সংসদে ধর্ষককে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার দাবি দুর্ভাগ্যজনক: আসক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ধর্ষককে সরাসরি ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার জন্য জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সিনিয়র নেতাদের তোলা দাবির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানায় সংগঠনটি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ক্রসফায়ার’-এর মতো আইনবহির্ভূত, নিষ্ঠুর ও অমানবিক পন্থাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করা একাধিক ব্যক্তির এমন দাবি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আইন ও সালিশ কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে ‘ক্রসফায়ার’কে আইন ও সংবিধানবহির্ভূত বলে উল্লেখ করে তা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র মনে করে, সংসদ সদস্যদের এমন বক্তব্য আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। সংসদ সদস্যদের বক্তব্যে তারা একইসঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছেন, সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘ক্রসফায়ারে’র নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী সবসময় দাবি করে এসেছে যে কেবলমাত্র আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি চালাতে বাধ্য হচ্ছে। সংসদে আইন প্রণেতাদের এ সংক্রান্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র আরও জানায়, ‘যে কোনও ব্যক্তির বিচার লাভের অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্টভাবে স্বীকৃত। সংবিধানে আরও বলা আছে, কাউকেই বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলাদিতেও এ অধিকার স্বীকৃত, যেগুলো বাংলাদেশ অনুমোদন করেছে। এছাড়া জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে যেসব সংসদ সদস্য এমন নিষ্ঠুর, অমানবিক ও আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, তাদের নিজ রাজনৈতিক দলও নির্বাচনি ইশতেহারেও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের অঙ্গীকার করেছিল। তা সত্ত্বেও সংসদ সদস্যদের এমন দাবি নিঃসন্দেহে প্রতিশ্রুত অঙ্গীকার লঙ্ঘন। উল্লেখ্য, ১৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের অনির্ধারিত আলোচনায় সরকারি ও বিরোধীদলীয় নেতারা ধর্ষককে সরাসরি ‘ক্রসফায়ারে’ দিয়ে হত্যার দাবি জানান।