বাগআঁচড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

0

আজিজুল ইসলাম, বাগআঁচড়া (যশোর) ॥ যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সময়মত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ওই চাল বিতরণ না করে গুদামে মজুদ রাখায় গত ২৭ মে বুধবার স্থানীয় জনতা ৬০ বস্তা চালসহ মেম্বার আসাদুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরীর কাছে মাফ চেয়ে এ যাত্রা রেহাই পান তিনি। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ভোক্তাদের মাঝে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল বিতরণ করেন ওই মেম্বার। বাগআঁচড়া খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান জানান, গত ১৭ মে ৬৮০ জন উপকারভোগীর জন্য ২০ হাজার ৪০০ কেজি চাল উত্তোলন করেন মেম্বার আসাদুল ইসলাম। ঈদের আগে চাল বিতরণ না করে ১০ দিন পর বুধবার সকাল ছয়টার দিকে দোকান থেকে চাল সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তাকে ৬০ বস্তা চালসহ অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী, চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কবির বকুল, বাগআঁচড়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ রায় ও ট্যাগ অফিসার সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী লোকসমাজকে জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল সরিয়ে ফেলা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান, দেখেন সেখানে ভোক্তারা চাল নেয়ার অপোয় রয়েছেন। তবে চালগুলো ঈদের আগে বিতরণের কথা ছিলো। ঈদের আগে চালগুলো বিতরণ করা হয়নি, এটা কি অপরাধ নয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই অপরাধ। চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কবীর বকুল এ বিষয়ে বলেন, ‘কি বলবো তাকে নিষেধ করলেও সে শোনে না।’ ট্যাগ অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কার্ডধারী জানেন না, যে তাদের নামে কার্ড আছে। অথচ তাদের চালগুলো নিয়মিত উঠানো হচ্ছে। এমন কি একই পরিবারের সকলের নামে চালের কার্ড করা হয়েছে। এধরনের ঘটনা তদন্তে ধরা পড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি নিজে থেকে ভোক্তাদের মাঝে বুধবার সারাদিন চাল বিতরণ করেছি। তবে অনিয়ম হয়েছে।’ তদন্তে তালিকার ৫৭২ নম্বর কার্ডধারী মফিজউদ্দীন, ৫৭৩ নম্বর কার্ডধারী সাঈদ, ৫৭৮ নম্বর কার্ডধারী ইউসুফ আলী, ৭২৬ নম্বর কার্ডধারী হাছিনা খাতুনের স্বামী মুকুল হোসেন, আবু মুছার ছেলে ইয়াসিন আলী জানান, ১০ টাকার চালের কার্ডে তাদের নাম থাকলেও তারা আজ চার বছর যাবত কোন চাল পাননি। এমনকি তারা জানতেনও না যে ওই তালিকায় তাদের নাম আছে। ভুক্তভোগী অনেকে জানিয়েছেন যে, তারা কার্ড পাননি। অথচ একই পরিবারের স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, ছেলে-মেয়েসহ ৪ জন, ৫ জন, ৭ জন, ৮ জনের নামে কার্ড করে সে চালগুলো উঠিয়ে মেম্বার আসাদুল ইসলাম অনেকদিন ধরে আত্মসাত করছেন। স্থানীয়রা জানান, চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা মিললেও ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ায় জনমনে ােভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত মেম্বার আসাদুল ইসলামের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার ০১৭১৭-০১০৪৯১ নম্বর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।