যশোরে চিকিৎসকের গৃহপরিচারিকা করোনায় আক্রান্ত : অন্তঃসত্ত্বা সেই নারী ঢাকা মেডিকেলে

0

বিএম আসাদ ॥ করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা সেই নারী যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যশোরের কেশবপুর থেকে তাকে উদ্ধার করার পর ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, গতকাল কোভিড-১৯ সংক্রমণে আরও একজন যুবতী আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে যশোরের করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯২ জন। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. আরিফ আহমেদ জানিয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলার বাড়ি যশোর শহরের বকচরে। সন্তান প্রসবের জন্য তিনি যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। সে সময় তিনি করোনা সংক্রান্ত উপসর্গ গোপন করেছিলেন। পরে করোনা সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা পরীক্ষা শেষে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে গত ১৬ মে করোনা পজেটিভ বা কোভিড-১৯ প্রমাণিত বলে রিপোর্টটি আসে। আরএমও জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ রোগী হিসেবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল। এর মধ্যে সুযোগ বুঝে ওই নারী ওইদিন পালিয়ে যান এবং যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামে আশ্রয় নেন। সেখানে আশ্রয় নেওয়ার পর কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মঙ্গলকোট গ্রাম থেকে উদ্ধার করেন এবং পুনরায় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ফিরিয়ে আনেন। এরপর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সযোগে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাকে ওইদিন বিকেলে ঢাকায় পাঠানো হয় বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরএমও ডা. আরিফ হোসেন আরও বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা যে নারীকে শহরের জেনেসিস হাসপাতালে সিজার করা হয়েছিল তিনি বর্তমানে ভালো আছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বলা যাবে তিনি করোনামুক্ত কি-না। তার সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকন্যা নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গতকাল আরও এক যুবতী কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। তার বয়স ১৭ বছর। তার অবস্থান যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড এলাকায়। তিনি একজন চিকিৎসকের গৃহপরিচারিকা। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এর আগে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্ত যুবতীর তার গৃহপরিচারিকা। বর্তমানে সকলেই হাসপাতাল কমপ্লেক্সের হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। সোমবার দু’জন চিকিৎসকসহ ৯টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। তাতে ৮ জন করোনামুক্ত নেগেটিভ ও একজন করোনায় আক্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়। এদিন পরীক্ষার জন্য ৬১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর ভেতর ৫৩টি ছিল নতুন নমুনা এবং ৮টি ছিল করোনায় আক্রান্ত রোগীর ফলোআপ নমুনা। সংগ্রহকৃত এসব নমুনার মধ্যে যশোর সিভিল সার্জন অফিস থেকে ১০টি নতুন ও ৮টি ফলোআপ মিলে মোট ১৮টি নমুনা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ৪৩টি নমুনা পাঠানো হয়েছে খুলনা মেডিকেলে। খুলনা মেডিকেলর চেয়ে সর্বাধুনিক পিসিআর মেশিন হচ্ছে যবিপ্রবিতে। আবার হাতের কাছেই পরীক্ষাগার জেনোম সেন্টার। এখানে নমুনা পাঠাতে পরিবহন খরচও কম। অনুজীব বিজ্ঞানীগণ জেনোম সেন্টারে নমুনা পরীক্ষা করেন। অন্যদিকে, যশোর থেকে খুলনায় নমুনা পাঠানো ব্যয়বহুল। আবার সেখানে কোন অনুজীব বিজ্ঞানী নমুনা পরীক্ষা করেন না। অথচ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে এড়িয়ে বেশিরভাগ নমুনা খুলনায় পাঠানোর কারণে সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।