বাগেরহাটে চিংড়ির রোগ নির্ণয়ে ভ্রাম্যমাণ মৎস্য ক্লিনিক

0

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট ॥ করোনা পরিস্থিতি ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে তিগ্রস্তসহ সকল মৎস্য ঘেরে চিংড়ি মাছের রোগ নির্ণয় ও চাষিদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের জন্য বাগেরহাটে ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিক চালু হয়েছে। বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগ ও পরিচালনায় এই কিনিক চালু করা হয়।
শনিবার সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুর গ্রামের মিজানুর রহমান ও হারিদুল ইসলামের মৎস্য ঘেরে গিয়ে পানির গুনাগুন ও মাছের স্বাস্থ্য পরীার মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। এ সময় ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিককের টিম লিডার উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ এম রাকিবুল ইসলাম, সাবরিনা খাতুন, শরিফুল ইসলাম, মোলা এনএস মামুন সিদ্দিকিসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রতিষ্ঠানের চত্বরে বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএফ এম শফিকুজ্জোহা ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। করোনা পরিস্থিতি ও আম্পান পরবর্তী এই সময়ে যেসব চাষি গবেষণা কেন্দ্রে আসতে পারবেন না, তারা নিজের খামারে বসে সেবা নিতে পারবেন। যারা সেবা পেতে আগ্রহী তারা ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিকের নির্দিষ্ট নাম্বারে কল দিবেন। সমস্যা জানালে ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিকের সদস্যরা চাষির ঘেরে চলে যাবেন। ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিকের সাথে যোগাযোগের নাম্বার ০১৭১৫-১৪৪৫০৭, ০১৭১১-৪৫০৫০০, ০১৬১৭-৮৯০৫৭১।
এদিকে দীর্ঘদিন পরে হলেও বাগেরহাটে ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিক চালু হওয়ায় খুশি হয়েছেন চিংড়ি চাষি ও সংশিষ্টরা। চিংড়ি চাষি মিজানুর রহমান ও হারিদুল ইসলাম বলেন, মাছ চাষই আমাদের জীবিকার প্রধান উৎস্য। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে মাছের রোগ লেগেই আছে। যার ফলে আমরা একটু শঙ্কায় থাকতাম। মাছের রোগ হলে উপজেলা সদর এবং অনেক সময় জেলা সদরেও যেতে হত। যাতে টাকা ও সময় দুটোই নষ্ট হত। এছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র বা উপজেলা ও জেলা মৎস্য অফিসে যাওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ। বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিক চালু হওয়ায় আমরা আশার আলো দেখছি। ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিকের গাড়িতে মৎস্য বিজ্ঞানীরা আমাদের ঘেরে আসলেন। পানির গুনাগুন ও মাছের স্বাস্থ্য পরীা করলেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিলেন। আমাদের খুব ভাল লেগেছে। সারা বছর ধরে এ ধরনের কর্মসূচি চলমান থাকলে চাষিরা উপকৃত হবে।
ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিকের টিম লিডার উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ এম রাকিবুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও আম্পান পরবর্তী এই সময়ে অনেকে বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না। তাই প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হন। এই মুহূর্তে চাষিদের যেসব সেবা প্রয়োজন আমরা সেসব সেবা দিচ্ছি। যে চাষি বাড়ি বসে সেবা পেতে আগ্রহী তারা যদি আমাদের নাম্বারে ফোন দেন, তাহলে আমরা তার ঘেরে চলে যাব এবং প্রয়োজনীয় সেবা ও পরামর্শ দিব।
বাগেরহাট চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রে চিংড়ির রোগ নির্ণয় ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিক চালু করেছে, আমরা তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তবে এ্ই উদ্যোগ আরও আগে নিয়ে বাগেরহাট মৎস্য চাষিরা আরও উপকার পেত। তারপরও আমাদের দাবি থাকবে যাতে তাদের এই সেবা অব্যাহত থাকে।
বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকরতা ড. এএফ এম শফিকুজ্জোহা বলেন, মুজিববর্ষ উপলে আমরা চাষিদের দোর গোড়ায় সেবা পৌছে দিতে ভ্রাম্যমাণ মৎস্য কিনিক চালু করেছি।