খুলনায় ত্রাণের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

0

খুলনা ব্যুরো ॥ খুলনার রূপসায় ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমজীবী এলাকাবাসী। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এসব মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিােভ করেন। রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসা বাজারের পার্শ্ববর্তী আদর্শ গলির শত শত নারী-পুরুষ এ বিােভে অংশ নেন। বিােভকারীদের বড় অংশই ছিলো স্থানীয় মাছ প্রক্রিয়াজাত কারখানায় কর্মরত। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে বাজারের বাঁশের বেরিকেড ভেঙে মিছিল সহকারে পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে তারা খুলনা-মোংলা মহাসড়কে সেনাবাহিনীর টহল গাড়ি পেয়ে তাদের কাছে দাবি তুলে ধরেন।
তারা দাবি করেন, এলাকার প্রতিটি মানুষ ঘরে থাকলেও তাদের কাছে এখনো পর্যন্ত কোন ত্রাণ বা খাদ্য পৌঁছেনি। মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে বললে তারা কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এলাকার নেতারাও খোঁজ নিচ্ছেন না। এদিকে পরিবারের সদস্যরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
তারা জানান, মাছ কোম্পানিগুলোর মালিক বেতন দিচ্ছেন না। আবার তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। কাজ কর্ম নেই। অথচ টিভিতে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী গরিব মানুষকে সহায়তা পাঠিয়েছেন। সরকার ১০টাকা কেজির চাল দিচ্ছিল তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন অসহায় মানুষ। এছাড়া যারা দিন এনে দিন খেয়ে এতদিন জীবনযাপন করছিলেন তারাও পড়েছেন মহাবিপাকে। বিােভের সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমন আশ্বাস দিয়ে বিুব্ধকারীদের শান্ত করেন এবং তাদের ফিরিয়ে দেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বুলবুল সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে বলেন, ‘কর্মহীনদের জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ পাচ্ছি তা দিয়ে কিছুই হচ্ছে না। এলাকায় ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমার কাছে বিতরণের জন্য অল্প কিছু চাল আছে, দেখি তা দিয়ে কতদূর কি করতে পারি’।উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার জানান, রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে ৪-৫ হাজার অভাবী মাছ কোম্পানির শ্রমিক রয়েছেন। একটা কোম্পানি ছাড়া বাকি কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের এখনও বেতন দেয়নি। আমি মালিক পরে সাথে বেশ আগে থেকে কথা বলেছি। ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সাথেও কথা বলেছি যাতে শ্রমিকদের বেতন সময় মতো দেওয়া হয়। তিনি জানান, রূপসা একটি বিশাল জনবসতি এলাকা। এখানে সরকারি সহযোগিতার চাল এসেছে ৬১ টন। যা মাত্র ৭ হাজার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র পূর্ব রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নেই নিম্নআয়ের শ্রমিক রয়েছেন ৫/৬ হাজার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো জানান, শ্রমিকদের বিােভের বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসক ও ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতাকে জানিয়েছেন।