সহিংসতার মাঝেই আজ দ্বিতীয় ধাপে ভোট

0

আজ ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৬১ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ ২৭ জানুয়ারি। এ ছাড়া তৃতীয় ধাপের ৬৪টি পৌরসভার নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি। এরই মধ্যে স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচন ঘিরে সহিংস ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। সংঘাত-সংঘর্ষে একাধিক প্রাণহানিও ঘটেছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত। কারণ বাংলাদেশে নির্বাচনকে ভোট উৎসব বলেই ধরা হয়। নির্বাচনের সময় এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সবারই প্রত্যাশিত। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা নানা আয়োজনে ভোট প্রার্থনায় নামে। পথসভা, কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে অনেক রাত পর্যন্ত পাড়া-মহল্লায় চলে নির্বাচনী প্রচার। এই উৎসবমুখর পরিবেশই আবার কখনো কখনো সংঘাত-সংঘর্ষে রূপ নেয়। ঘটে প্রাণহানির ঘটনা। যেমনটি ঘটেছে গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কুষ্টিয়ায় পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে গত মাসে। প্রকাশিত আরেক খবরে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রচার শুরুর পর তা সহিংসতার দিকে এগোচ্ছে। প্রথমে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে বিরোধ সীমাবদ্ধ থাকলেও তা এখন গড়িয়েছে খুনাখুনিতে। নিহত হয়েছেন পাঠানটুলী এলাকার এক মহল্লা সরদার। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে আগেরবার জয়ী হয়েছিলেন এমন ১৪ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নানা কারণে এবার আওয়ামী লীগের সমর্থন পাননি। তাঁদের দোর্দণ্ড প্রতাপে একেবারে কোণঠাসা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নির্বাচনী সহিংসতায় উমেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিহত হয়েছেন। তিনি একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই। এ ঘটনার মাত্র পাঁচ ঘণ্টা পর প্রতিপ প্রার্থীর লাশ কুমার নদ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নির্বাচনের শেষ অবস্থায় নির্বাচনী পরিবেশ সংঘাতময় হয়ে ওঠায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাঁরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে কমিশনার পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কার্যত এক দলীয় পরিচিতি পাওয়া এই নির্বাচন ধাপে ধাপে চলছে। সময় যত যাচ্ছে, স্থানীয় এই নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার শঙ্কাও ততটা বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিপরে নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন ও ভাঙচুর এখন নিত্যদিনের ঘটনা। নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা করারও অভিযোগ উঠছে। মূলত মতাসীন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা দখলের লড়াই ও কোন্দলের প্রতিফলন ঘটছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। এসব ঘটনায় তীব্র ােভ প্রকাশ করেছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমস্যা সমাধানে কঠোর বার্তা দিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তৎপরত নয়। তারপরও নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।