‘দুই জনেই আমাদের দেখা শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ক্রিকেট বিশ্ব যুগে যুগে বেশ কয়েকজন কিংবদন্তি এবং প্রতিভাবান ক্রিকেটারের দেখা পেয়েছে। নিজেদের অসাধারণ ক্ষমতায়, মায়াবী যাদুতে তাঁরা মুগ্ধ করেছেন অগণিত ক্রিকেট ভক্তদের। শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে তাঁরা প্রত্যেকেই প্রায় সমান। সর্বকালের সেরা কে? সেই প্রশ্নে এসেছে বিভক্তি। এসেছে অনেক যুক্তি, হয়েছে অনেক বিতর্ক। ব্রায়ান লারা নাকি শচীন টেন্ডুলকার—কে সেরা? প্রশ্নটা নিয়ে বিতর্ক হয় প্রায়শই। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রশ্নটা তোলপাড় তুলে চলেছে ক্রিকেট প্রেমীদের মনে। এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। সেই আলোচনায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ ছিল সামান্যই। লারা ও টেন্ডুলকারের বিপক্ষে খেলা বাংলাদেশের এমন পাঁচজন বোলারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কে সেরা? কার বিপক্ষে বোলিং করা ছিল বেশি চ্যালেঞ্জিং। দশে কে কাকে কত দেবেন? পাঁচ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উঠে আসছে সবকিছু। পড়ুন অলরাউন্ডার মুশফিকুর রহমান বাবু’র অভিজ্ঞতা।
প্রথম অভিজ্ঞতা
লারার বিপক্ষে প্রথম অভিজ্ঞতা ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট ম্যাচে। আর শচীনের বিপক্ষে প্রথম খেলা ২০০০ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে, এশিয়া কাপের ম্যাচে। আমার ডেব্যু ম্যাচ ছিল সেটা। শচীন ছিল আমার ডেব্যু উইকেট।
কে এগিয়ে?
আসলে দুইজন দুই দিকে গ্রেট। উনাদের রেকর্ড ও তাই বলে। কাউকে আলাদা করে এগিয়ে রাখা যাবে না। তাদের পরিসংখ্যান তাদের হয়েই কথা বলে।
পার্থক্য কোথায়?
একেক জনের খেলার ধরন এক রকম। শচীন ক্রিকেটীয় ব্যাকরণ মেনে খেলে। আর লারার এসব বালাই নেই।
কে বেশি চ্যালেঞ্জিং?
টেন্ডুলকার আসলে যখন খেলে তাঁর নিয়মানুযায়ী খেলে। আর লারা যেটা খেলে সেটা তাঁর ইচ্ছানুযায়ী খেলে। কারণ টেন্ডুলকারকে ভালো বল সমীহ করতে দেখেছি। কিন্তু লারার ক্ষেত্রে যেটা ইচ্ছা হইছে সেটাই মারছে। ভালো বলেও চার বা ছয় মেরে দেয়, খারাপ বল তো মারেই। আসলে লারা যখন তাঁর রুপে থাকে তখন সে বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। আমার মনে হইছে লারাকে বল করা সত্যি অনেক কঠিন। তবে টেন্ডুলকারকেও বল করা কঠিন।
স্মৃতিতে লারা ও টেন্ডুলকার
লারার বিপক্ষে এক টেস্ট ম্যাচে। লারা সম্ভবত ৬-৭ রানে ব্যাটিংয়ে ছিল। এমন সময় আমার বলে ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে ক্যাচ ওঠে। কিন্তু হান্নান সরকার ক্যাচটা মিস করে। তারপরে সে সম্ভবত আর ১৫-২০ বল খেলে ফিফটি তুলে নেয়। আমার প্রথম ম্যাচে শচীন ও সৌরভ ওপেন করেছিল। দুইজনই শুরু থেকে মেরে খেলছিল। এরমধ্যে মঞ্জুর (বাঁহাতি পেসার মঞ্জুরুল ইসলাম) কোনো এক ওভারের ১ম বল শচীন মিস করে। তখন মঞ্জু স্লেজিং করে বসে শচীনকে, একটু রুডলি। সে ওভারের বাকি পাঁচ বলেই তাকে চার্জ করে শচীন। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জবাব দেয়। এমনকি মঞ্জু বাইরে বল দিলেও এগিয়ে গিয়ে চার্জ করেছিল শচীন। ম্যাচের যখন ৬/৭ ওভার, তখন আমি বোলিংয়ে আসি। স্বাভাবিক ভাবে ডেব্যু ম্যাচের ওই অবস্থায় আমি বিধ্বস্ত ছিলাম। কি করবো না করবো একটা আতঙ্ক। প্রথম বলে গাঙ্গুলিকে ইয়র্কার দিয়ে বসি। তিনি কোনো রকমে ঠেকান। আমিও আত্মবিশ্বাস পাই। পরে সে ম্যাচে আমি টেন্ডুলকারের উইকেট নিয়েছি। তবে খেলার সময় টেন্ডুলকারের উইকেট অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকরা যখন আমাকে বলছে যে, তোমার ডেব্যু উইকেট টেন্ডুলকারের বা এটা নিয়ে খুব বেশি প্রশ্ন করছে তখন আমি বুঝেছি এটা অনেক বড় অর্জন।
পরীক্ষার নম্বর যখন ১০
আমি দশে দশ দুইজনকেই দিবো। কারণ দুইজন দুই রকমের ভালো প্লেয়ার। আমাদের দেখা শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার তারা দু’জনেই।