প্রসঙ্গ : ঈদ বাজারে করোনার থাবা

0

“ঈদ বাজারেও করোনার থাবা হতাশা হাহাকার ব্যবসায়ীদের ” শীরোনামে গতকাল রোববার দৈনিক লোকসমাজে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে যশোরের ব্যবসা বানিজ্যের কী হাল হয়েছে বা বিরাজ করছে তার মোটামুটি একটি চিত্র সংবাটিতে ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদক আকরামুজ্জামান তার প্রতিবেদনে বাজার ও ব্যবসায়ীদের করোনাকালিন অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের কর্মহীনতায় কী হাল তারও কিছু বর্ণনা দিয়েছেন। বরাবর রমজানের আগ থেকে কর্মব্যস্ত হওয়া দর্জি শ্রমিকরা এবার রোজার দশদিনেও দরজা খুলতে পারেনি। এরা শুধু এই দশদিন কর্মহীন নয়। এরা মূলত কর্মহীন হয়েছে আরো দুমাস আগে থেকে। কোভিড-১৯ বাংলাদেশ সংক্রমিত হবার লগ্ন থেকে। ওই সময় আতঙ্ক ও সতর্কতার কারণে একের পর এক প্রতিষ্ঠান বন্ধ শুরু হয়। সারাদেশের সাথে যশোরও বন্ধ হয়ে যায়। ঠিক ওই সময় বাঙালিদের উৎসব বাংলা নববর্ষের আগমন ঘটে। সরকার উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তার সরাসরি প্রভাপ পড়ে ব্যবসার ওপর। নানারকম পোশাক কেনার মওসুমে অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়। সেই থেকে কাপড় ব্যবসায়ীদের সাথে শুরু হয় দর্জি শ্রমীকদের দুর্ভোগ। দিনে দিনে আজ তা কোথায় পৌঁছেছে তার কিঞ্চিৎ ওই প্রতিবেদনে আছে। আমরা জানি, শুধু দর্জি শ্রমিক নয় সকল স্তরের ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী ও কর্মচারীরা আজ একই অবস্হার শিকার। এরা ভ্যান রিকশা ঠেলা চালক বা রাজমিস্ত্রির যোগানদার শ্রেণির শ্রমীকদের চেয়ে খানিটা ভিন্ন। উপার্জন কম হলেও দিনশেষে বাড়ি ফিরে সাদা জামা পরে মোড়লী করতে অভ্যস্ত। ফলে এদেরকে কেউ ত্রাণের তালিকাভূক্ত করে না,এরা নিজরাও গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে পাবে না। আবার এমন অবস্থাপন্ন নয় যে, এরা চাইলেই কেউ এদের ধার দিতে এগিয়ে আসবে। ফলে এদের অবস্থা ঢাল নেই তরোয়াল নিধিরাম সরদারের মতো হয়েছে। সরদারি বাঁচাতে প্রাণ হারাবার উপক্রম হয়েছে। তারপরও ওরা সরদারিই বাঁচাতে চায়। সে কারণে মালিক মহাজন ব্যবসায়ীদের অনুসরণ করে পবিত্র মাহে রমজানের দিকে তাকিয়ে ছিল। সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের অবর্ণনীয় কষ্ট ঘুচিয়ে উপহার দেবে ঈদ আনন্দ। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের রমজানের দশদিনেও খোলেনি বাজারের রাস্তা। করোনার যা ওলোটপালট চরিত্র হয়েছে তাতে আগামি দশদিনেও খুলবে বলে ভরসা মিলছে না। ফলে ঈদের রঙ্গিন স্বপ্ন দূরে থাক স্বাভাবিক জীবন ধারণের আশাও তারা করতে পারছে না। এ অবস্থায় সরকারের উচিৎ হবে এখনিই এই শ্রমজীবী ও কর্মচারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা। ব্যবসায়ীদের যে বিশাল বাণিজ্যিক তি হয়েছে এবং হতে যাচ্ছে তাথেকে রার কথাও ভাবতে হবে। তবে সবার আগে ঈদে এদের জন্য কী করা যায় সে পরিকল্পনাটাই করতে হবে। আমরা আশা করবো সরকার করোনার কারণে ঈদ আনন্দ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলেও শ্রমজীবী কর্মজীবীদের বেঁচে থাকার সুযোগ সৃষ্টিতে কোনো অবহেলা করবে না।