বিএনপি নেত্রী নিপুণের মুক্তি দাবি মির্জা ফখরুলের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর মুক্তি দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত কয়েক দিনে বিশেষ করে গত দুদিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ তাণ্ডবের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞ চালায়। আজও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এই নৃশংসতা ও নির্মমতার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আজ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বিক্ষোভরত জনতার ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণে মধুপুরের পীর আবদুল হামিদসহ অসংখ্য মানুষ গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকার সাইনবোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গুলি ও সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ ঢাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীকে। এছাড়াও দেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভে আজ ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নুরুল হক নুরু, খুলনার যুবদল নেতা কামরুজ্জামান টুকসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। চান্দগাঁও থানা যুবদলের আহ্বায়ক গোলজার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাজিদ হাসান রনি এবং চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল নেতা মো. শহীদুজ্জামান ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের কণ্ঠরোধ করতে দেশের মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা এবং জীবন কেড়ে নিয়ে জনগণের প্রতি প্রতিশোধ নিচ্ছে। জনগণের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে দিশেহারা হয়ে মানুষ হত্যার মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার পুরো দেশকে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এর দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই বহন করতে হবে। পরিস্থিতি শান্ত করার পরিবর্তে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দিয়ে এবং ক্ষমতাসীন দলের মাস্তানদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে সরকার।’ ‘বর্তমানে দেশের মানুষ এক জালিম সরকারের শাসনে বসবাস করছে। করোনাকালে জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তায় কাজ না করে মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে রক্ত ঝরাতে উন্মাদ হয়ে উঠেছে তারা। কিন্তু এদেশের সাহসী জনতা অতীতেও যেমন সব স্বৈরাচারকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারকেও তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করতে রাস্তায় নেমে এসেছে। জনগণের আন্দোলনের গণজোয়ারে অবৈধ সরকারের মসনদ অতলে তলিয়ে যাবে।’ ‘আমি আজ মধুপুরের পীর আবদুল হামিদসহ অসংখ্য মানুষকে গুলিবিদ্ধকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ গ্রেফতার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত নেতাকর্মীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’ ফখরুল বলেন, ‘আমি ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক নিরীহ মানুষ হত্যা, দমন-নিপীড়ন এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে বিএনপি ঘোষিত আগামীকাল সোমবার (২৯ মার্চ) দেশব্যাপী সকল মহানগরীতে এবং মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সকল জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল সফল করতে জনগণ এবং বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’