মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান জরুরি

0

সরকার তথা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নানামুখী উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না চালের দাম। কিছুদিন আগে এক অনুসন্ধানী গবেষণায় উঠে এসেছে যে, গত কয়েক মাসে দেশে চাল, চিনি, ভোজ্যতেল, আলু ও পেঁয়াজের দামের উল্লম্ফনে ছিল সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সমন্বিত কারসাজি। শেষ পর্যন্ত চাল ও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এ দুটো পণ্য আমদানির উদ্যোগ নেয় জরুরী ভিত্তিতে। ফলে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হয় দেশে। এতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখনো সাধারণের নাগালে নামেনি। অনুরূপ হয়েছে চালের েেত্রও। দেশে বোরো-আমনের ফলন আশানুরূপ হলেও কমেনি চালের দাম। বরং মোটা চালসহ সব রকম চালের দাম বেড়েছে। এমতাবস্থায় সরকার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাধ্য হয় আমদানি শুল্ক কমানোসহ ভারত-মিয়ানমার থেকে চাল আমদানিতে সরকারী-বেসরকারী ভিত্তিতে। সেই চাল আসছেও, তবে ধীর গতিতে। ইতোমধ্যে ১০ লাখ টন চালের মধ্যে ভারত থেকে এক লাখ ১১ হাজার ৫২০ টন চাল এসেছে, কিছু রয়েছে পথে। তবে মিয়ানমারে সম্প্রতি সেনা অভ্যুত্থান সঙ্ঘটিত হওয়ায় চাল আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর বিকল্প হতে পারে ভিয়েতনাম-কাম্পুচিয়া।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকও স্বীকার করেছেন যে, চালের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। অথচ দেশে চালের মজুদ সন্তোষজনক। কিন্তু মিল মালিক ও পাইকারি বিক্রেতারা অজুহাত দিচ্ছেন অতিবৃষ্টি ও বন্যার এবং সর্বশেষ ধানের দাম বৃদ্ধির। সত্য বটে, সরকার এবার ধান-চালের সংগ্রহ বাড়ানোর ল্েয এর ক্রয়মূল্য বাড়িয়েছে। এতে কৃষকরা ধানে লোকসানী হয়নি। তাই বলে ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে দফায় দফায় চালের দাম বাড়ানো সমর্থনযোগ্য নয়। মিল মালিকরা বৈঠকে সম্মত হলেও অনতিপরেই তারা জোটবদ্ধ হয়ে দাম বাড়াচ্ছেন চালের। অতঃপর সরকার চালের দাম বেঁধে দিয়েছে মোটা চাল ও মিনিকেটের। বলা হয়েছে, বেশি দামে চাল বিক্রি করলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে তা কাজে দেয়নি। চালের দাম বাড়ছেই। এই মুহূর্তে ভোক্তাশ্রেণীর মাথাব্যথার কারণ চাল ও ভোজ্যতেলের দাম। করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী সর্বাগ্রে জোর দেন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর। টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি ছাড়াও সরকার ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করে বর্তমানের ৫০ লাখ ওএমএসের কার্ডের চাল বিতরণও করছেন। এরপরও কেন চালের দাম বাড়ছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। আশা করি সরকার খতিয়ে দেখবে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেবে।