বন্ধ হয়নি কোচিং

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে যশোরে চলছে কোচিং বাণিজ্য। রোববার থেকে শুরু হওয়া এইচ এস সি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুন্দরভাবে পরীক্ষা সম্পন্নের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন নির্দেশনা প্রদান করলেও যশোরের কোচিং সেন্টারগুলো সেটিকে উপেক্ষা করে দেদারছে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৫ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এ নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী গেল ২৯ জুন (শনিবার) থেকে আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত ৪৪ দিন মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
যশোর শহরের জজ কোর্ট মোড়স্থ একটি বহুতল ভবনে মেধা বিকাশ, প্যারাডাইস স্পেশাল ব্যাচ, ইউনিক একাডেমি কেয়ার, ম্যাক্স, ডিফেন্স কেয়ার, মোমিনুর স্পেশালসহ আকর্ষণীয় নামের একাধিক কোচিং ব্যবসার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভবনের সামনে মাসুম স্পেশাল ব্যাচ এবং পাশের গলিতে দীন স্যার পরিচালিত মানবিক বিভাগের সেরা কোচিং এক্সপার্টসহ বিভিন্ন নামের কোচিং ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গতকল রোববার বিকেল ৪ টার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত এই প্রতিবেদক সেখানে অবস্থান করেন। আড়াই ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে দেখা যায় ব্যাচ অনুযায়ী কোচিং কার্যক্রম শেষ করে একের পর এক শিক্ষার্থী বের হয়ে আসছে।
এসময় মো. নওশাদ তাজ নামের কালেক্টরেট স্কুলের এক শিক্ষার্থীর সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। ওই শিক্ষার্থী জানায়, প্রতিদিনের মত কোচিং কার্যক্রম শেষ করে বাড়ি ফিরছি। চলমান এইচ এস সি পরীক্ষার কারণে কোচিং সেন্টার বন্ধ কিনা? এমন প্রশ্নে ওই শিক্ষার্থী জানায় সেটি আমার জানা নেই। কোচিং সেন্টার খোলা আছে তাই কোচিং করতে আসছি। বন্ধ থাকলে স্যারের জানিয়ে দিতেন।
এছাড়া যশোর সরকারি এম এম কলেজের দক্ষিণ গেটের সামনে এবং কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পিছনে, যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিভিন্ন ভবনে অসংখ্যা কোচিং বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই সকল স্থানের সকল কোচিং সেন্টার গতকাল রোববার বিকেলে খোলা থাকতে দেখা যায়।
জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন বলেন, কোচিং সেন্টার খোলা আছে কিনা সে বিষয়ে আমি অবগত নই। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার আগে কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা প্রতিবারই আসে। পরীক্ষা চলাকালীন কোন কোচিং সেন্টার খোলা থাকবে না। এ নির্দেশনা কেউ যদি অমান্য করে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয় জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খালেদা খাতুন রেখার প্রতিক্রিয়া জানতে এই প্রতিবেদক তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেন। কিন্তু তারা দুইজনের কেউ কল রিসিভ করেননি।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং সেন্টার চালু রাখার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অস্বীকার করেন। দীন স্যার পরিচালিত মানবিক বিভাগের সেরা কোচিং এক্সপার্ট কোচিং সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী দিন ইসলাম বলেন, কোচিং কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কেবলমাত্র অফিস খোলা ছিল। সরকারি নির্দেশান মেনেই কোচিং চালাই।