কঠোর লকডাউনে বাড়ছে আবার দুর্ভোগ

0

এই মুহুর্তে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনক। ঢাকার বাইরে নতুন নতুন জেলায় দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে। কোনো কোনো জেলায় শনাক্তের হার আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। গত সোমবার পর্যন্ত দৈনিক পরীক্ষা ও শনাক্ত বিবেচনায় ঢাকা বিভাগে সংক্রমণ ছিল সর্বোচ্চ। অন্যদিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৩ জন এবং খুলনার তিন হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যশোরে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। একই সময়ে সাতক্ষীরায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক দিন ধরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ আবার বাড়তে শুরু করেছে। এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত ৯ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হওয়ার পর করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকার চারপাশের জেলাগুলোতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকাকে ঘিরে থাকা সাতটি জেলায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। জেলাগুলো হচ্ছে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ। এছাড়া স্থানীয়ভাবে যশোরে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছেন। এই জেলাগুলোতে আগামী ৯ দিন জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। কিন্তু দেশের কোথাও কোনোভাবেই বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউন’ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। অনেক জেলায় চলমান লকডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই সাধারণ মানুষের মাঝে। লকডাউনের বিধি-নিষেধের মধ্যে শহর ও গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে মানুষ ভিড় করছে। শনাক্ত ও মৃত্যুর হার প্রায় এক মাস ধরে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাতেই তুলনামূলক বেশি ছিল। ঢাকায় অনেকটাই স্বস্তি ছিল শনাক্ত ও মৃত্যু কম থাকায়। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি তথ্য সবাইকে নতুন করে ভাবিয়েছে। আইসিডিডিআরবি জানিয়েছে, তারা মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ঢাকার ৬০ জন করোনা রোগীর নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ৬৮ শতাংশের মধ্যে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট পেয়েছে। এর আগে যশোরে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট পাওয়া যায় ৮০ ভাগ।
এ অবস্থায় আমাদের বিধি-নিষেধ মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। মানুষ আমানতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ ও অভাবের শিকার হচ্ছে। সরকার তথা স্থানীয় প্রশাসনের উচিত বিষয়টি দেখা প্রয়োজন।