জিডিএল হাসপাতালে প্রতারক চক্রের ফাঁদে অসহায় করোনা রোগীরা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে বেসরকারি জিডিএল হাসপাতালে করোনা রোগীদের নিয়ে চলছে তোঘলকি কারবার। সেখানে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অতিরিক্ত টাকা আয় করার ফাঁদ পেতেছে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট একটি চক্র। এ চক্রের ফাঁদে পড়ে ভর্তি রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সূত্র জানিয়েছে, ডেডিকেটেড হাসপাতালে (জিডিএল) চিকিৎসাধা নিতে এসে করোনায় আক্রান্ত অসহায় রোগীরা প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ছেন। চিকিৎসক-সেবিকাদের কাছে সেবা মিললেও মিলছে না অন্যান্য সুবিধা। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। রক্ত জমাট বেঁধে গেলে এ ঘনত্ব নির্ণয়ের জন্য তাদের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় দেয়া হয় ডি-ডাইমার টেস্ট। রক্তের অন্যান্য পরীক্ষায় দেয়া হয় সিবিসি, বুকের এক্স-রে, মাথার সিটি স্ক্যান ইত্যাদি। কিন্তু এসব উপসর্গ পরীক্ষায় রোগীরা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। সিটিস্ক্যান যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে করানো হলেও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয় জিডিএলও বাইরে থেকে। পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ থাকলেও সেখানে নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি টাকা। ফার্মেসি থেকে ওষুধ ক্রয় করে দেয়ার ক্ষেত্রেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মূল্য নেয়া হয় দেড় গুণেরও বেশি। যা একজন অসহায় রোগীর জন্য ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ কোভিড-১৯ রোগীরা সাধারণত অন্যান্য রোগীদেরও মতো বাইরে বের হতে পারে না। হাসপাতালের কর্মচারী কিংবা সেখানে থাকা বয়দের দিয়ে রোগীরা বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ খাবার জিনিসপত্র ক্রয় করে থাকেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা হাতিয়ে নেয় অতিরিক্ত মূল্য। ডি-ডাইমার টেস্ট পরীক্ষার মূল্য ১ হাজার ২শ’ টাকা। হাসপাতালের লোকজন ওই পরীক্ষা বাইরের হাসপাতালে ৯শ’ টাকায় করায়। আর রোগীদের কাছ থেকে আদায় করে ২ হাজার টাকা। সম্প্রতি জিডিএল-এ যশোর ইবনেসিনা হাসপাতাল থেকে নির্ধারিত মূল্যে ডি-ডাইমার পরীক্ষা করে ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা দেয়া হয়। এরপর রোগীর নিকট থেকে আদায় করা হয়েছে ২ হজার টাকা। জিডিএল হাসপাতাল থেকে রোগীর ২ হাজার টাকা নেয়ার বিল দেয়া হয়েছে। শুধু ডি-ডাইমার পরীক্ষা না। ওষুধ এজিথ্রো মাইসিন, স্যালাইন, ওষুধ প্যারাসিটামলসহ কয়েক প্রকারের ওষুধ দেয়া হচ্ছে সরকারিভাবে হাসপাতাল থেকে। বাকি মূল্যবান অন্যান্য ওষুধ রোগীদের কিনতে হচ্ছে বাইরের ফার্মেসি থেকে। এসব ওষুধ ক্রয় করে এনে দেয়ার সময় চড়া মূল্য নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে। এসবের সাথে যুক্ত রয়েছে জিডিএল হাসপাতালের ম্যানেজারসহ মালিক পক্ষের লোকজন। তাদের সহযোগিতায় এ ডেডিকেটেড হাসপাতাল চত্বরে একটি প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। এ চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে কোভিড-১৯ রোগীরা বাড়তি টাকা দিয়ে আর্থিককভাবে চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত যশোর জেলা কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। জিডিএল হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. পলাশ কুমার বলেন, এ রকম অভিযোগ তার কাছে আসেনি। প্রমাণ পেলে জিডিএল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।