সবজির অগ্নিমূল্যে ভরসা আলুর দামও ক্রমশ নাগালের বাইরে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে আলুর দাম বেড়েই চলেছে, বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। সবজির দামও এ সপ্তাহে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। নতুন আমন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করলেও এ সপ্তাহে দাম কমেনি। ভোজ্যতেলের দামও প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। গত তিন চার দিন থেকে বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অন্যান্য মাছের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। ক্রেতাদের আক্ষেপ, বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে নিত্যপণ্যের দাম ইচ্ছেমত বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। সবজির অগ্নিমূল্যের কারণে সাধারণ মানুষ আলুর উপর নির্ভর করেছিল। কিন্তু সেই আলুও এখন লাগামছাড়া। দাম বাড়তে বাড়তে প্রতি কেজি আলু কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল শুক্রবার সকালে যশোরের বড়বাজারের চিত্র ছিল এমনই। বাজার করতে আসা আইনজীবী মনিরুল ইসলাম বলেন, সবজি ছাড়া একমাত্র ভরসা ছিল আলু, সেটাও চলে গেল নাগালের বাইরে। চলতি সপ্তাহে বাজারে সবজির দাম আরেক দফা বেড়েছে। শুক্রবার বড়বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ছিল ৬০/৭০ টাকা। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৪০/৫০ টাকা। উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ৭০/৮০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০/৭০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০/১২০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৮০/১০০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৯০/১০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৮০/১০০ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৪০/৫০ টাকা। পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। একজন নি¤œমধ্যবিত্ত বয়স্ক ক্রেতা মানিক সরদার আপে করে বলেন,আলু ও সবজি এখন ‘রিচ ফুড’ খাবারের তালিকায় চলে গেছে। তিনি বাজার মনিটরিংয়ের অভাবকে বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে দায়ী করে আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে পণ্যের দাম ওপরে উঠতেই থাকবে। বড়বাজারে নতুন আমন ধানের চাল উঠতে শুরু করেছে। এরপরও চালের দামে কোনো হেরফের নেই। এ সপ্তাহেও দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার বাজারে মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪১/৪২ টাকা, কাজললতা ৪৬/৪৮ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৪৭/৪৮ টাকা, মিনিকেট ৪৮ থেকে ৫২ টাকা ও বাংলামতি ৫২ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে ভোজ্যতেলের দামও এ সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার খোলা সয়াবিন তেল প্রতি কেজি ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, গত সপ্তাহে ছিল ১০৪ টাকা। পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৯৭ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৯৪ টাকা। সুপার তেল বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৯৮ টাকা। সরিষার তেল বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকা। এদিকে ২২ দিনের নিষেধাঞ্জার পর গত ৪ নভেম্বর বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছিল প্রচুর। এক সপ্তাহ পর থেকে ইলিশের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বরগুনা জেলার পাথরঘাটার মৎস্য আড়তদার বাবুরাম কর্মকার শুক্রবার মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, মা ইলিশ নদীতে ডিম ছেড়ে তাদের আবাসস্থল সাগরে ফিরে গেছে। গত বছর পাথরঘাটার মৎস্য ঘাটে এরকম সময় প্রায় ২০০ মণ ইলিশ উঠতো। অথচ এখন ১০ মণ মাছও আসছে না। জেলেদের জালেও ইলিশ আসছে না। গতকাল শুক্রবার যশোর বড়বাজার মাছ বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৪০০ টাকা ও ৪/৫ পিস ইলিশের কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য মাছের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এক কেজি ওজনের কাতল মাছ ১৬০ টাকা, এক কেজি ওজনের রুই মাছ ১৮০ টাকা, ১৫/২০ পিস পাবদার কেজি ৩৫০ টাকা, ৪পিস কেজি বেলে ৮০০ টাকা, এক কেজি ওজনের শোল ৬০০ টাকা, ১০ পিস বাগদা চিংড়ির কেজি ৭৫০ টাকা, ১০ পিস গলদা চিংড়ির কেজি ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।