শিশু-কিশোরদের শ্রেণি কক্ষে ফেরানো জরুরি

0

বিশ্বব্যাপী শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর পরিচালিত গবেষণায় স্কুল খুলে দেয়ার পেক্ষে মত দিয়েছে ইউনিসেফ। সংস্থাটির শিক্ষা কার্যক্রমের বৈশ্বিক প্রধান বলেছেন, করোনার কারণে দেশে দেশে স্কুল বন্ধ। এতে শিশুদের শিক্ষা গ্রহণ, মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা ও সুরার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। স্কুল থেকে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর তথ্য খুব কমই আছে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়গুলো খোলার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া এবং শিশুদের যথাসম্ভব নিরাপদ রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। আন্তর্জাতিক এ সংস্থার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও স্কুল খুলে দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পড়েছে সঙ্কটে। ইতোমধ্যে ৪০ হাজার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম। গত এক দশকে শিক্ষা খাতে দেশের যে অর্জন, তা ৯-১০ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় ম্লান হওয়ার পথে। বিশেষ করে বাল্যবিয়ে ও শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া কমানোসহ বিভিন্ন েেত্র যেসব অর্জন হয়েছিল; দীর্ঘ বন্ধের কারণে সেগুলো হুমকিতে পড়েছে। এতে করে বহু েেত্র দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। অথচ টেকসই উন্নয়ন ল্যমাত্রার ৪ নম্বর ল্েয গুণগত শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের এটা অর্জন করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল খোলার বিষয়টি বিবেচনা করা জরুরি; কিন্তু আমলে নিতে হবে যে, দেশীয় প্রোপটে করোনা সংক্রমণের বাস্তবতাও রয়েছে। তাই স্কুল খোলার আগে অবশ্যই ভেবেচিন্তে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে পরিবেশ নিরাপদ করতে হবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবার কথা বিবেচনায় রেখেই ঝুঁকি প্রশমন করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তথ্য-উপাত্ত ঠিকভাবে সংগ্রহ করা। কত শিক্ষার্থী পড়াশোনার বাইরে বা পিছিয়ে আছে, সেগুলো জানা জরুরি। মনে রাখতে হবে, শিশুদের প্রারম্ভিক শিখন যোগ্যতা যথাযথ না হলে সারা জীবনে পূরণ হওয়ার নয়। স্কুল চালু করলেও অনলাইনে পড়াশোনার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। এমনও হতে পারে, সপ্তাহে তিন দিন সশরীরে এবং তিন দিন অনলাইনে কাস নেয়া যেতে পারে। তবে শিক্ষা শুধু তথ্য জানার মধ্যে হয় না। নানা প্রকার মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। এই মিথস্ক্রিয়াটা কেবল স্কুলেই সম্ভব। বাস্তবে শিশুরা পরিবারের বাইরে যেখানে মেধা, মননশীলতা ও বেড়ে ওঠার পরিবেশ পায়, সেটি হলো স্কুল। স্কুল শুধু শিার পরিবেশ তৈরি করে না, শিার্থীর নৈতিকতা, আচরণ, সামাজিক মূল্যবোধসহ বিভিন্নভাবে তাকে তৈরি করে। করোনার কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের শিশুরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ জন্য পরিস্থিতির সাথে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে শিখতে হবে। শিাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার েেত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা বড় সমস্যা। গণপরিবহনে যাত্রী বেশি পরিবহন হয়। আর কাসে ৭০-৮০, এমনকি ১০০ জনও বসে। কিছু স্কুল হয়তো তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে পারবে। সব স্কুলের পে এটা সম্ভব নয়। স্কুলগুলোতে স্যানিটাইজার ব্যবহার, হাত ধোয়া, তাপমাত্রা মাপাও জরুরি। আমরা মনে করি, কখন কোন পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা যাবে, তা নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা দরকার। তাহলে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার শিাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। সব স্কুল তখনই খোলা উচিত, যখন ঝুঁকি থাকবে না। এ েেত্র বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে স্কুল খুলতে হবে।