প্রবাসীদের ফিরে যাবার পথ সুগম করুন

0

করোনাভাইরাসজনিত কারণে উদ্ভূত বিরূপ বিশ্বপরিস্থিতির ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছে। সৌদিপ্রবাসী কর্মীরা দীর্ঘ ছুটিতে দেশে ফিরে আসেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এমন কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। নির্ধারিত সময়ে ফিরতে না পারলে চাকরি হারাতে হবে। নতুন করে ভিসা ও ইকামা করতে হবে। তাতে খরচ হয়ে যাবে অনেক টাকা। তার পরও সবাই ভিসা পাবেন এমন নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় উড়োজাহাজের টিকিট না পেয়ে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছা নিয়ে মহাসংকটে পড়েছেন সৌদিপ্রবাসীরা। আবার অনেকের রিটার্ন টিকিট আছে, তবু তাঁদের টিকিট রি-ইস্যুর জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সৌদি আরবে কাজে ফিরতে প্রবাসীদের জন্য ঢাকা থেকে শুধু সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের দুটি ফাইট চলছে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফাইট পরিচালনার অনুমতি দিচ্ছে না সৌদি আরব। আগামী ১ অক্টোবরের আগে বিমানের ফাইট চালুর সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে। উড়োজাহাজের টিকিট পেতে কয়েক দিন ধরে রাজধানীর সড়কে বিােভ করছেন কর্মীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছুটিতে এসে দেশে আটকে পড়া কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে সৌদি আরবকে অনুরোধ জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ, তাতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।
করোনার কারণে বন্ধ হওয়া বিমান চলাচল এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। সৌদি এয়ারলাইনস দুটি ফাইট পরিচালনা করলেও স্বাস্থ্যবিধির বাধ্যবাধকতায় ছয় শতাধিক আসনের এসব ফাইটে সর্বোচ্চ ২৬০ জন যাত্রী পরিবহনের সুযোগ রয়েছে। সৌদি এয়ারলাইনসের চলমান দুটি ফাইটে প্রতিদিন ৫২০ জন যাত্রী সৌদি আরবে ফিরলেও ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আটকে পড়াদের ৫ শতাংশও ফিরতে পারবে না। সৌদি এয়ারলাইনস আবেদন করলে ফাইটের সংখ্যা বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হবে। তারা এখনো আবেদনই করেনি বলে জানা গেছে। বিমান আটটি ফাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে বিমানকে সৌদি কর্তৃপ এখনো অবতরণের অনুমতি দেয়নি। আমাদের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের ধাক্কা লাগতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয়ের (রেমিট্যান্স) একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্য ক্রমেই গুটিয়ে আসছে। নতুন বাজার সৃষ্টিতে সাফল্য নেই। অন্যদিকে পুরনো অনেক শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন শ্রমবাজারে দেখা যাচ্ছে না আশার আলো। এ অবস্থায় সৌদিপ্রবাসী কর্মীরা সেখানে কাজ ফিরে না পেলে বাংলাদেশকে বিপুল তির সম্মুখীন হতে হবে। প্রবাসীদের কর্মেেত্র ফিরে যাওয়ার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। সংশ্লিষ্ট অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। জোর কূটনৈতিক তৎপরতায় সব সংকট দূর করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।