ভাতার টাকা বিতরণ স্ব”ছ হোক

0

বিগত কয়েক মাসেই জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন ¯’ানে ‘এমএফএস’-এর মাধ্যমে সরকারের প্রদেয় ভাতার টাকা বিতরণে নানারকম অনিয়ম ও সুবিধাভোগীদের ভোগাšি-র খবর প্রকাশিত হয়েছে। সবশেষ, শনিবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘শত শত ভাতাবঞ্চিত, টাকা ভুতুড়ে নম্বরে!’ শিরোনামের প্রতিবেদন এমনই আরেকটি দৃষ্টাš-। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সাভারের কাঞ্চনপুর, সাভার পৌরসভা, আশুলিয়ার চারাবাগ, আমিনবাজারসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকশ নারী-পুর”ষই বয়স্ক ভাতার টাকা প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন। তাদের কার”র মোবাইল নম্বরের এক বা একাধিক ডিজিট ভুল হয়েছে। ফলে বয়স্ক ভাতার টাকা চলে যা”েছ অন্য কোনো ফোন নম্বরে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তথ্য সংগ্রহকারীরা এই ভুল করেছেন। একই রকম অভিযোগ আরও শতাধিক নারী-পুর”ষের। প”তিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে বয়স্ক ভাতা, প”তিবন্ধী ভাতা ও বিধবা ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন ভাতার টাকা উত্তোলনের জটিলতা নিরসনের জন্য এই সুবিধাভোগীরা সাভার সমাজসেবা কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন। কিš’ সমস্যার সমাধান হ”েছ না। সাভার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জানিয়েছেন এই সমস্যা সমাধানে সমাজসেবা কার্যালয় একটি আবেদন ফরম দি”েছ, যেখানে সঠিক মোবাইল নম্বর এবং যাবতীয় তথ্য পূরণ করে জমা দিলে এসব সংশোধন করা হবে। সেেেত্র ভাতার টাকা অন্য কোথাও যাবে না। এর আগে চলতি মাসের শুর”তে দেশ রূপাš-রের আরেক প”তিবেদনে উঠে আসে ঢাকার কেরানীগঞ্জে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা উত্তোলনে সুবিধাভোগীদের একইরকম ভোগাšি-র কথা। সেখানেও দেখা গেছে কেরানীগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়নে বয়স্ক ও বিধবা ভাতা তুলতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন শত শত মানুষ। নানা জটিলতার কারণে ভুক্তভোগীরা কয়েক মাস ধরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও তুলতে পারছেন না ভাতার টাকা।
কেবল ঢাকার কেরানীগঞ্জ বা সাভারই নয় সারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ভাতার টাকা তোলা নিয়ে একই রকম জটিলতায় পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। অথচ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বিতরণ নিষ্কণ্টক করা এবং এেেত্র যেকোনো ধরনের জালিয়াতি রোধ করার জন্যই সরকার ‘জিটুপি’ বা ‘গভর্নমেন্ট টু পারসন’ পদ্ধতিতে টাকা প”দানের জন্য প”থাগত ব্যাংকিং সেবার বদলে ‘মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস’ বা ‘এমএফএস’ পদ্ধতির প”বর্তন করেছে। স্মরণ করা দরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগী নির্বাচন এবং সুবিধাভোগীদের ভাতা বিতরণে তৃণমূল পর্যš- নানা ¯-রে জনপ”তিনিধিদের একটা মুখ্য ভূমিকা ছিল। কিš’ প”াকৃতিক দুর্যোগসহ নানা সময় দেখা গেছে একই মোবাইল ফোন নম্বরের বিপরীতে শতাধিক নাম অš-র্ভুক্ত করে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজে কিংবা নিজের আত্মীয় স্বজনদের পকেটে টাকা পাঠিয়েছেন জনপ”তিনিধিরা। আবার তালিকার স্ব”ছতার অভাবে শেষমেশ বিশেষ ভাতা কিংবা সহায়তার কর্মসূচি বাতিল করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। যা অনাকাক্সিত।
ল্য করার মতো বিষয় হলো, এেেত্র মূল সংকটটি ডিজিটাল প”যুক্তির মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা ‘এমএফএস’-এর নয়, এই সেবার জন্য মোবাইল ফোন নম্বর এবং এমএফএস-সেবার তথ্য নিবন্ধনে। চলমান করোনা মহামারীতে কাজ হারানো ৫০ লাখ পরিবারকে প”ধানমন্ত্রী আড়াই হাজার টাকা করে যে আর্থিক সহায়তা দি”িছলেন সেখানেও ১৪ লাখ ৩২ হাজার পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে না পারার েেত্রও ছিল মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধনের তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের গরমিল। এই পরি¯ি’তি বার্তা দি”েছ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য সরকারের একটি কেন্দ”ীয় ডাটাবেইস, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল সিম এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সব তথ্য নিবন্ধন ও যাচাই পদ্ধতি আরও নির্ভুল করতে হবে। এই কাজে সামনের দিনগুলোতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা ‘এআই’-এর মতো প”যুক্তিও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, সবার আগে বর্তমানে সারা দেশে যে সুবিধাভোগীরা তথ্যাগত ভুলের কারণে ভাতার টাকা উত্তোলনে সমস্যায় পড়েছেন তাদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।