অস্ট্রেলিয়া থেকে গম আমদানি নিষিদ্ধ করতে পারে চীন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ ও অবিশ্বাস তৈরি হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। চলতি বছরে এসে করোনা মহামারীর কারণে সেটা রীতিমতো বাণিজ্য বিরোধে রূপ নিয়েছে। একের পর এক অস্ট্রেলীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ও বাড়তি শুল্ক আরোপ করছে বেইজিং। সেই ধারাবাহিকতায় চীন সরকার এবার অস্ট্রেলিয়ান গম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তাভাবনা করছে। খবর ওয়ার্ল্ডগ্রেইনডটকম ও সাউথ চাইনা মর্নিং পোস্ট।
চীন এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে যব ও অন্যান্য পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ বছরের শুরুর দিকে নভেল করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানানোর পর চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটে। ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়েছিল চীনের উহান শহরে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘অস্ত্র পরিদর্শকের মতো’ ক্ষমতা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এমন টানাপড়েনের মূলে ছিল অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ক্রমবর্ধমান চীনা হস্তক্ষেপের অভিযোগ। যদিও চীন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে গম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে দুই দেশের মধ্যে বছরে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঝুঁকিতে পড়বে। গত সপ্তাহে চীনা কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিল, তারা অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা এমারাল্ড গ্রেইন ও টিম্বার থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি স্থগিত করবে। তাদের ভাষ্য, চীনা পরিদর্শকরা কিছু কার্গোতে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় দূষিত পদার্থ ও পোকামাকড় পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের আগে গরুর মাংসের ওপর অনুরূপ বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং অস্ট্রেলিয়ান যব ও সস্তা ওয়াইনের ওপর অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছিল।
২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এসিও সতর্ক করে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা বেড়ে গেছে। সে সময় চীনা ব্যবসায়ীরা অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় রাজনীতিকদের অর্থ দিয়েছেন এমন একটি অভিযোগও ওঠে। সে বছরই দেশটি বিদেশী হস্তক্ষেপ ঠেকাতে কিছু আইন করার ঘোষণা দেয়। এর জবাবে বেইজিং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কূটনৈতিক সফর স্থগিত রাখে। গত অক্টোবরে চীন তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ইস্পাত কারখানাগুলোকে মৌখিকভাবে অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা কয়লার ব্যবহার দ্রুত বন্ধ করার আদেশ দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার চীন। অস্ট্রেলিয়ার মোট রফতানি বাণিজ্যের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সামগ্রীর ক্রেতা বেইজিং। ফলে অস্ট্রেলীয় পণ্য বর্জনের হুমকি প্রথমে চীনের অর্থনৈতিক জবরদস্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। দৃশ্যত এখন সে পথেই হাঁটছে বেইজিং।