ব্রেন্ট ক্রুডের গড় ব্যারেল দাঁড়াতে পারে ৪০ ডলারে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য ফিরতে শুরু করেছে। নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের উন্নতি ও পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ ও এর মিত্র দেশগুলোর (ওপেক প্লাস) সম্মিলিত উত্তোলন হ্রাস এর পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে। এর জের ধরে চলতি বছর পণ্যটির গড় মূল্য পূর্বাভাসে সংশোধন এনেছে বিভিন্ন খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ক্রুডের গড় মূল্য পূর্বাভাস বাড়িয়ে ব্যারেলপ্রতি ৪০ ডলারে উন্নীত করেছে মরগান স্ট্যানলি। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইসডটকম।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও অর্থ সেবা প্রদানকারী কোম্পানি মরগান স্ট্যানলির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ৩৫ ডলার। প্রতিষ্ঠানটির আগের পূর্বাভাসে যা ছিল ৩০ ডলার। এরপর বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) জ্বালানি পণ্যটির দামের পূর্বাভাস আরো বাড়িয়ে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৪০ ডলারে উন্নীত করেছে প্রতিষ্ঠানটি, আগের পূর্বাভাসে যা ছিল ৩৫ ডলার।
মরগান স্ট্যানলির এক নোটে বলা হয়েছে, প্রত্যাশার তুলনায় বেশ দ্রুতগতিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে ভারসাম্য ফিরতে শুরু করেছে। মহামারীতে ধসে যাওয়া পণ্যটির চাহিদা এরই মধ্যে ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। এদিকে ওপেক প্লাস জোট পণ্যটির রেকর্ড উত্তোলন হ্রাসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী মাস থেকে বাজারে পণ্যটির উদ্বৃত্ত সরবরাহ কমে আসতে পারে। ফলে পণ্যটির চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য ফিরে মূল্যবৃদ্ধির জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্যাংকটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, বিশ্বের অনেক দেশে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। এসব দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিকে ফিরছে। গত মে মাসে জ্বালানি তেলের শীর্ষ ভোক্তা দেশ চীন ইতিহাসের সর্বোচ্চ আমদানির রেকর্ড করেছে। অন্যান্য দেশেও পণ্যটির চাহিদা বাড়ছে। এতে চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা বেড়ে দৈনিক গড়ে ৯ কোটি ৭০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হতে পারে। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকের তুলনায় বাড়লেও গত বছরের তুলনায় পণ্যটির চাহিদা এখনো দৈনিক গড়ে ৪০ লাখ ব্যারেল কম রয়েছে।
এদিকে ওপেক ও ননওপেকের সদস্য দেশগুলো জ্বালানি হ্রাসসংক্রান্ত বিদ্যমান চুক্তিটির মেয়াদ চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত বাড়াতে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে চলতি বছরের শেষ প্রান্তিক ও আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) পণ্যটির বৈশ্বিক সরবরাহ দৈনিক গড়ে ৪০ লাখ থেকে ৬০ লাখ ব্যারেল কমে আসতে পারে। এ পরিস্থিতি জ্বালানিটির দাম বাড়াতে প্রভাব ফেলতে পারে।
নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর জেরে চলতি বছরের শুরুতে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদায় হঠাৎ খাড়া পতন দেখা দেয়। এতে পণ্যটির দাম কমে ব্যারেলপ্রতি শূন্য ডলারের নিচে নেমে যায়। এ পরিস্থিতিতে বাজারে ভারসাম্য ফেরাতে ওপেকভুক্ত দেশ, রাশিয়া ও অন্য সহযোগী দেশগুলো মে ও জুনজুড়ে জ্বালানিটির উত্তোলন দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পণ্যটির মোট বৈশ্বিক সরবরাহের ১০ শতাংশ। সম্প্রতি চুক্তিটির মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়েছে জোটটি।