করোনা : কোন অবস্থায় বাংলাদেশ ?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ “সব মিলিয়ে আমরা একটা হতচ্ছাড়া অবস্থায় আছি। এভাবে চললে আমরা তো এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবই না, বরং দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণহীন সংক্রমণের দিকে যাব।” স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দৈনিক শনাক্ত রোগীর যে পরিসংখ্যান প্রতিদিন দিচ্ছে, তাতে সংক্রমণ কমে আসার একটি ধারণা মনে জাগলেও দৈনিক পরীার সংখ্যা কমে আসায় ওই পরিসংখ্যান প্রকৃত চিত্র দিচ্ছে কি না সেই সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের কারও কারও মধ্যে। যারা নিজে থেকে করোনাভাইরাস পরীা করাতে যাচ্ছেন, কেবল তাদের তথ্যই সরকারি খাতায় আসছে। যাদের উপসর্গ সেভাবে নেই, তারা হিসাবের বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। জনসংখ্যার অনুপাতে দেশের কোন এলাকায় কতটা ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস, সেই বিশ্লেষণও জানা যাচ্ছে না ওই পরিসংখ্যান থেকে। কাজেই পরীা বাড়িয়ে সঠিক চিত্র তুলে আনার ব্যবস্থা না হলে বাংলাদেশ ‘দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ চক্রে’ পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা ডা. বে-নজির আহমেদ।
তিনি বলেন, “প্রতিদিন যে প্রতিবেদনটা দিচ্ছে, সেখানে সংক্রমণের মাত্রাটা কমছে। কিন্তু মহামারীর প্রকৃত চিত্রটা আমরা পাচ্ছি না। কোথায় সংক্রমণ বাড়ছে, কোথায় কমছে- আমরা জানি না। আমরা অ্যান্টিবডি টেস্ট করছি না। অ্যান্টিবডি টেস্ট দিলে বিভিন্ন স্থানে সংক্রমণের অবস্থাটা দেখতে পাব।” বাংলাদেশে মহামারীর শুরু থেকে কেবল আরটি-পিসিআর পরীার মাধ্যমে করোনাভাইরাস শনাক্তের কাজ চলছে। এই পরীা ব্যয়বহুল এবং সময়সাপে, তবে ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত।
অন্যদিকে অ্যান্টিবডি পরীায় জানা যায়, কারও শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না। অর্থাৎ, যারা আক্রান্ত হলেও উপসর্গহীন (অ্যাসিম্পটোম্যাটিক) ছিলেন এবং সেরে উঠেছেন, তাদের অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব। আর তা করা গেলে জানা যাবে করোনাভাইরাস আসলে কতটা ছড়িয়েছে। বে-নজির আহমেদ বলেন, “আক্রান্তরা যাদের সংস্পর্শে গিয়েছিল, তাদের ট্রেসিং হচ্ছে না। ট্রেসিং এবং ট্রেসিং পরবর্তী টেস্ট করানো হচ্ছে না। ট্রেসিং করে যদি টেস্ট করতাম, তখন প্রকৃত সংখ্যাটা বলতে পারতাম। “ বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি অ্যান্টিজেন পরীার জন্য র‌্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহারের অনুমতি দিলেও অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন এখনও দেওয়া হয়নি। বে-নজির আহমেদ বলেন, “মহামারী হলে এটা করতে হয়। সব দেশেই করছে। কিন্তু আমাদের এখানে যারা টেস্ট করাতে চাচ্ছে, শুধু তাদেরই করা হচ্ছে। ৩০ শতাংশ লোক যদি উপসর্গহীন হয়, যদি তাদের ট্রেসিং না করি; তাহলে যে সংখ্যাটা আমরা পাচ্ছি, সেটা কিন্তু প্রকৃত চিত্র ফুটিয়ে তুলছে না।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত সময়ে দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজারের ঘরে। সেপ্টেম্বরে তা কমে এসে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজারের ঘরে থাকছে। এই সময়ে দেশে করোনাভাইরাস পরীার আরটি-পিসিআর ল্যাব বাড়লেও দৈনিক পরীার সংখ্যা কমেছে। জুনের শেষ আর জুলাইয়ের শুরুতে দৈনিক ১৭ থেকে ১৮ হাজার নমুনা পরীা করা হচ্ছিল, এখন তা ঘোরাফেরা করছে ১১ থেকে ১৫ হাজারের মধ্যে। সর্বশেষ যে তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিয়েছে তাতে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে চব্বিশ ঘণ্টায় আরও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ১২ হাজার ৯০০টি নমুনা পরীা করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১ হাজার ৫৪০ জনের শরীরে। দেশে গত মার্চের শুরুর দিকে কভিড-১৯ এর সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫ হাজার ৭২ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩৮৪ জন। এর মধ্যে নতুন করে ২ হাজার ১৩৯ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯২ জন। দেশের সবশেষ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সরকারি হিসাবে ‘প্রকৃত আক্রান্তের তুলনায় কম শনাক্তের তথ্য আসায়’ মানুষের মধ্যে ‘সতর্কতায় ঘাটতি’ তৈরি হচ্ছে এবং তাতে ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা বে-নজির।
তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য বিধিটা হল জনগণের বিষয়, আর সরকারের বিষয় হল ট্রেসিং, টেস্টিং, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন। এগুলো ঠিকমত করলে স্বাস্থ্যবিধিতে বিচ্যুতি ঘটলেও সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যাবে।” সেজন্য ‘যথাযথ ব্যবস্থাপনা’র ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “সবার পে সেলফ কোয়ারেন্টিন সম্ভব না। একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ, একদিন অফিসে না গেলে চাকরি থাকবে না, সে তখন ওষুধ খাবে, রোগটা লুকিয়ে রেখে চলাচল করবে, তাতে আরও বেশি ছড়াবে।” সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হলেও ‘ভুল অ্যাপ্রোচের’ কারণে ভাইরাসের বিস্তার ‘আসলে কমানো যাচ্ছে না’ বলে মন্তব্য করেন বে-নজির আহমেদ। “আমরা সংক্রমণ কমাতে পারিনি। কিন্তু মনে করছি, আমরা সংক্রমণ কমিয়েছি, আমরা ভাল করছি। এভাবে নিজেদের তি করছি। অন্য দেশগুলো এগোচ্ছে ভিন্নভাবে। আমরা দুই মাসে এটাকে শূন্যতে নামাতে পারলে একটা ব্যাপার ছিল। কিন্তু ৬ মাস পরও বাস্তবে একই রকম আছে। ফলে আমরা দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ চক্রের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি। শীতের আগে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, ভাল কিছু হবে না। মার্চের শুরুতে ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর ছয় মাস পেরিয়ে এসে বাংলাদেশ তাহলে এখন মহামারীর কোন পর্যায়ে আছে? সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বে-নজির আহমেদ বলেন, “সব মিলিয়ে আমরা একটা হতচ্ছাড়া অবস্থায় আছি। এভাবে চললে আমরা তো এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবই না, বরং দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণহীন সংক্রমণের দিকে যাব।” মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধির কথা যতই মুখে বলা হোক, মানুষ তা মানছে না খুব একটা
এদিকে ইউরোপ-আমেরিকার মত বাংলাদেশেও ইতোমধ্যে সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। খোদ সরকারপ্রধান আসন্ন শীত মওসুমে ভাইরাসের প্রকোপ আবার বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে সেজন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটিও গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে একই ধরনের আশঙ্কার কথা বলেছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডা. বে-নজির বলেন, “দেশে ফার্স্ট ওয়েভই এখনও শেষ হয়নি। ইউরোপের অনেক দেশ বা চীন তো দৈনিক শনাক্ত রোগী শূন্যতে নামিয়ে আনল। আমরা ছয় মাসেও এটা পারলাম না। আমরা এটাকে বলছি, ওয়েভ ইমপোজড। অর্থাৎ যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে যে ঢেউটা আছে, সেটার ওপর আরেকটা ঢেউ পড়বে। মানে আমরা নিচে নামব না।” মহামারী নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট পদপে নেওয়া না হলে দ্বিতীয় দফায় দীর্ঘ সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছেন করোনাভাইরাস সঙ্কটে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ সহায়তা দিয়ে আসা ডা. মুশতাক হোসেনও। তিনি বলেন, “আমরা যত বেশি শনাক্ত করব, তাদের আইসোলেশন করা ও কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে মহামারী নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে। কিন্তু এগুলো হচ্ছে না। এভাবে হাল ছেড়ে দিলে সংক্রমণটা আবার বাড়বে। যদি আমরা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না করি, তাহলে সেকেন্ড ওয়েভটা অনেক বড় হবে।” বিদেশে কীভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে, সে বিষয়টি তুলে ধরে কেমব্রিজের পিএইচডি ডিগ্রিধারী মুশতাক বলেন, “যারা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সম হয়েছে, তারা স্থানীয় সরকারকে কাজে লাগিয়েই তা করেছে। তারা ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করেছে। চীন নিয়ন্ত্রণ করতে পারল কমিউন সিস্টেমের মাধ্যমে, আমাদের জেলা পর্যায়েও সে মতা নাই।” এই সমতা হঠাৎ বাড়ানো যাবে না। তবে ডাক্তার নিয়োগ করে, বাজেট দিয়ে, স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে পরীা বাড়ানোর চেষ্টা করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। “এ বিষয়ে আসলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। আমরা যদি মনে করি, করোনাভাইরাস চলে যাক, আমরা আগের মত চলব, তাহলে সেটা অনেক বড় ভুল হবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাকের মতে, পর পর তিন সপ্তাহ যদি দৈনিক শনাক্তের হার পরীার সংখ্যার ৫ শতাংশের থাকে, আর দৈনিক পরীার সংখ্যা যদি ২০ হাজারের মত হয়, তাহলে বলা যেতে পারে যে বাংলাদেশে সংক্রমণ কমে আসছে। “এখনও প্রবাহটা পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না। যদি সংক্রমণের হার দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে কমতে থাকে, তাহলে একটা ট্রেন্ড বোঝা যাবে। জুন, জুলাই, অগাস্টে ২০ শতাংশের উপরে ছিল দৈনিক শনাক্তের হার। মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে শনাক্তের হারটা দিয়ে আমাদের সংক্রমণের অবস্থাটা কোন পর্যায়ে, সে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এটার সাথে অন্য দেশের তুলনা করলে হবে না। কারণ ভারতে শনাক্তের হার ৮-৯ শতাংশ, কিন্তু সেখানে করোনাভাইরাস এখন উঠতির দিকে।”
দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার সাথেও সংক্রমণের একটি সম্পর্ক আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেপ্টেম্বর থেকে শনাক্তের হারটা কম। যদি মৃত্যুর হারটা না কমে, তাহলে বলতে হবে সংক্রমণ খুব একটা কমেনি। মৃত্যুর সংখ্যাটা কিন্তু মোর রিলায়েবল। কিন্তু টেস্ট যদি বেশি না হয় বা মানুষ যদি টেস্ট করতে না আসে, তাহলে সংক্রমণের হারটা বোঝা যাবে না।” মহামারীর এই পর্যায়ে তাহলে বাংলাদেশের কী করা উচিৎ? মুশতাক হোসেনের পরামর্শ, সবার আগে দুটি বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। “প্রথমত সরকারের প থেকে আক্রান্তদের আইসোলেশন সেন্টারে নেওয়া ও তাদের সংস্পর্শে আসাদের কোয়ারেন্টিন করা। এজন্য আর্থ-সামাজিক সহায়তা দরকার হবে, না হলে মানুষ উৎসাহিত হবে না। দ্বিতীয়ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য তৃণমূল পর্যায়েও সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত সহায়তা দিতে হবে সরকারকে।” আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর অবশ্য মনে করেন, পরীার সংখ্যা বাড়লে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার আরও কমে আসবে। “আমরা যদি ১৩ হাজার টেস্ট করে ১২ শতাংশ সংক্রমণ পাই, তাহলে ৫০ হাজার টেস্ট করালে ৫ শতাংশের নিচে চলে আসবে। বাস্তবতা হল, আমাদের সংক্রমণ কমে এসেছে।” তবে মহামারী ‘কমে আসছে’ বলার মত পরিস্থিতি এখনো আসেনি বলেই মনে করেন আলমগীর। “এখন যেটা কমছে, যদি আরও সপ্তাহ দু-এক কমার প্রবণতা থাকে, তাহলে হয়ত একটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে। কিন্তু মহামারী থাকবেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে হলে সেটাকে ‘টলারেবল রিলিফ’ বলা হবে। সেটার জন্য আমাদের অপো করতে হবে।” সরকার পরীার সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে জানিয়ে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, “অ্যান্টিজেন পরীা শুরু হলে যেসব জায়গায় পিসিআর এখনও পৌঁছেনি বা দেরি হচ্ছে রেজাল্ট দিতে, সেসব এলাকায় টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো যাবে। তবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।”
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আক্রান্তদের একটি অংশের উপসর্গ থাকে না। যুক্তির খাতিরে যদি ধরাও হয় যে দেশের ১০ বা ১২ শতাংশ মানুষ এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে, তারপরও ৯০ শতাংশ মানুষ সংক্রমণের বাইরে রয়েছে। ফলে যে কোনো সময় যে কেউ সংক্রমিত হতে পারে যদি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলে। নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় ইউরোপের কয়েকটি দেশ আবার বিধিনিষেধের মাত্রা বাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাদের কঠোরভাবে কোয়ারেন্টিন মানার তাগিদ দিয়েছে। বাংলাদেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপের শঙ্কা কতটা- সেই প্রশ্নে এএসএম আলমগীর বলেন, “সেকেন্ড ওয়েভ যে হবেই সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। এটা এড়াতে চাইলে প্রয়োজন সর্বোচ্চ সতর্কতা। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানি, তবে যে কোনো সময়ে সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যেহেতু কোনো ভ্যাকসিন নেই, তাই সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে। মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার বিকল্প নেই।” তবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার বাইরে লকডাউনের মত কড়াকড়ি আরোপের কথা আপাতত ভাবছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, “যেহেতু হারটা এখন কমের দিকে, আর জীবিকা নিয়েই মানুষ বেশি চিন্তিত, সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে যে সচেতনতার বার্তা আছে, সেটা চলবে। কিন্তু আইনগতভাবে কড়াকড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা এখন নাই।”