ব্যবসায়ীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সীমিত পরিসরে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত যশোরে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে আজ রোববার থেকে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যশোরের প্রশাসন ও ব্যবসায়ীরা একমত হয়েছেন। তবে এ সিদ্ধান্তকে অনেকেই আত্মঘাতি বলে দাবি করেছেন। শনিবার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজে যশোর জেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ মে থেকে দোকানপাট খোলা হবে কিনা সে বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ। এসময় সেখানে যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন, করোনা পরিস্থিতিতে যশোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি লে. কর্নেল নিয়ামুল হক, প্রেসকাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের সূত্রে জানা গেছে, সভায় যশোরের জেলা প্রশাসক ঈদের আগে দোকানপাট খোলা রাখার বিষয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মতামত জানতে চান। এ সময় ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ দোকান খোলার পক্ষে মত দিলেও উপস্থিত ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আপাতত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না খোলার পক্ষে মত দেন। মতামত শেষে দু’পক্ষের মতামতের প্রেক্ষিতে আর্থিক দিক বিবেচনায় নিয়ে সরকারি বিধি মেনে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ। সভায় অংশ নেয়া সূত্র জনায়, বৈঠকে যশোর জেলা জুয়েলারি মালিক সমিতির সভাপতির রফিবুল ইসলাম চৌধূরী, যশোর বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বাবুসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আপাতত দোকান না খোলার পক্ষে মত দেন। করোনা সংক্রমণের বিষয়টি সামনে রেখে ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রামের মতো সিটিতে যখন দোকানপাট বন্ধ রাখা হচ্ছে সে কারণে যশোরেও বন্ধ রাখা উচিৎ। এসময় শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতিরি সভাপতি তন্ময় সাহা, ছিট কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু হোসেন,, কসমেটিকস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার শর্তে দোকান খোলার পক্ষে জোরালো মতামত তুলে ধরেন।
এসময় তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই মাস ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ঘরে বসে আছেন। এর আগে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখেও দোকানপাট খুলতে পারেনি। যে কারণে ব্যবসার সাথে যুক্ত দোকান মালিক ও তাদের কর্মচারিরা চরম মানবেতর জীনবনযাপন করছেন। সেকারণে মানবিক দৃষ্টিতে দেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোকান খোলা রাখার নির্দেশনার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। সভায় উভয় পক্ষের মতামত শেষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার শর্তে আজ রোববার থেকে দোকান খোলার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন। এসময় তারা ব্যবসায়ীদের তাদের দোকানের সামনে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা ও স্যানিটাইজার রাখা, বেচাকেনার সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের পারস্পারিক দূরত্ব বজায় রাখা, দোকানপাট ও শপিং মল ৪ টার মধ্যে বন্ধ রাখা, বাজারে শিশু ও বয়স্কদের না আনার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে মেনে চলার আহবান জানান। এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শপিং মলসহ সব কিছু খোলাকে ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্সপার্টি(মার্কসবাদী)। শনিবার প্রেসকাব যশোরের সামনে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ শপিং মলসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতী’ হিসেবে বর্ণনা করে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানান। এ ছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা মন্তব্য অব্যাহত রেখেছেন অনেকে।