যশোর আইসিটি পার্কের ফ্রিডমফাইটার আইটি: চাকরির নামে বেকার যুবক যুবতীদের সাথে প্রতারণা

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার ও টেকনোলজি পার্কে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। নিজেরাই তারা নিজেদের দেয়া চাকরি শর্ত ভঙ্গ করছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের কিছুদিন কাজ করিয়ে বাদ দেয়া হচ্ছে। এ সময় দেয়া হচ্ছে না কোন পারিশ্রমিক। যে কারণে বেকার যুবক-যুবতীরা বুক ভরা আশা নিয়ে চাকরি করতে এসে আশাহত হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি নাম ফ্রিডমফাইটার আইটি। যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে মাত্র তিন মাস আগে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও সোলাইমান হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিন মাস আগে ফ্রিডম ফাইটার আইটি নামের প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে যুবক-যুবতী মিলে ৩৪ জন কর্মরত আছেন। নিয়োগের সময় বলা হয়, ৩ মাস প্রশিক্ষণকালে প্রত্যেককে ৩ হাজার টাকা করে সম্মানি দেয়া হবে। এরপর দেয়া হবে ৯ হাজার টাকা করে। প্রথমে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে নিয়োগের জন্যে পরিত্রকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ৯ জনকে চূড়ান্ত পর্বে এবং ৬ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়। প্রতিষ্ঠানের ডিজিএম (এইচআর এন্ড ডিজিটাল মার্কেটিং) মিকাইল হোসেন স্বাক্ষরিত এক পদে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সেখানে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রাপ্তদের ১৫ নভেম্বর থেকে কাজে যোগদানের জন্যে বলা হয়। এই তারিখের মধ্যে কেউ যোগদান না করলে তাকে বাদ দিয়ে অপেক্ষমান তালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া হবে। একইভাবে জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখে প্রতিষ্ঠানের প্রধান এইচআর মাহমুদুল হাসানের স্বাক্ষরে অপর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় ৮ জনকে চূড়ান্ত এবং ২ জনকে অপেক্ষমান চূড়ান্ত নিয়োগ প্রাপ্তদের ১১ জানুয়ারি কাজে যোগদানের কথা বলা হয়। দুইবার নিয়োগ প্রাপ্তদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান থাকা অবস্থায় কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে ‘উচ্চ পদস্থ’ ব্যক্তিদের নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করান। প্রতিষ্ঠানের এমন লোকবল দেখে তারা প্রশংসা করেন। পরিদর্শন শেষে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের বলা হয়, কাল থেকে আসা লাগবে না। এই কথা বলে তাদের বাদ দেয়া হয়। এমন কি প্রশিক্ষণকালে যে টাকা দেয়ার কথা ছিল তাও দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্যে অভিযুক্ত ফ্রিডম ফাইটার আইটিতে গেলে সিইও মো. সোলাইমান হোসেন অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, দুইবার নিয়োগের মাধ্যমে যারা এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে তাদের সাথে কথা বললে আপনি বিষয়টি বুঝতে পারবেন। এই বলে তিনি কর্মরতদের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে কর্মরত ৮ থেকে ১০ জনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। কে কে প্রথমবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন। উত্তরে কর্মরত শরিফুজ্জামান, শিবাজি বিশ্বাস, আনিসুর রহমান বলেন, আমরা প্রথম নিয়োগ পেয়েছিলাম। কিন্তু তিন জনের কারও নাম নেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ফলাফলে। এরপর কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী দ্বিতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সানজিদা ফেরদৌস ও সজল রায়ের সাথে কথা হয়। কিন্তু ওই সময় যে ফলাফল তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে তাদের নাম নেই। এরপর তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ফলাফল আপনাদের প্রতিষ্ঠানের কি-না ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের। কিন্তু আপনি যা বলছেন তা সঠিক না। বাইরে থেকে কাউকে এনে পরিদর্শনের বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে তিনি অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে থাকেন।