২০২১ সালে বাড়তে পারে স্বর্ণের প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় গত বছর স্বর্ণের বাড়তি চাহিদা ছিল। রাশিয়া, তুরস্কসহ কয়েকটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এত বেশি স্বর্ণ কিনেছিল যে মূল্যবান ধাতুটির মূল্যবৃদ্ধিতে তা প্রভাব রেখেছিল। তবে নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে। চলতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা আর আগের মতো বাড়তি নেই। তবে আগের মতো অবস্থানে না গেলেও ২০২১ সাল নাগাদ মূল্যবান ধাতুটির এ প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা চলতি বছরের তুলনায় চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে। সিটি গ্রুপ ও এইচএসবিসির মতো বিশ্বখ্যাত কিছু প্রতিষ্ঠান এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। খবর কিটকো নিউজ ও ব্লুমবার্গ।
মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের গত মাসে প্রকাশিত এক নোটে বলা হয়েছে, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের চাহিদা ছিল যথাক্রমে ৬৫৬ ও ৬৬৭ টন। করোনা মহামারীর কারণে চলতি বছর শেষে মূল্যবান ধাতুটির প্রাতিষ্ঠানিক এ চাহিদা ৩৭৫ টনে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ২০২১ সালে স্বর্ণের এ প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা চলতি বছরের তুলনায় বেড়ে ৪৫০ টনে উন্নীত হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, করোনা মহামারীতে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ ক্রয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়েছে। চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে বড় পরিমাণে স্বর্ণ কিনছে না। এর প্রভাব পড়েছে মূল্যবান ধাতুটির প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদায়। তবে আগামী বছর নাগাদ পরিস্থিতি বদলাতে পারে।
এইচএসবিসি সিকিউরিটিজের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছর দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের সম্মিলিত চাহিদা কমে দাঁড়াতে পারে ৩৯০ টনে। তবে ২০২১ সালে মূল্যবান ধাতুটির প্রাতিষ্ঠানিক এ চাহিদা কিছুটা বেড়ে ৪০০ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির মূল্যবান ধাতুর বাজারবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক জেমস স্টিল বলেন, করোনাকালে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনার আগ্রহ সীমিত করেছে। আগামী বছর নাগাদ বাজারে ভ্যাকসিন এলে কিংবা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে স্বর্ণের প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা ফের বাড়তে শুরু করবে।
তবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের প্রতিবেদনে ভিন্ন কথা বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, চলতি বছর শেষে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা দাঁড়াতে পারে ৪১৭ টনে। আগামী বছর মূল্যবান ধাতুটির এ চাহিদা চলতি বছরের তুলনায় কমে ৪০০ টনে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, করোনাসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বৈশ্বিক অর্থনীতি আরো টালমাটাল পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। এসব কারণে আগামী দিনগুলোয় দ্রুত সুস্থির পরিবেশে ফিরতে পারবে না বিশ্ব্ব অর্থনীতি ও রাজনীতি, যা স্বর্ণের প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।