতো দরকার ছিল। সত্যি বলতে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে জেতানো। আগেও হয়তো কয়েকবার বলেছি। সুযোগটা কাল এসেছে। স্মরণীয় করে রাখতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
আপনি যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন কী পরিকল্পনা ছিল?
সাইফ: অনেক সময় আলগা বল পেয়েছি কিন্তু দলের প্রয়োজনে ডট দিতে হয়েছে, বড় শট খেলিনি। দলের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেছি। সাকিব ভাই যথেষ্ট ভালো সাপোর্ট দিয়েছেন। এজন্য আমার কাজ সহজ হয়েছে। যেহেতু সাকিব ভাই ক্রিজে ছিলেন, আত্মবিশ্বাস ছিল- বেশি ডট না খেলে সিঙ্গেল নিয়ে ম্যাচ ছোট করতে পারলে ফলাফল পক্ষে আসবে।
দুটি ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে কী বুঝতে পারছেন?
সাইফ: অন্য খেলার চেয়ে ক্রিকেট বেশিরভাগ অংশেই দলীয় খেলা। ছোট ছোট পার্টনারশিপ, ছোট ছোট অবদান দলের জয়ে বেশ ভূমিকা রাখে। গত দুই ম্যাচে তাই হয়েছে।
আপনার ব্যাট থেকে আসা ২৮ রানকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
সাইফ: সুযোগ সবসময় আসে না। যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারিনি, সেই চেষ্টা ছিল। অবশ্যই চাইব না সবাই আউট হয়ে যাক আর আমার সুযোগ আসুক। তবে কাল নিজের সামর্থ্য কিছুটা হলেও দেখাতে পেরেছি। দল আমার ছোট্ট অবদানে জিতেছে, এতেই আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দিত।
ব্যাটসম্যান হিসেবে কী আত্মপ্রকাশ হয়ে গেলো…
সাইফ: আমি ব্যাটসম্যান হিসেবেই ক্যারিয়ার শুরু করি। এর চেয়েও অনেক চাপের মুখে ব্যাট করেছি। বয়সভিত্তিক খেলার সময় দেখা যেত ৪০ রানের মধ্যে ৫-৬ উইকেট পড়ে যেত, এরপর এক প্রান্ত থেকে এক এক করে খেলে ২০০ রান করতাম। চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে বয়সভিত্তিকে খেলার সময় চাপের মুহূর্ত সামলেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ অবশ্যই ভিন্ন। আন্তর্জাতিকে এই প্রথম এমন পরিস্থিতি ছিল। আগের অভিজ্ঞতা বারবার মনে করছিলাম।
শেষ ম্যাচেও বাংলাদেশের লক্ষ্য থাকবে ১০ পয়েন্ট…
সাইফ: প্রত্যেক ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ভাই চোট নিয়ে এই সিরিজ খেলছেন, কারণ সুপার লিগে পয়েন্টের ব্যাপার আছে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ই এটা মাথায় রেখে গুরুত্ব সহকারে খেলছে।
হোয়াইটওয়াশ সম্ভব?
সাইফ: জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই যেহেতু ঘরের মাঠে সব দলই দুর্দান্ত। এজন্য বেশি মনোযোগ রেখে খেলছি, শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করছি। প্রত্যেক সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য থাকবে। প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে ৩-০ ব্যবধানে জিতব ইনশাআল্লাহ।
নিজের ফিটনেস নিয়ে কী ভাবছেন?
সাইফ: মাত্র ২৫ দিনে ১৬টা ম্যাচ খেলেছি, লম্বা সফর করে এখানে আসলাম- শরীরের ওপর একটু ধকল গিয়েছে। গতকাল ম্যাচ গিয়েছে, তবু দিনভর ঘুমানোর সুযোগ নেই। সকালে নাস্তা করে এসে জিম করে নিয়েছি। সামনে অনেক খেলা আছে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেকে ফিট রাখতে হবে। পারফরম্যান্স হয়তো একদিন হবে একদিন হবে না। কিন্তু ফিট থাকলে কামব্যাক করতে পারব। ফিটনেস নিয়ে প্রত্যেক খেলোয়াড় সকাল বিকাল কাজ করছে।