চ্যালেঞ্জের মুখে নেপালের পাম অয়েল রফতানি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পরিশোধিত পাম অয়েল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। এ লক্ষ্যে দেশটি ৩৯টি পাম অয়েল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করেছে। অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষা ও প্রধানত মালয়েশিয়ার রফতানি বাজারকে লক্ষ্য করে ভারত এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তবে এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে নেপালের পাম অয়েল রফতানি খাতে। কারণ দেশটি থেকে ভোজ্যতেলটি রফতানির শীর্ষ বাজার ভারত। খবর দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট।
শূন্য শুল্ক নিয়ে ভারতের বাজারে প্রতি বছর কোটি ডলার সমমূল্যের পাম অয়েল রফতানি করে নেপাল। পাম অয়েল ভোক্তা দেশের বৈশ্বিক তালিকায় ভারতের অবস্থান প্রথম এবং দেশটির বাজারে ভোজ্যতেলটির শীর্ষ সরবরাহকারী মালয়েশিয়া। তবে সম্প্রতি পণ্যটির আমদানি পুরোপুুুরি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। ভারতের মিডিয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যুতে গত বছরই মালয়েশিয়া ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের টানপোড়ন শুরু হয়। সর্বশেষ ভারতের নতুন নাগরিক সংশোধন আইন নিয়ে দেশটি দুটির সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটে। এর জের ধরে মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানি বন্ধের হুঁশিয়ার দিয়েছিল ভারত। ভারতের ব্যবসায়ীরাও মালয়েশিয়া থেকে পণ্যটির আমদানি ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে শুরু করে। অবশেষে ১১ মে পাম অয়েল আমদানিতে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি।
স্থানীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, অবৈধভাবে সস্তা পাম অয়েলে আমদানি রোধ করে দেশীয় শিল্প রক্ষার উদ্দেশ্যে ভারত এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
এ পরিস্থিতি নেপালের পাম অয়েল শিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি রফতানি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের বাজারে প্রতি বছর গড়ে ২ হাজার ২০০ কোটি রুপি সমমূল্যের পাম অয়েল রফতানি করে নেপাল। বিদায়ী বছরে ভারতে সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩৩ কোটি রুপি সমমূল্যের পক্রিয়াজাত পাম অয়েল রফতানি করেছিল দেশটি। কয়েক বছর ধরে পাম অয়েল নেপালের প্রধান রফতানি পণ্য হয়ে উঠেছে, যদিও দেশটি এক ফোঁটা পাম অয়েলও উৎপাদন হয় না।
নেপালের ট্রেড অ্যান্ড এক্সপোর্ট প্রমোশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাইয়ের মাঝমামাঝি সময়ে নেপালে নতুন অর্থবছর শুরু হয়) প্রথম পাঁচ মাসে দেশটি থেকে ভারতে সব মিলিয়ে ৯৯৪ কোটি রুপির অপরিশোধিত পাম অয়েল ও ১ হাজার ১৫০ কোটি রুপি সমমূল্যের পরিশোধিত পাম অয়েল রফতানি হয়েছে। সব মিলিয়ে এ সময়ে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দেশটি থেকে ভারতে আট গুণের বেশি পাম অয়েল রফতানি হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব নেপালিজ রাইস, অয়েল অ্যান্ড পালস ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সুবোধ কুমার গুপ্তা বলেন, ভারত সরকারের অসামঞ্জস্য বাণিজ্য নীতি নেপালকে ক্ষতি করছে। দেশটির বারবার আমদানি বন্ধ করা নীতি নেপালি ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে, যা পাম অয়েল খাতে কোটি কোটি ডলার লোকসানের আশঙ্কা তৈরি করেছে।