ক্রিকেটের উন্নয়নে ম্যাশকে কাজে লাগাতে হবে

0

মাশরাফি বিন মুর্তজা এখন পর্যন্ত আমাদের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ও তারকা, সে বিষয়ে বোধ করি সন্দেহ নেই। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি যেমন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, তেমনই অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জিম্বাবুয়ের বিপইে ২০০১ সালের ৮ নভেম্বর টেস্ট ম্যাচের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল তরুণ মাশরাফির। শুধু টেস্টই নয, ক্যারিয়ারের অভিষেক ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিও তিনি খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপইে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বরাবরই বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করা এ পেসার ১৯ বছর ধরে বাংলাদেশের পেস বিভাগকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বারবার ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন, বারবার শঙ্কায় পড়ে তার ক্যারিযার, তবুও মাশরাফি দমে যাননি, ফিরে এসেছেন আরও ভয়ঙ্করভাবে। ১৯ বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে এখন পর্যন্ত দেশের হয়ে মাশরাফি ৩৬টি টেস্ট, ২২০টি ওয়ানডে ও ৫৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। টেস্টে ৭৮টি, টিটোয়েন্টিতে ৪২টি উইকেট শিকার করেছেন এ বোলার। ব্যাট হাতেও পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি। টেস্টে ৭৯৭, ওয়ানডেতে ১,৭৮৭ ও টি-টোয়েন্টিতে ৩৭৭ রান করার কৃতিত্ব আছে তার।
জিম্বাবুয়ের বিপইে শুক্রবার অধিনায়ক হিসেবে শেষ খেলা খেলেছেন মাশরাফি। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির সুনাম সর্বজনস্বীকৃত। সেটির প্রমাণ পাওয়া গেছে শেষ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনেও। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বর্তমান অবস্থানে আনার পেছনে কার অবদান বেশি এ প্রশ্নের উত্তরে জেমি সিডন্স ও চন্ডিকা হাথুরুসিংয়ের নাম বলেছেন মাশরাফি। কারণও জানিয়েছেন। সাকিব, তামিম ও মুশফিকদের তৈরি করার কৃতিত্ব সিডন্সের। হাথুরুসিংয়ের অবদান হলো আমাদের ক্রিকেটকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যেখান থেকে শুধু সামনে এগিয়ে যাওযার কথাই ভাবা যায়। অধিনায়কত্ব কিংবা খেলোয়াড় জীবন নিয়ে দুই কোচের সঙ্গে একটি দূরত্ব ছিল তার। সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে মাশরাফি তাদের কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দিতে কার্পণ্য করেননি।
মাশরাফির ভাষায়, ‘অধিনায়কত্ব শুরুর সময়ও মনে করিনি আমি অনেক বড় কিছু। এখন আমার আরেকটা পরিচয় আছে, এমপি। এখনও সেরকম ভাবি না। লাল পাসপোর্ট নিইনি, বাড়ি নিইনি, গাড়ি। মাশরাফির জন্য আমাদের শুভকামনা। সংসদ সদস্য হিসেবেও তিনি সুনাম ধরে রাখবেন বলে আমরা আশাবাদী। শেষ খেলার পর সহ-খেলোয়াড়দের হৃদয়নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন মাশরাফি। ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার জন্য মাশরাফির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তার নেতৃত্বগুণ ও খেলোয়াড় স্বীকৃতি দেওয়াই হবে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের সর্বোত্তম উপায়। আমরা আশা করবো ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে মাশরাফির মেধা ও নেতৃত্বগুণ কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।