চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার ৩৫ বছর

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনের চেরনোবিল শহরে ১৯৮৬ সালে ঘটেছিল পারমাণবিক দুর্ঘটনা। ওই দুর্ঘটনায় ৩১ জনের প্রাণহানি হলেও পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুতর পারমাণবিক দুর্ঘটনা বলা হয়। চেরনোবিল দুর্ঘটনার ৩৫ বছর পেরুলো আজ সোমবার।
আজ ২৬ এপ্রিল, ‘চেরনোবিল বিপর্যয় স্মরণ দিবস’। এই দিনটি উপলক্ষে নিহতদের স্মরণে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন প্রতি বছর নানা আয়োজন করে থাকে। ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ সভায় ২৬ এপ্রিলকে ‘আন্তর্জাতিক চেরনোবিল বিপর্যয় স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বর্তমানের ইউক্রেন। সে সময় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে। ইউক্রেনের চেরনোবিল শহরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারটি চুল্লি ছিল। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে কর্মরতদের অবহেলার কারণে চতুর্থ চুল্লিটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্ঘটনা ঘটার পর-পরই পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। গ্রাস করে ২ হাজার ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা।
এ ঘটনায় হিরোশিমা ও নাগাসাকি থেকে ৫০০ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়। তেজস্ক্রিয়তা রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশের ১ লাখ ৫৫ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়ে থাকে সে সময় এই দুর্ঘটনার তেজস্ক্রিয়তার কু-প্রভাব চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও টের পাওয়া গিয়েছিল।
দুর্ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে ২ জন মারা যায়। পরবর্তীতে এক মাসের মধ্যে আরো ২৯ জনের মৃত্যু হয়। আর এটার প্রভাব পড়ে লাখ লাখ মানুষের ওপর। তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৮ হাজার মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। প্রায় ৪ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। আর দুর্ঘটনা কবলিত চেরনোবিলকে ২০ হাজার বছরের জন্য বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়।
এখন পর্যন্ত চেরনোবিলের সেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারদিকে ৩০ কিলোমিটার জায়গা নিষিদ্ধ এলাকা। এই জায়গাটি এখন এক ভুতুড়ে, পরিত্যক্ত শহর।
তবে চেরনোবিলে এখন প্রকৃতির জয়গান। সেখানকার ২ হাজার ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক বন এবং বন্য প্রাণীদের অভয়ারণ্য।