বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

0

আজ ১ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। যে দলের অনুসারীরা হবেন বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, ধর্মীয় মূল্যবোধের ধারক ও বাহক এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত সৎ ব্যক্তিত্ব ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারণায় অনুপ্রাণিত। সেই দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি।) শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিজে এসব গুণের অধিকারী ছিলেন। নিজ দল গঠনের সাথে সাথে তিনি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ১৯ দফার একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
জিয়াউর রহমানের বিএনপি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে শুরু হয় উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি। রাজনীতিতে আসার আগেও এই মহান নেতার একটি ঘটনাবহুল জীবন ছিল। সৈনিক জীবন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা সব েেত্রই তাঁর একটি সমুজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে, যা জাতি কোনদিন ভুলতে পারবে না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্ত্রী, সন্তানসহ নিহত হবার পর দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটে। তখন শেখ মুজিবের ডান হাত খ্যাত খন্দকার মোস্তাকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষমতায় গ্রহণ করেন। পরে তাদের ব্যর্থতায় জাতি চরম সংকটে পতিতহয়। ঠিক সেই মুহূর্তে অভ্যুত্থানর পক্ষে বিপক্ষে ক্ষমতা দখল পাল্টা দখলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে। এ সময় ৩ নভেম্বর স্বপরিবারে জিয়াকে বন্দি করে ক্ষমতা দখলকারীরা । পরে সিপাহী জনতা ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে ক্যান্টনমেন্টের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশের রাষ্ট্র মতায় নিয়ে আসে সেদিন দেশের সমস্ত বাহিনী ও জনগণ জিয়াকেই স্বাগত জানান। এভাবেই স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া জাতির ত্রাণ কর্তায় পরিণত হয়। তিনি শুরুতেতেইদেশে আওয়ামী লীগের গড়া একদলীয় বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন। ১৯৭৮ সালের এই দিনে তিনি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র ছাড়াও এনে দেন আমাদের জাতিসত্তার স্বতন্ত্র পরিচয় শুরু হয় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের যাত্রা। স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে তিনি যে ১৯ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন। সেই উন্নয়ন, উৎপাদন ও গণতান্ত্রিক আদর্শ লালন করেই দেশ প্রথম স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যায়। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর জনগণের সমর্থনে দলটি পর পর দু’বার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মতায় আসীন হয়। এরমাঝে ১৯৮১ সালের ৩০ মে দেশী-বিদেশী চক্রান্তে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। জিয়ার শাহাদৎবরণের পর দলের বর্তমান চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এক যুগসন্ধিণে দলের দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে তিনি আন্দোলন করে আপসহীন নেত্রী উপাধি পান। তার নেতৃত্বে বিএনপি তিনবার মতায় আসীন হয়। বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিএনপি আজ তাদের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। এ সময় বেগম জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি এবং তাঁর পুত্র দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান বিদেশে চিকিৎসাধীন। বিএনপি আজ তাই বেগম জিয়ার মুক্তি, সুচিকিৎসা ও তারেক রহমানের সাজা বাতিলে সোচ্চার হয়ে দিবসটি পালন করবে। তবে প্রশাসন অতীতের মতো এবারও বাধ্য হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই সরকার বা প্রশাসন সে পথে ন থাক। তারা একটি জনসমর্থিত বৈধ রাজনৈতিক দলের জন্মদিন পালনে সহায় ভূমিকা রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক।