গম :২০১৯ সালের শীর্ষ আমদানিকারক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥মানবদেহের বিকাশে কার্বোহাইড্রেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস গম। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি প্রতিদিন গম ও গম থেকে তৈরি বিভিন্ন খাবার খায়। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত কৃষিপণ্যের তালিকায় গম রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। কৃষিপণ্যটির উৎপাদন ও রফতানিতে এগিয়ে রয়েছে এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি গম আমদানি করে আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলো। গত বছর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে গমের শীর্ষ উৎপাদনকারী, রফতানি ও আমদানিকারক দেশ এবং অঞ্চল নিয়ে এবারের ধারাবাহিক আয়োজন—
বাংলাদেশ
২০১৯ সালে গম আমদানিকারক দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। বিদায়ী বছরে দেশে সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ টন গম আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বেশি গম আমদানির রেকর্ড। এর আগের বছর দেশে সব মিলিয়ে ৫১ লাখ টন গম আমদানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ২১ দশমিক ২০ শতাংশ কম। টানা ছয় বছর পর ২০১৮ সালে দেশের গম আমদানি খাত মন্দার মুখ দেখেছিল। তবে বছর ঘুরতেই ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছে কৃষিপণ্যটির রফতানি।
আলজেরিয়া
টানা তিন বছর ধরে মন্দার মুখে রয়েছে আলজেরিয়ার গম রফতানি খাত। ২০১৬ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৮৪ লাখ ১৪ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল। এরপর থেকে কমতে কমতে ২০১৮ সালে দেশটিতে কৃষিপণ্যটির আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৭৫ লাখ ১৫ হাজার টনে। গত বছর আলজেরিয়ার আমদানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সব মিলিয়ে ৬৫ লাখ টন গম আমদানি করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ কম। এর মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালে দেশটি বৈশ্বিক গম আমদানিকারকদের শীর্ষ তালিকায় সপ্তম অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
জাপান
টানা তিন বছরের মন্দা ভাবের ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে জাপানে সব মিলিয়ে ৫৬ লাখ টন গম আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ কম। এর মধ্য দিয়ে দেশটি বৈশ্বিক গম আমদানিকারকদের শীর্ষ তালিকায় অষ্টম অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে। এর আগের বছর দেশটিতে মোট ৫৭ লাখ ২৬ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম। জাপানের ইতিহাসে ২০১২ সালে সবচেয়ে বেশি গম আমদানির রেকর্ড হয়েছিল। ওই বছর দেশটিতে সব মিলিয়ে ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল।
মরক্কো
গত বছর বিশ্বের নবম শীর্ষ গম আমদানিকারক দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে মরক্কো। বছরজুড়ে দেশটি সব মিলিয়ে ৫১ লাখ টন গম আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় রেকর্ড ৩৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালে দেশটিতে আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়ে সব মিলিয়ে ৩৭ লাখ ২৪ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে মরক্কোর গম আমদানি খাতে টানা দুই বছর চাঙ্গা ভাব বজায় রইল। এর আগে ২০১৬ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গম আমদানি হয়েছিল। ওই বছর মরক্কোর আমদানিকারকরা সব মিলিয়ে ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার টন গম আমদানি করেছিলেন, যা আগের বছরের তুলনায় ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।
চীন
বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ হলেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেশি থাকায় প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গম আমদানি করে চীন। গত বছর কৃষিপণ্যটির শীর্ষ আমদানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় দশম অবস্থানে ছিল দেশটি। বছরজুড়ে চীনা আমদানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সব মিলিয়ে ৪৫ লাখ টন গম আমদানি করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এর আগের বছর দেশটিতে ২০ দশমিক ১২ শতাংশ কমে সব মিলিয়ে ৩১ লাখ ১৮ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল। চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গম আমদানির রেকর্ড হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওই বছর দেশটিতে সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ ৭৩ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল।