মনিরামপুরে ছিন্নমূল পরিবারের বাড়ি দখল: অভিযোগ করায় হুমকি, এলাকায় ক্ষোভ

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর (যশোর) ॥ যশোরের মনিরামপুরে টেকা নদীর তীরে একটি পরিবারকে তাড়িয়ে বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ করায় এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যান্য ছিন্নমূল মানুষের। অভিযোগ রয়েছে, দখলকারী এলাকার প্রভাবশালী পবিত্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত সেখানকার অন্যান্য ছিন্নমূলদের হুমকি দিচ্ছে অভিযোগ প্রত্যাহরের জন্য। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন রয়েছে সম্পূর্ণ নীরব। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের ভবদহের টেকা নদীর তীরে শ্মশানের ১১ শতক খাস জমি আছে। সেখানে পাকিস্তান আমল থেকে পাঁচাকড়ি গ্রামের রমেশ মল্লিক, সুফেন মল্লিক, উর্মিলা মল্লিক ও দিলু মল্লিকসহ ছিন্নমূল বেশ কয়েকটি পরিবার কাঁচা ও আধাপাকা ঘর তৈরি করে পরিবার বসবাস করে আসছে। এরা সবাই দিনমজুর। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে পাঁচাকড়ি গ্রামের হরেন্দ্র নাথ বিশ্বাষের ছেলে কয়েকটি মৎস্যঘেরের মালিক প্রভাবশালী পবিত্র বিশ্বাষ তার দলবল নিয়ে সুফেন মল্লিক ও তার পরিবারবর্গকে মারধরের পর সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে ঘরবাড়ি দখল করে। বর্তমান সুফেন মল্লিক নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় নিখোঁজ সুফেনের ভাই রমেশ মল্লিক অভিযোগ করলে গত বুধবার রাতে নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়িতে সালিশ সভার আয়োজন করা হয়। ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই সৈয়দ বখতিয়ারের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজমুস সাদাত, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান, জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। শালিস সভায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়। এদিকে নিখোঁজ সুফেন মল্লিকের ভাই রমেশ মল্লিকসহ অন্যান্য ছিন্নমূলদের অভিযোগ, দখলকারী পবিত্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত তাদেরকে হুমকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন রয়েছে সম্পূর্ণ নীরব। তাদেরকে হুমকি দেওয়ার সত্যতার নিশ্চিত করে তদন্ত কমিটির প্রধান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহল আমিন জানান, ইতোমধ্যে প্রাথমিক তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে দখলকারী পবিত্র বিশ্বাস সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ছিন্নমূল ওই পরিবারকে বিতাড়িত করেছেন। যা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া হবে না। অথচ নেহালপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বখতিয়ার জানান, হুমকির বিষয়টি তিনি অবগত নন। এদিকে ছিন্নমুল পরিবারকে উচ্ছেদের পর তাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসী দিনদিন সোচ্চার হচ্ছেন। জানা গেছে এ ব্যাপারে এলাকাবাসী আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভের প্রস্তুতি চলছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।