যশোর ইনস্টিটিউটের কোনো সম্পত্তি নেই খবরে আলোচনা ঝড় ॥ সম্পত্তি ফিরে পেতে দফায় দফায় আলোচনা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সম্পত্তি ফিরে পেতে এবং খাস খতিয়ান থেকে প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পত্তি ফেরত নিতে তৎপর হয়েছে যশোর ইনস্টিটিউট পরিচালনা পর্ষদ। গতকাল দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকায় ‘কোনো সম্পত্তি নেই যশোর ইনস্টিটিউটের কীভাবে খাস হলো জানেন না কর্মকর্তারা’ শিরোনামে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে এমন হতবাক করা একটি খবর প্রকাশিত হওয়ায় গতকাল শহরে সংবাদটি নিয়ে সুধিমহল, সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং দীর্ঘদিন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ সংবাদটির অংশ বিশেষ উল্লেখ করলে সেখানেও লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের বিষয়টি ঘটে। এতে অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন, অনেকে হতাশ হয়েছেন এবং অনেকে সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয় অর্থাৎ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ এবং খাস হওয়ার সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের উপর নাখোশ ভাব প্রকাশ করে তাদের উদাসীনতাকে দায়ি করেছেন। তবে বেশিরভাগ পাঠক লোকসমাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দীর্ঘ দেড়শ বছরের পুরাতন ঐতিহ্য ধূলায় মিশে যেতে পারেনা মর্মে মন্তব্য করে কেউ কেউ দাবি করেছেন, কর্মকর্তারা ভোট আর চেয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে এমনটি ঘটেছে। সূত্র মতে এমন খবরে অবশ্য কেউ কেউ খুশি হয়েছেন। তাদের মতে কর্মকর্তাদের এবার টনক নড়বে। প্রতিষ্ঠানের হিতাকাঙ্খী অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই সুযোগে কোনো দুর্বৃত্ত বা সুযোগ সন্ধানী প্রভাবশালী মহল এই বিশাল সাম্রাজ্য গ্রাস করার ধান্দায় মেতে না ওঠে। তবে একাধিক সূত্রমতে বেশরিভাগ মানুষের বিশ্বাস ব্রিটিশ আমল থেকে যে প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে দেশে বিদেশে, সুনাম ছড়িয়েছে এবং খোদ জেলা প্রশাসক যার সভাপতি সে সম্পত্তি আর যাই হোক ইনস্টিটিউটের হাতছাড়া হবে না। এদিকে গতকাল লোকসমাজ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পত্রিকার চাহিদা বেড়ে যায় এবং অনেকেই দেখা গেছে পত্রিকার এজেন্ট অফিস বা হকারের কাছে পত্রিকা কিনতে চেয়ে ফিরে এসেছেন না পেয়ে। তাছাড়া খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর লোকসমাজ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক ও প্রতিবেদককে ফোনে বা ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এদিকে ইনস্টিটিউটের একাধিক সূত্র মতে, গতকাল বর্তমান কার্যনির্বাহী পর্ষদের অনেকেই পরবর্তী করণীয়, সম্পত্তি রক্ষায় তাদের উদ্যোগ গ্রহণ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা অব্যাহত রাখেন। তারা গতরাতে সীমিত পরিসরে পরবর্তী করণীয় নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি শনিবার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক তার প্যানেল নিয়ে আলোচনায় বসে কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন। সূত্র মতে, ইতোমধ্যে সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। গতরাতেই জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের সাথেও আলাপ করার কথা ছিল। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য যশোরে এলে একটি মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সে মিটিংয়ে বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাসহ সমাজের বেশকিছু সুধিজনকেও আমন্ত্রণ করা হবে বলে সূত্রে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া রবিরারে ইনস্টিটিউট কার্যনির্বাহী পরিষদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করা হতে পারে। তবে অন্য একটি সূত্রের দাবি, প্রয়োজনীয় পেপারস্ প্রস্তুত করতে ইসস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ আইনজীবির সাথে শলাপরামর্শ করেছেন। তারা আরো প্রস্তুতি গ্রহণ করার পর সাংবাদিক, সুধিমহল এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সাথেও মতবিনিময় করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, ইনস্টিটিউট যাতে তার নিজ মহিমায় ফিরে আসে, এর সম্পত্তি যেন বেদখল না হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ুণœ না হয় সে জন্য যা যা করার দরকার তা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, এমপি শাহীন চাকলাদার, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষসহ সকলের কাছেই যাওয়া হবে। চেষ্টার কোনদিকই বাদ থাকবে না।