শিক্ষক রাসেলের খুনিদের ধরতে হবে

0

মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদকের বিরুদ্ধে ঘটা করে অভিযান হচ্ছে, আগে এমন অভিযানের প্রয়োজন পড়ত না, যদিও মাদক আগেও সেবন করা হতো। তখন সামাজিক নজরদারিতেই কাজ হতো, আর মাদকের এত সব রকমফের ছিল না। মাদক কারবারিদের এত বাড়বাড়ন্তও ছিল না। গত তিন দশকে এ দেশে মাদকের েেত্র বিপুল পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। দেশে অবৈধ মাদক বানের জলের মতো ঢুকেছে। হেরোইন, কোকেন এলো, কিছুদিন পর ফেনসিডিল এলো, শেষ পর্যন্ত ইয়াবা এলো। বাজার এখন ইয়াবায় সয়লাব। আর মাদক কারবারিরা হয়ে উঠল সর্বেসর্বা। অভিযান হয়, কিন্তু কারবার বন্ধ হয় না। তারা এতটাই প্রতাপশালী হয়েছে যে যাকে-তাকে শায়েস্তা করতে পারে।
মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন রাসেল রানা। পেশায় তিনি শিক ছিলেন। তিনি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। অবস্থা এমন হলো যে গ্রামে মাদকবিরোধী পুলিশের অভিযান হলে রাসেলই তথ্য দিয়েছেন বলে সন্দেহ করত মাদক কারবারিরা। তাঁকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত। কারবারিরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। জনাকীর্ণ বাজারের একটি চায়ের দোকান থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তারা। প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর গত রবিবার সকালে বাড়ির পাশে খালের পারে তাঁর মরদেহ দেখতে পায় প্রতিবেশীরা। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংদিঘী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশকে তথ্য দেওয়ার সন্দেহে মাদক কারবারিরা তাঁকে তুলে নিয়ে রাতভর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে ফেলে গেছে। তাঁকে মারধরের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
মাদকের অশুভ চক্র, ব্যবসা বন্ধ হোক। মাদক বিক্রেতারাই এখন সমাজপতি হয়ে উঠেছে। কেন নতুন নতুন মাদকের চালান আসে তা-ও দেখা দরকার। মাদকবিষয়ক নীতিমালাও পর্যালোচনা করা দরকার। না হলে একদিকে মাদকবিরোধী বুলি শুনতে হবে, অন্যদিকে মাদকের চালান আসতেই থাকবে। আর তার জেরে কোথাও না কোথাও রাসেলরা মারা পড়বেন। আমরা আশা করবো, পুলিশ রাসেলের খুনিদের গ্রেফতারে কোন অবহেলা করবে না। তারা মনে রাখবে রাসেল মাদকবিরোধী অভিযানে তাদের সঙ্গী ছিল।